একসময় রেলে চড়েই দীর্ঘদিনের জন্য তীর্থযাত্রায় বেরোতেন পুণ্যার্থীরা। এবার ফের তেমনই সুযোগ নিয়ে এল ভারতীয় রেল। এক যাত্রায় একাধিক পুণ্যস্থানকে ছুঁয়ে আসার সুযোগ দিচ্ছে রেল, তাও বিশেষ ছাড়ে। যার নাম পুণ্যক্ষেত্র যাত্রা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
রবীন্দ্রনাথ নিছক মজা করেই লিখেছিলেন, ‘পতির পুণ্যে সতীর পুণ্য, নহিলে খরচ বাড়ে’। সেও এক তীর্থযাত্রা প্রসঙ্গেই লেখা। সত্যি বলতে, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান সময়ে আরও বেড়েছে রেলের টিকিটের দাম। বিশেষ করে করোনাকালের পরে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য ছাড়ের সুবিধাও উঠে গিয়েছে। অথচ তীর্থযাত্রা করার ইচ্ছে যাঁদের ষোলো আনা, তাঁদের অধিকাংশই এই বয়স্কদের মধ্যেই পড়েন। কিন্তু খরচখরচার দিকে তাকিয়ে সবসময় লম্বা তীর্থযাত্রা করার সুযোগ মেলে না তাঁদের। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের দিকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় রেল। মাত্র ১৫ হাজার টাকায় ভারত জুড়ে ছয়-ছয়টি তীর্থস্থান ঘুরে আসার সুযোগ করে দিচ্ছে সংস্থা। কীভাবে? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: পাতাললোকে রাত্রিবাস! মাটির নীচেই ঝাঁ চকচকে হোটেল, কৌতূহলে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ
এমনিতে দম্পতিদের মধুচন্দ্রিমার জন্য কিছু বিশেষ প্যাকেজ রয়েছে ভারতীয় রেলের। এবার বয়স্কদের কথা ভেবে তীর্থযাত্রার জন্যও নয়া প্যাকেজ ঘোষণা করল তারা। হিন্দু শাস্ত্র মতে তিনটি পবিত্র স্থান, পুরী কাশী এবং প্রয়াগরাজ জুড়ে চলবে এই সফর। আর তার মধ্যেই ছটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দেখানোর পাশাপাশি এই জায়গাগুলির সংস্কৃতিকেও চিনিয়ে দেবে এই যাত্রা। এই স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির, কোনারকের সূর্য মন্দির এবং সমুদ্রসৈকত, গয়ার বিষ্ণুপদ মন্দির। রয়েছে প্রয়াগের ত্রিবেণী সঙ্গম, হনুমান মন্দির এবং শঙ্কর বিমান মণ্ডপ। পাশাপাশি অযোধ্যার রামজন্মভূমি, হনুমানগাড়ি এবং সরযূ নদীর আরতি দেখার ব্যবস্থাও থাকছে। এদিকে বেনারসের কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, কাশী বিশালাক্ষী মন্দির, অন্নপূর্ণা মন্দির এবং সন্ধ্যাবেলার গঙ্গা আরতিও দর্শন করতে পারবেন পুণ্যার্থীরা। আর এই সবকিছুর জন্য মোট ট্রেন ভাড়া পড়বে ১৫ হাজার ৭৫ টাকা। এই ভাড়ার সঙ্গে ধরা থাকছে নিরামিষ প্রাতরাশ এবং দুবেলার খাবারও। সব মিলিয়ে তীর্থযাত্রীদের কাছে তাঁদের স্বপ্ন পূরণের এক বড় সুযোগ এনে দিয়েছে ভারতীয় রেল, এমনটাই মনে করছেন অনেকে।