প্রত্যেকটা মানুষেরই কিছু না কিছু শখ থাকে। কেউ বই পড়েন, কেউ গান শুনতে ভালোবাসেন। কেউ বা সিনেমা দেখতে। কিন্তু এখন যে ব্যক্তির কথা শুনব, তাঁর শখ বেশ অদ্ভুত। তিনি ভালোবাসেন পুরনো থালা-বাসন সংগ্রহ করতে। কিন্তু কেন তাঁর এমন আজব শখ!
পুরনো থালাবাসন। ব্রোঞ্জ কিংবা পিতলের তৈরি। যদি হয় বছর পঞ্চাশের পুরনো, তবে খবর পেলেই হাজির হয়ে যান এক ব্যক্তি। কেননা তাঁর শখই যে পুরনো থালাবাসন সংগ্রহ করা।
পুদুচেরির এই ব্যক্তির নাম আয়ানার, ছোটবেলা থেকেই তিনি এই ধরনের জিনিসপত্র সংগ্রহ করেন। এখন এই বয়সকালে তাঁর কাছে বহু সংখ্যক অ্যান্টিক জিনিসপত্র আছে। এবং সেই স্টক বেশ ঈর্ষণীয়। বছরে একবার তিনি তাঁর এই জোগাড় করা জিনিসপত্রের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেন। ছাত্ররা ঘুরে দেখতে পারেন তাঁর সংগ্রহ করা বাসন।
আরও শুনুন: ৪০০ বছর ধরে সমুদ্রে ঘুরে চলেছে ভূতুড়ে জাহাজ! কী এই রহস্য?
কিন্তু সব ছেড়ে কেন পুরনো বাসনকোসন জোগাড় করেন তিনি? মূলত তামিল পূর্বসূরীরা কী ধরনের বাসনপত্র ব্যবহার করতেন, তার তত্ত্বতালাশ করাতেই তাঁর আগ্রহ। সেকালে নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী কেমন বাসন ব্যবহার করতেন মানুষ, কীভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাসনের বিবর্তন হয়েছে, তার প্রায় ইতিহাসই আছে তাঁর কাছে। সাধারণত বাসনের মতো সাধারণ জিনিস কেউ জোগাড় করে রাখেন না। তাই একসময় ভাঙাচোরা হয়ে তা নষ্ট হয়ে যায়। ফলত মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসের মাধ্যমেও যে তার উদ্ভাবনী শক্তির প্রকাশ, তা তেমন কেউ খেয়ালই করেন না। এই প্রায় অনালোচিত ইতিহাসই এই সংগ্রহের মাধ্যমে ধরে রেখেছেন আয়ানার। শুধু কীরকম ধাতু দিয়ে বাসন তৈরি হত তাই-ই নয়, তাদের আকার-আকৃতি ইত্যাদিও গবেষকদের কাছে উৎসাহব্যঞ্জক। অতীতে এরকম বহু বাসন ব্যবহার হত, যা আজ আমরা শুধু ছবিতেই দেখতে পাই। কেননা তার কোনও নির্দশন সংরক্ষিত নেই। ঠিক সেই জায়গাতেই ব্যতিক্রম এই ব্যক্তি। নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে তিনি বাঁচিয়েছেন এই বাসনপত্রকে। ফলত তাঁর সংগ্রহ যদি কেউ ঘুরে দেখেন, তিনি এ সম্পর্কে নির্দিষ্ট ধারণা পেতে পারেন।
আরও শুনুন: বিমান থেকে মানুষের মল এসে পড়ল মাথায়, নিজের বাগানেই নাস্তানাবুদ হলেন এক ব্যক্তি
শখ তো অনেকেরই থাকে নানারকম। তবে এই ব্যক্তির শখের যে ইতিহাসগত মূল্য আছে, তা তো বোঝাই গেল। আর তাই তাঁকে কুর্নিশ জানায় দেশবাসী তথা গবেষক ছাত্ররা।