পড়ুয়াদের নিয়মশৃঙ্খলার শিক্ষা দেওয়ার ভার তাঁদের কাঁধেই। স্কুলে তাঁদের ভরসাতেই ছেলেমেয়েদর পাঠান অভিভাবকেরা। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক শেষে সেই শিক্ষকদের কাণ্ডকারখানা দেখে চক্ষু চড়কগাছ মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর-সহ প্রশাসনের বহু লোকেরই। এমনকি ব্যাপারটি ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত। কী করেছিলেন তাঁরা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সম্প্রতি ভোটে জিতে পঞ্জাবে ক্ষমতায় এসেছে আম আদমী পার্টি। দিল্লিতেও স্কুলশিক্ষায় ব্যাপক বদল এনেছে আপ। পঞ্জাবের মসনদ দখলের পরে সে রাজ্যের স্কুলশিক্ষায় আমূল বদল আনতে বদ্ধপরিকর সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মন। আর সে জন্যই সম্প্রতি স্কুলশিক্ষা নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যের সমস্ত স্কুলের প্রিন্সিপাল ও শিক্ষকদের ডেকে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের নিয়ে বৈঠকেও বসেছিলেন তিনি। শিক্ষকদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। স্কুলশিক্ষায় পরিবর্তন আনতে কী কী করণীয়, এ বিষয়ে শিক্ষকদের মতামতও নেন তিনি। এ পর্যন্ত সব ভালই চলছিল। গোল বাঁধল এর পরেই।
আরও শুনুন: উদ্ধার করতে হবে পরীক্ষার প্রশ্ন, বিপদে পড়ে দমকল বাহিনী ডাকল স্কুল
বৈঠক শেষে আমন্ত্রিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য সেখানে করা হয়েছিল খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যাহ্নভোজের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল আলাদা একটি জায়গাও। সেখানে রাখা ছিল প্লেট থেকে আরম্ভ করে খাবারদাবার সমস্ত কিছুই। সেই খাবার নিতে গিয়েই মারপিট বাঁধিয়ে দেন রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্লেট নেওয়ার জন্য পড়ে যায় কাড়াকাড়ি। দেখা গেল, এ কনুই দিয়ে তাঁকে গুঁতো মারছেন, কেউ বা দিচ্ছেন ধাক্কা। বিশৃঙ্খলতা সামলাতে হিমশিম খাওয়ার জোগার নিরাপত্তারক্ষীদের।
অবশেষে এক কর্মী তড়িঘড়ি প্লেটগুলো এক কোণায় সরিয়ে নিয়ে যান। নিরুপায় দেখে নিজেই তা বিতড়ন করতেও শুরু করেন। তাতেও অবশ্য মারামারি থামার লক্ষণ দেখা যায়নি। আর এই গোটা ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও শুনুন: লক্ষ্য সারা বিশ্বে বিনামূল্যে শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার, ভারচুয়াল স্কুল গড়ার স্বপ্ন যুবকের
রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এ-হেন আচরণ দেখে ক্ষুব্ধ অভিভাবকমহল। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরাও। কেউ কেউ আবার ঠাট্টা করে বলেছেন, সবাইকে নিলডাউন করে দেওয়া হোক। কেউ আবার বলেছেন, শিক্ষকদেরই আগে সৌজন্যবোধের শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। সব মিলিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই ব্যবহার নিয়ে সমালোচনায় মুখর সোশ্যাল মিডিয়া।
শিক্ষাব্যবস্থায় কী কী বদল আনলে তা পড়ুয়াদের জন্য লাভজনক হবে, এ নিয়ে শিক্ষকশিক্ষিকাদের কাছে জানতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। এর জন্য রাজ্যের তরফে খোলা হয়েছিল একটি বিশেষ পোর্টালও। যেখানে নিজেদের ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেই প্রকল্পেরই চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সেই অনুষ্ঠান শেষ হতে না হতে যেভাবে নিজেদের সহবতের উদাহরণ দিয়েছেন তাঁরা, তা দেখে কার্যতই হতবাক প্রশাসন থেকে নেটদুনিয়া, সকলেই।