আদানি থেকে সেবি, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সকলের কাছেই ত্রাস হয়ে উঠেছিল। বিস্তারিত তথ্যে এমন কিছু দাবি করা হয়, যার প্রভাব পড়ে দেশের রাজনীতিতেও। মুহূর্তে সবকিছু তোলপাড় করে দেয় ওই রিপোর্ট। কিন্তু এই হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ সংস্থাই এবার বন্ধের মুখে। নেপথ্যে কী কারণ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আর্থিক তছরুপ হোক বা অন্য কোনও দুর্নিতী, কিছুই রেয়াত করে না হিন্ডেনবার্গ। তাদের রিপোর্টে সমস্ত তথ্য এমনভাবে তুলে ধরা হয়, যা অস্বীকারের পথ খুঁজে পান না কেউ। আর সেই কারণেই গোটা বিশ্বে এই সংস্থার চর্চা লেগেই থাকে। বিশেষ করে বানিজ্যিক মহলে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট অনেকটা জুজুর মতো!
কিন্তু এই হিন্ডেনবার্গ সংস্থাই এবার বন্ধের মুখে। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ন্যাথান অ্যান্ডারসনের বক্তব্য, এই সংস্থা তাঁর জীবনের একটা অধ্যায়, গোটা জীবন নয়। ভেবেচিন্তেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে এই খবর প্রকশ্যে আসতেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, ভয় পেয়েছেন ন্যাথান, কেউ আবার বলছেন কোনও হুমকি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। যদিও এই সব তত্ত্ব উড়িয়েছেন খোদ অ্যান্ডারসন। বরং বিষয়টাকে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হিসেবেই দেখিয়েছেন তিনি। এই আবহে চর্চায় ফিরেছে সংস্থার গোড়ার কথা। ঠিক কীভাবে শুরু হয়েছিল এই হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ?
খুব পুরনো সংস্থা নয়। প্রতিষ্ঠা হয় ২০১৭ সালে। যদিও খুব অল্প সময়ের মধ্যে একাধিক সংস্থার জালিয়াতি, দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা প্রকাশের জন্য খ্যাতি অর্জন করে।নাম হিন্ডেনবার্গ হলেও এই সংস্থায় ওই নামের কেউ নেই। বরং এই নামের নেপথ্যে রয়েছে, ১৯৩৭ সালে হিন্ডেনবার্গ বিমান দুর্ঘটনা। সেই ভয়ঙ্কর কাণ্ডের কারণ ছিল গাফিলতি। সেই থেকেই রিসার্চ সংস্থার কর্নধার অ্যান্ডারসনের মনে হয়, বিষয়টিকে খতিয়ে দেখা দরকার। ঠিক করেন, সেই সমস্ত সংস্থাকে চিহ্নিত করবেন, যা বিপদসীমার কিনারায় দাঁড়িয়ে। কারণ যাই হোক, তা খুঁজে বের করাই অ্যান্ডারসনের লক্ষ হয়ে ওঠে। সেইমতো রিপোর্ট প্রকাশ করতে শুরু করেন। তদন্ত করতেই দেখা যায়, এমন অনেক সংস্থার নাম উঠে আসছে, যারা বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে জালিয়াতি বা দুর্নিতীর কারণে। স্বাভাবিক ভাবেই এই রিপোর্ট ওইসব সংস্থা ভালোভাবে নেয়নি। ঠিক যেমনটা হয়েছিল আদানি কিংবা নিকোল কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে। দুই সংস্থার নামেই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছিল অ্যান্ডারসনের সংস্থা। অবশ্যই তথ্য প্রমাণ সহ। কিন্তু কেউ তা মেনেছে কেউ তা মানেনি। সব মিলিয়ে এই সংস্থার নাম চর্চায় থেকেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই সংস্থা বাণিজ্য মহলে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ন। কারণ এই সংস্থার কারণেই এমনকিছু বিষয় সামনে এসেছে, যা না এলে বিভিন্ন সমস্যা হতেই পারত। এই আবহে সংস্থা বন্ধের খবর প্রকাশ্যে এল। তাতেই নতুন করে শুরু হল নানা জল্পনা।