ভূতে ভয় নেই মোটেও। বরং তেনাদের প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করেন। অশরীরী আত্মার দেখা না পেলে অস্থির হয়ে ওঠেন। ভূতের প্রতি এই যৌন আকর্ষণ ব্যাপারটা ঠিক কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মধ্যরাত। একা তরুণী ঘরে। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে উঠলেন। আলো আঁধারি পরিবেশে তাঁর সঙ্গী কেবল ছায়া। হঠাৎ চোখ পড়ল আয়নায়। কে ওখানে? এগিয়ে গেলেন তরুণী। ভয় পেলেন না এতটুকু। তীব্র কামনার উদ্রেক তাঁর শরীরে। আয়নার দিকে ছুটে গেলেন যৌনতার টানে। অথচ সেখানে কেউ নেই। ফাঁকা, শূন্য সবকিছু।
আরও শুনুন:
শরীর কথা বলে কোন উপায়ে! যৌনতায় সুখের গুপ্তধনের সন্ধান দিলেন ‘সুখী’ মহিলা
ভূতের সিনেমার গল্প বলছি না। এমন অভিজ্ঞতা বাস্তবেই হয় অনেকের। যৌনতার টানে পাগলের মতো এদিক ওদিক ছুটে বেড়ান তাঁরা। অথচ মানুষ নয়, সঙ্গী হিসেবে খোঁজেন অশরীরী আত্মাকে। বিজ্ঞান বলছে এওএক ধরনের মানসিক রোগ। পোশাকি নাম স্পেকট্রোফিলিয়া। আক্রান্তরা মনে করেন তাঁরা ভূতের প্রতি আকর্ষিত হচ্ছেন। অনেক সময় আয়নায় প্রতিচ্ছবি দেখেও এরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাতে ক্ষতিও হয়। কারণ সামনে কিছু থাকে না। এদিকে উত্তেজনা প্রশমনের উপায় নেই। অনেক সময় নিজের ক্ষতি করে ফেলেন রোগী। সবথেকে বড় সমস্যা হল অন্যদের সহযোগিতা। অভিযোগ, সহজ করে বিষয়টি ভাবতেই চান না অন্যরা। আসলে, ভূতের অস্তিত্বই যেখানে প্রশ্ন তোলে, সেখানে ভূতের সঙ্গে যৌনতা অবান্তর মনে হতেই পারে!
আরও শুনুন:
ডিভোর্সের পরও ৮০০ জনের সঙ্গে যৌনতা, স্বাদবদল করতে নতুন বছরে নয়া চমক মহিলার
তবে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে সিনেমা হয়েছে অনেক। তাতে যৌনতা আর ভয় দুটোই রয়েছে ভরপুর। কোথাও কিচ্ছু নেই, অথচ নায়িকা কামনার আগুনে নিজেকে ঝলসে দিতে চাইছেন। সিনেমায় এমন দৃশ্য দেখে উত্তেজনায় ফুটছেন দর্শকও। নায়কের দেখা নেই তখনও। বোঝা গেল, নায়িকার সঙ্গী হিসেবে রয়েছে কোনও আত্মা। যৌনতার অভিনয় এতটাই সুন্দর ভাবে করা হয়েছে, যে বোঝার উপায় নেই ব্যাপারটা নকল। আসলে, এই ধরনের সিনেমায় স্পেকট্রোফিলিয়ার ভয়ঙ্কর দিকটাই দেখাতে চান পরিচালকরা। বিদেশে এই নিয়ে গবেষণাও হয়েছে বিস্তর। বিজ্ঞানের অন্দরমহলে তেমন আলোচনা না হলেও, ভূত বিশেষজ্ঞরা বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়েই দেখেন। এমনই এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, মার্কিন মুলুকে কিছু কিছু জায়গায় মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত। অনেকে বলেন, এঁরা নিয়মিত যৌনগন্ধী ভূতের সিনেমা দেখে নিজেদের এমন অবস্থা করেছেন। পালটা যুক্তি দিয়ে ভূত গবেষকরা বলেন, বিষয়টা মোটেও এত সহজ নয়। তবে ঠিক কী করলে এই রোগ থেকে মুক্তি মিলবে তা জানা যায় না। বলা ভালো, সেই অর্থে চেষ্টাও করেন না কেউ। স্রেফ আলোচনার বিষয় হিসেবেই সিনেমা-গল্পের রশদ যুগিয়ে চলেছে স্পেকট্রোফিলিয়া।