রামের বধূ হয়ে অযোধ্যায় পা রেখেছিলেন জনকদুহিতা সীতা। অন্যদিকে, অযোধ্যা থেকে এই রাজকন্যাকে চলে যেতে হয়েছিল ভিনদেশে। সাতপাকে বাঁধা পড়ে তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন সুদূর কোরিয়াতে। এখনও তাঁর সাক্ষ্য বয়ে চলেছে সরযূ নদীর তীরের স্মৃতিসৌধটি। শুনে নেওয়া যাক।
রামরাজ্যের ছোঁয়া লেগেছিল ভারতের বাইরে অনেক দূরের এক দেশেও। সে দেশকে এখন আমরা চিনি দক্ষিণ কোরিয়া বলে। সে দেশের এক রাজাই নাকি সম্পর্কে অযোধ্যার জামাই হয়েছিলেন কোনও এক কালে। সেখানকার প্রাচীন কাহিনি বলে, ভারতের আয়ুটা রাজ্য থেকে এক রাজকন্যা দক্ষিণ কোরিয়ার রানি হয়েছিলেন। আর সেই আয়ুটা রাজ্যই আসলে অযোধ্যা, এমনটাই বিশ্বাস অনেকের। তাঁরা মনে করেন, অযোধ্যার রাজকন্যার হাত ধরেই শ্রীরামের মহিমা ছড়িয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়াতেও।
-: আরও শুনুন :-
রামচরিত: শস্যের রূপকে রাম-সীতা ভাই-বোন, রবীন্দ্রনাথের রামায়ণ মানুষের যন্ত্রণার কাব্য
দক্ষিণ কোরিয়ার অধিবাসীরা মনে করেন, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজা কিং সুরোর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রাজকন্যা সুরিরত্নার। সে যিশুর জন্মেরও আরও ৪৮ বছর আগের কথা। যদিও কেন এত দূর দুই দেশের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল, তার কোনও স্পষ্ট উত্তর মেলে না। লোককথা বলে, দেবতার নির্দেশেই এ কাজ করেছিলেন অযোধ্যার তৎকালীন রাজা। কেউ মনে করেন, এ কাজের উদ্দেশ্য ছিল ধর্মপ্রচার বা বাণিজ্যিক সুবিধা। কোরিয়ার প্রাচীন গ্রন্থ ‘সামগুক ইউসা’-তে ওই বিয়ের কথা উল্লেখ করা আছে। জানা যায়, ভারতবর্ষ ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার পর রানির নাম হয় হিও হোয়াং-ওক। রাজা-রানি মিলে দক্ষিণ কোরিয়ার কিমাহে শহরে গড়ে তোলেন কারক রাজবংশ। দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট কিম-দায়ে জং এবং প্রধানমন্ত্রী কিম জং-পিল এই করক রাজবংশেরই সদস্য। ২০০১ সালে ভারতেও অযোধ্যার সরযূ নদীর তীরে রানি হিও ওয়াং-ওকের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়।
-: আরও শুনুন :-
রামচরিত: যুদ্ধের দিনে প্রেম… কম্বনের রামায়ণ যেন ব্যক্তিগত ঈশ্বরীতলার রূপকথা
তবে থাইল্যান্ডেও যেহেতু অযোধ্যা নামের এক রাজ্য রয়েছে, তাই এই রাজকন্যাকে তাদের দেশের বলে দাবি করে থাইল্যান্ডও। দক্ষিণ কোরিয়ার এই রানি যে আসলে কোন অযোধ্যার সন্তান, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। পুরো ঘটনাকেই নিছক কিংবদন্তি বলেও উড়িয়ে দিয়েছেন ঐতিহাসিকদের একাংশ।