প্রকৃতি ধ্বংস নিয়ে প্রতিবাদ করে বিশ্বে ঝড় তুলেছিলেন গ্রেটা থুনবার্গ। সম্প্রতি তাঁর কথাই যেন মনে পড়ালেন মণিপুরের এক কিশোরী। জলবায়ু পরিবর্তন যে সংকট ঘনিয়ে তুলেছে বিশ্ব জুড়ে, তার জন্য রাজনৈতিক নেতাদেরই সরাসরি দায়ী করলেন তিনি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক এই কিশোরীর কথা।
প্রকৃতি ধ্বংসের জন্য দায়ী বিশ্বের রাষ্ট্রনেতারাই। রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সপাটে এ কথা বলেছিলেন গ্রেটা থুনবার্গ। সম্প্রতি সে কথাই মনে করিয়ে দিলেন মণিপুরের এক বছর বারোর কিশোরী। গ্রেটার সুরেই লিসিপ্রিয়া কাঙ্গুজাম সরাসরি রাজনৈতিক নেতাদের দিকে আঙুল তুলে বললেন, জলবায়ু পরিবর্তন যে সংকট ঘনিয়ে তুলেছে বিশ্ব জুড়ে, তার দায় এই নেতাদেরই। পাশাপাশি পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য কী করা যেতে পারে, সেই বিষয়েও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন তিনি।
আরও শুনুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় AI ব্যবহার করে ছবি! ডিপ-ফেকের কবলে পড়বেন না তো?
সম্প্রতি দুবাইয়ে রাষ্ট্রসংঘের তরফে পরিবেশ সম্মেলনের আসর বসেছিল। সেখানেই হাজির ছিলেন মণিপুরের এই পরিবেশকর্মী। যেখানে তাবড় নেতানেত্রীরা বিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে চলেছেন, সেখানে সহজভাবে সহজ কথাটুকু বলেই ঝড় তুলেছেন লিসিপ্রিয়া। দেখা গিয়েছে, তাঁর হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, জলবায়ু সংকটের জন্য দায়ী আমাদের নেতারাই। তবে কেবল অন্যকে দোষারোপ করেই নিজের কাজ শেষ বলে মনে করেননি এই কিশোরী। তাই সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছেন, এই মুহূর্তে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করা দরকার। নেতারা যাতে তেমন পদক্ষেপ করেন, সেই আর্জি জানিয়ে লিসিপ্রিয়া জুড়ে দিয়েছেন, তাহলেই পৃথিবীকে বাঁচানো সম্ভব, সম্ভব আমাদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করাও।
আরও শুনুন: রক্তমাংসের নারীই নয়, পুতুল হয়েও ফোর্বসের প্রভাবশালী মহিলার তালিকায় ‘বার্বি’
আর লিসিপ্রিয়াকে দেখে অনেকেরই মনে পড়ছে গ্রেটা থুনবার্গের নাছোড় লড়াইয়ের কথা। ‘অ্যাসপারগার সিন্ড্রোম’ নামক জটিল স্নায়ুরোগে আক্রান্ত এই কিশোরী স্রেফ একাই নেমে এসেছিলেন লড়াইয়ের ময়দানে। একা প্ল্যাকার্ড হাতে ধরনায় বসে, রাষ্ট্রপুঞ্জে গিয়ে রাষ্ট্রনেতাদের সমালোচনা করে, তাঁদের পৃথিবী ধ্বংসের জন্য সরাসরি দায়ী করে গ্রেটা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আসলে প্রতিবাদের জন্য ইচ্ছেটাই আসল। প্রতিবাদের জন্য অনেক মানুষ, অনেক হাতিয়ার, কিছুই আদতে দরকার হয় না। ক্ষমতার বিরুদ্ধে চাইলে যে একাও গলা তোলা যায়, আর সেই গলা শুনতেও বাধ্য হয় বাকি দুনিয়া, সে কথা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন গ্রেটা। তেমনই পথে নেমেছেন ভারতের অনেকখানি পিছিয়ে-থাকা এলাকা মণিপুরের এই মেয়েটিও। একেবারে রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনে গিয়ে খোদ নেতাদের নিশানা করতেও ভয় পাননি তিনি। প্রকৃতির ধ্বংস নিয়ে যখন বিশ্বের অধিকাংশ ক্ষমতাবান এবং ক্ষমতাহীন মানুষই মাথা ঘামানোর কথা ভাবছেন না, সেই সময়েই ওঁরা লড়ছেন। আর সেই লড়াইটুকুই পৃথিবীর আগামী দিনের ভরসা।