এশিয়ার সবথেকে ধনী গ্রাম! চিন বা জাপান নয়, রয়েছে এই ভারতেই। এই গ্রামের সঙ্গে বিশেষ যোগ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। কোথায় রয়েছে এমন গ্রাম? কোন বিশেষত্বের জোরে এই গ্রাম ধনী তকমা পেল? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শহর বনাম গ্রাম। এ তুলনা অনেকেই করে থাকেন। একদিকে ভোগবিলাসের প্রাচুর্য অন্যদিকে সাধারন জীবনযাপন। শহর আর গ্রাম বললে মোটামুটি এমন ছবি মনে আসে। আবার এমনটাও অনেকে মনে করেন, যে গ্রামের মানুষের তুলনায় শহুরেদের টাকা-পয়সা অনেক বেশি! কিছুক্ষেত্রে অবশ্যই একথা সত্যি। তবে এ দেশে এমনও কিছু গ্রাম রয়েছে যেখানকার বাসিন্দারা সম্পত্তির বিচারে অনায়াসে শহুরেদের ছাপিয়ে যাবেন।
:আরও শুনুন:
চার বছরে একবারই প্রকাশিত হয়, দামেও টেক্কা দেয় বিরল এই সংবাদপত্র
আর সেই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে মাধাপুর। গুজরাটের এই গ্রাম গোটা দেশের মধ্যে বিখ্যাত। কারণ একটাই, এখানকার বাসিন্দাদের সম্পত্তি। শোনা যায়, এখানকার কিছু গ্রামবাসীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৭০০০ কোটি টাকা অবধি ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। যা আচ্ছা আচ্ছা ব্যবসায়ীর সম্পত্তিকে টেক্কা দিতে পারে। আসলে, গুজরাট মানেই ধনী ব্যবসায়ীদের জায়গা। বিখ্যাত ধনকুবের আম্বানি-আদানিও গুজরাটের বাসিন্দা। বর্তমানে মুম্বই-এ থাকলেও মুকেশ আম্বানির বিপুল সম্পত্তি রয়েছে গুজরাটের জামনগরে। সদ্য আম্বানি পুত্রের বিয়ে উপলক্ষে সেই সম্পত্তির খতিয়ান দেখেছে গোটা দুনিয়া। শুধু ভারত নয়, বিদেশেও এই কারণে গুজরাটের নাম বিখ্যাত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মস্থানও গুজরাট। দীর্ঘদিন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন নমো। গুজরাটের উন্নতিতেও তাঁর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে বলেই শোনা যায়। সেই হিসাবে এই রাজ্যে এশিয়ার ধনীতম গ্রাম থাকাটা তেমন অস্বাভাবিক নয়। জানা গিয়েছে, মাধাপুরে মূলত প্যাটেল সম্প্রদায়ের বাস। জনসংখ্যা কম করে ৩২ হাজার। সবমিলিয়ে প্রায় হাজার বিশেক বাড়ি রয়েছে এই গ্রামে। তবে ব্যাঙ্ক রয়েছে ১৭ খানা। হবে নাই বা কেন, গ্রামের প্রত্যেকেই যদি কোটি কোটি টাকা ব্যাঙ্কে রাখেন তাহলে কর্তৃপক্ষকে এমন ব্যবস্থা করতেই হয়। দেশের প্রায় সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে এই গ্রামে। সেইসঙ্গে রয়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্কও। কারণ একটাই, গ্রামবাসীদের জমা করা বিপুল টাকা।
:আরও শুনুন:
নুন-চিনিতেও ভেজাল! প্যাকেটের ভিতর মাইক্রোপ্লাস্টিকের খোঁজ, মাথায় হাত মধ্যবিত্তের
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এতটাকা গ্রামবাসীরা কীভাবে রোজগার করেন?
এমনিতে যে কোনও গ্রামের প্রধান জীবীকা হয় চাষাবাদ। সেইসঙ্গে কোথাও কোথায় মাছ ধরা বা অন্য কিছু কাজ চলে। কুটির শিল্পকে নির্ভর করেও সংসার চালান বহু গ্রামবাসী। তবে গুজরাটের এই গ্রামের বাসিন্দারা সেসব কিছুই করেন না। বলাই বাহুল্য, এ দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী চাষাবাদ করে বা মাছ ধরে কোটি টাকা রোজগার সম্ভব নয়। তাহলে? মাধাপুরের বাসিন্দাদের এই বিপুল মূলধন বিদেশ থেকে আসে। এখানকার অধিকাংশ বাড়ির সদস্যই বিদেশে থাকেন। মূলত আফ্রিকায়। সেখান থেকেই টাকা পাঠান গ্রামে। যার বেশিরভাগটাই জমিয়ে রাখেন গ্রামে থাকা পরিবারের সদস্যরা। সেই টাকা জমতেই জমতেই এই বিপুল অঙ্ক হ দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, গ্রামের উন্নতিতেও বিদেশ থেকে আসা টাকা খরচ করেন তাঁরা। নতুন স্কুল, হাসপাতাল, বাঁধ সবই তৈরি হয় এই টাকা থেকে। তাতেও জমে যায় ভালমতো। সেই জমানো টাকার বিচারেই এশিয়ার সবথেকে ধনী গ্রামের তকমা পেয়েছে গুজরাটের মাধাপুর।