সংসার একার হোক বা যৌথ, রোজ কী রান্না হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়াই যেন এক বড় ঝক্কি। সেই পর্ব থেকেই ইনি নিজেকে ছুটি দিয়েছেন। ১৫ বছর ধরে প্রত্যেক দিন এই বাঁধাধরা মেনুই খেয়ে চলেছেন এই ব্যক্তি।
১৫ বছর ধরে পাতে পড়ছে একই খাবার। তাও একবেলা নয়, সকালে, দুপুরে, রাতে। অর্থাৎ ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ আর ডিনার- সবকিছুরই মেনু একেবারে বাঁধাধরা। আর সেই এক খাবারেই এতগুলো বছর ধরে ক্ষুন্নিবৃত্তি করে চলেছেন এই ব্যক্তি। তাতে লাভের লাভ একটাই, রোজ কী রান্না হবে তা নিয়ে ভাবনাচিন্তার আর প্রয়োজনই পড়ে না।
রোজ কী রান্না হবে- যে কোনও বাড়িতেই এই প্রশ্নটা একেবারে দৈনন্দিন সমস্যা। বাজারদর বাড়ছে, অতএব বাজারের থলিতে কতটুকু কী ঢুকবে সে এক প্রশ্ন। সেই বুঝে হাত দিতে হবে ভাঁড়ারে। সাশ্রয় না করলে সংসার চালানো তো ভার। এদিকে যা ইচ্ছে তাই রান্না করলেই তো হবে না। কার মুখে কী রোচে, সে কথা না ভাবলে যে খাওয়াটাই মাটি। অতএব সংসার একার হোক বা যৌথ, রোজ কী রান্না হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়াই যেন এক বড় ঝক্কি।
আর সেইখানেই আপত্তি জাপানের এই ব্যক্তির। একঘেয়েমিতে আপত্তি নেই, তবে রোজ পরিশ্রম করায় বেজায় আপত্তি তাঁর। ঠিক শারীরিক শ্রমও নয় কিন্তু। তবে মাথা খাটানোও কি কম পরিশ্রমের কাজ? ইনি তো অন্তত তেমনটাই মনে করেন। আর সেই কারণেই, জীবন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারটিকে একেবারেই বিসর্জন দিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে ছোট ছোট সিদ্ধান্তগুলির বেলায়। কী খাওয়া হবে, কী পরা হবে, রোজকার এমনই ছোট ছোট কাজগুলিতেও তো আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেই পর্ব থেকেই ইনি নিজেকে ছুটি দিয়েছেন। সকালে নাটস আর র্যামেন, লাঞ্চে চিকেন ব্রেস্ট আর ডিনারে পর্কের সঙ্গে বিন স্প্রাউট- প্রত্যেক দিন এই বাঁধাধরা মেনুই খেয়ে চলেছেন তিনি। যেমন রোজই একই খাবার খান, তেমনই রোজই একই ধরনের পোশাক পরেন। অন্তর্বাস, মোজা ইত্যাদির ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। ৩৮ বছরের গো কিতা বিগত ১৫ বছর ধরেই মেনে চলছেন এই রুটিন। ১৫ বছর আগে পেশাদার কর্মজীবনে প্রবেশ করার পরই তাঁর মনে হয়েছিল, কাজের দুনিয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিজীবনেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার চাপ জীবনটাকে কেবল কঠিনই করে তুলছে। তাই ছোট ছোট সিদ্ধান্তের ভার সরিয়ে সেই সময় এবং জীবনীশক্তি অন্য কাজে লাগানোই ভালো- এমনটাই মনে করেন জাপানের এই ব্যক্তি। আর এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরুন জীবন থেকে খানিকটা ভার সরানো গিয়েছে বলেই মত ওই ব্যক্তির।