বাতকর্ম বড়ই সমস্যার জিনিস। রাস্তাঘাটে কিংবা কর্মস্থলে বায়ু ত্যাগ করতে গিয়ে হাসির পাত্র হন অনেকেই। আবার, বাতকর্ম চেপে রাখাও এক চরম অস্বস্তির ব্যাপার। কিন্তু এই ব্যক্তি টানা পাঁচ বছর ধরে কিছুতেই থামাতে পারছেন না বাতকর্ম। বহুদিন আগে একটি রোল খাওয়ার পর থেকেই নাকি এমন সমস্যার শুরু। এতদিনের হেনস্তার জেরে রেগে গিয়ে এবার ঘটিয়ে ফেললেন অবাক করা কাণ্ড। কী এমন করলেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রাস্তায় বেরিয়ে টুকটাক ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যেস আমাদের সকলেরই আছে। খিদের মুখে সেই খাবার কতটা স্বাস্থ্যকর, তা বিচার করারও ধৈর্য থাকে না অনেকসময়। তা তেমনভাবেই একটি রোল খেয়েছিলেন এই ব্যক্তিও। ব্যাস, তার থেকেই সমস্যার শুরু। টানা পাঁচ বছর ধরে নাকি বাতকর্ম থামছেই না তাঁর। ফলে রাস্তাঘাটে চরম অস্বস্তি নিয়েই চলতে হয় তাঁকে। শেষমেশ রেগে গিয়ে সেই খাবারের দোকানটির বিরুদ্ধে মামলা করে বসেন ওই ব্যক্তি। দাবি করেন ক্ষতিপূরণেরও।
আরও শুনুন: ঠিক যেন ‘শোলে’র ধর্মেন্দ্র! বউ বাপের বাড়িতে, অভিমানে ১০০ ফুট উঁচু টাওয়ারের মাথায় স্বামী
কী ভাবছেন, এসব আজগুবি গল্প? মোটেও না। বাস্তবে এমনই বিভীষিকা নেমে এসেছে বছর ৪৬-এর টায়রন প্রাডেশের জীবনে। ২০১৭ সালে ক্রিসমাসের সময় পরিবারের সঙ্গে বার্মিংহ্যামে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তখন উৎসবের মেজাজ। সেই সফরেই স্থানীয় একটি দোকান থেকে একটি রোল খেয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তারপরেই শুরু হয় সমস্যা। কয়েক ঘণ্টা পর বাড়ি ফিরেই শুরু হয় মারাত্মক পেটের যন্ত্রণা। একইসঙ্গে জ্বর, বমি সহ একাধিক শারীরিক অসুস্থতাও দেখা যায়। এমনকি চরম ডায়েরিয়ার জেরে রীতিমতো শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি। সুস্থ হতে প্রায় পাঁচ সপ্তাহ সময় লেগেছিল তাঁর। এরপর ধীরে ধীরে কাজে ফিরতে পারলেও দেখা দেয় অন্য এক সমস্যা। তিনি বুঝতে পারেন তাঁর বাতকর্মের হার অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। এবং চেষ্টা করেও তিনি তা চেপে রাখতে পারছেন না। এমনকি রাতে ঘুমের মাঝেও ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে এই জৈবিক ক্রিয়াটি। ডাক্তারের কাছে গেলে তিনিও বলেন এমন ঘটনা সত্যিই অস্বাভাবিক। কোনোভাবে পেটের ইনফেকশনের কারণেই এমনটা হচ্ছে, এমনই জানিয়েছিলেন চিকিৎসক।
আরও শুনুন: পোষা মোরগের শ্রাদ্ধ করলেন মালিক, ভোজ খেলেন ৫০০ গ্রামবাসী
আর এ কথা শুনেই নড়েচড়ে বসেন ওই ব্যক্তি। সোজা মামলা ঠুকে দেন সেই খাবারের দোকানের বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, তাঁকে পরিবেশন করা রোলটির মধ্যে ছিল সালমোনেল্লা গোত্রীয় জীবাণু। পেটের সমস্যার জন্য যা অনিবার্য ভাবে দায়ী। সুতরাং এতদিন ধরে তাঁর এই হেনস্তার জন্য দোকানটিকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই মর্মে ২ লক্ষ পাউন্ড, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় দু কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ হেঁকে বসেছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগের জেরে আদালতের নির্দেশমতো দোকানটিতে হানা দেয় বার্মিংহ্যামের কিছু হেলথ অফিসার। যদিও তাঁরা পরীক্ষা করে সেখানকার কোনও খাবারেই সালমোনেল্লার অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। তবে মাংস কাটার ছুরিতে কিছু পরিমাণ ই-কোলাই খুঁজে পান অধিকর্তারা। কিন্তু যেহেতু ওই ব্যক্তি তাঁর অভিযোগে ই-কোলাই-এর কথা বলেননি, তাই দোকানটিও আর কোনও জরিমানা দেয়নি। কার্যত হতাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। না রোগের হাত থেকে মুক্তি, না আর্থিক প্রাপ্তি, কোনও দিকেই সুরাহা হয়নি তাঁর।