মুরগি আগে না ডিম আগে? এই বিতর্ক নতুন নয়। দীর্ঘ আলোচনাতেও উত্তর খুঁজে পান না অনেকে। তবে একইসঙ্গে আরও একটা প্রশ্ন নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এবারেও বিতর্কের কেন্দ্রে সেই মুরগি। প্রশ্ন, মুরগি আসলে পশু নাকি পাখি? উত্তর খুঁজতে মামলা দায়ের হল আদালতে। কী জানা গেল শেষমেশ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মুরগি আসলে পশু। তাই মুরগি হত্যা আইনত অপরাধ। এই মর্মে আদালতে মামলা দায়ের হয়। কিন্তু বিজ্ঞান বইয়ের হিসাবে মুরগি আসলে পাখি। স্বাভাবিকভাবেই জমে ওঠে বিতর্ক। শেষমেশ বিচারপতির হস্তক্ষেপে ঘটনার নিস্পত্তি। কিন্তু এত কিছু ছেড়ে হঠাৎ মুরগি নিয়ে আদালতে মামলা হল কেন?
রবিঠাকুর বলেছিলেন, রোজ কত কি ঘটে যাহা তাহা…! বাস্তবে যেন এমনটাই সত্যি হচ্ছে রোজ। কত অজানা, আজগুবি, আশ্চর্যের ভিড়ে দিনযাপন। বিশ্বের নানা প্রান্তে ঘটে চলেছে এমনই কিছু, যা এতদিন কল্পনার বাইরে ছিল সকলের। এমন ঘটনার সহজ পরিণতি বলতে, খবরের শিরোনাম দখল। সেই নিয়ে খানিক চর্চা। বেশি নয়, মাত্র কিছুদিনের। কারণ ততদিনে আবারও চলে আসবে নতুন কিছু। কিন্তু এমন ঘটনার সংখ্যাও নেহাতই কম নয়, যা নিয়ে চর্চা চলে দীর্ঘদিন। মুরগি আসলে পাখি না পশু, সেই বিষয়টা খানিকটা তেমন।
ঘটনা গুজরাটের। সেখানকার হাইকোর্টে এই মর্মে মামলা দায়ের হয়। অভিযোগ ছিল, জীবন্ত পশু কেন কসাইখানায় রাখা হবে? এক্ষেত্রে পশু বলতে বোঝানো হয়েছিল মুরগিকেই। কারণ, আইন বলে কোনও জীবন্ত পশু কসাইখানায় রাখা যায় না। তাহলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মুরগির দোকানে কেন জীবন্ত অবস্থায় মুরগি রাখা হয়, সেই নিয়ে সরব হন মামলাকারী। এদিকে, পালটা যুক্তি ছিল মুরগি আসলে পাখি। সুতরাং জীবন্ত অবস্থায় আটকে রাখলে আইনত কোনও অপরাধ নেই, এমন দাবিও ওঠে। বেশ কয়েকমাস সওয়াল জবাব চলে। শেষমেশ অবশ্য, সরকার পক্ষের আইনজীবী জানিয়ে দেন মুরগিকে পশুর আওতায় রাখা হবে। এবং যাবতীয় আইন সেইমতো কাজ করবে। প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই ঘটনার পরেও কেন মাংসের দোকানে জীবন্ত মুরগি রাখা হয়? কারণ একটাই, এই সংক্রান্ত কোনও আইনি নোটিশ বা নিয়ম জারি করা হয়নি। তবে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যাতেও বিষয়টা ভুল বলা যাচ্ছে না। আসলে, ভাষার কারণে এমন বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। কোন প্রাণী কোন প্রজাতির অংশ হবে তা স্থির হয় অ্যানিমাল কিংডমের ভিত্তিতে। সেই হিসাবে মুরগি অ্যানিমিলিয়া গোত্রের। অর্থাৎ তা আসলে অ্যানিম্যাল। বাংলায় যাকে বলে পশু। কিন্তু মুরগির ডানা রয়েছে, পালক রয়েছে, ডিমও পাড়ে, সেই হিসাবে পাখিও। অতএব বিতর্ক সহজে মেটার নয়। তবে আদালতে কিছুটা হলেও নিষ্পত্তি হয়েছে এই বিষয়ের।