আইনশৃঙ্খলা রক্ষা আর নাগরিকদের সুরক্ষা, হিসেবমতো এই দায়িত্বই পালন করার কথা। কিন্তু তার বাইরেও একাধিকবার ছকভাঙা কাজে নজর টেনেছে ভারতীয় পুলিশবাহিনী। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
জন্মদাত্রী মা ভর্তি হাসপাতালে। এদিকে খিদের জ্বালায় পরিত্রাহি চিৎকার জুড়েছে মাস চারেকের শিশুটি। একরত্তির এই অসহায় অবস্থা দেখে মায়ের দায়িত্ব পালনে এগিয়ে এলেন কর্তব্যরত এক মহিলা পুলিশকর্মী। এমএ আরিয়া নামের ওই পুলিশকর্মী নিজেও ন-মাসের এক শিশুর মা। তাই আরেক শিশুকে দেখে স্থির থাকতে পারেননি তিনি। কাজের মধ্যেই ওই শিশুটিকে স্তন্যপান করান মহিলা। পুলিশের যে উর্দিধারী কঠোর ছবি সাধারণত দেখা যায়, তার থেকে ব্যতিক্রমী এমনই এক মানবিক ছবি সম্প্রতি ধরা পড়েছে কেরলে। আর সেই প্রসঙ্গেই আলোচনায় উঠে এল পুলিশের অন্যরকম কাজের কথা।
আরও শুনুন: ভিউ-ই লক্ষ্মী! নজর কাড়তে টানা ১ সপ্তাহ মাটির তলায় কফিনবন্দি ইউটিউবার, তারপর…
সত্যি বলতে, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত থাকেন, তাঁদের সে অর্থে ব্যক্তিগত জীবন কতটুকুই বা থাকে! পুলিশের জীবন তা থেকে আলাদা কিছু নয়। রোদে জলে সবসময়েই উর্দি গায়ে দায়িত্ব পালন করে যাওয়াই তাঁদের কাজ। কখনও কখনও পরিবেশ পরিস্থিতি তাঁদের খানিক রুক্ষও করে তোলে। কিন্তু তারপরেও, কোনও কোনও ঘটনা তাঁদের মানবিক মুখটিকে নতুন করে চিনিয়ে দিয়ে যায়।
যেমন, মুম্বইয়ের ভয়ংকর কমলা মিল অগ্নিকাণ্ডের কথাই ধরুন। সবার আগে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুদর্শন শিন্ডে নামের এক কনস্টেবল। আগুন ধোঁয়া ছাইয়ের মধ্যে দিয়েই একটি সাততলা বাড়িতে তিনবার উঠে তিনজনকে বের করে আনেন তিনি, দমকল এসে পৌঁছনোর আগেই। আবার মাস চারেকের এক অপহৃত শিশুকে ১৫ ঘণ্টার মধ্যে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিল হায়দরাবাদ পুলিশ। একটি গ্রেনেড হামলার সময় ১০ জন নিরাপত্তারক্ষীকে বাঁচিয়েছিলেন এক কাশ্মীরি পুলিশকর্মী।
আরও শুনুন: ভাঙাচোরা লোহা দিয়েই তৈরি হল ‘রামমন্দির’! হাত লাগালেন মুসলিম কারিগরেরাও
করবা চৌথ উপলক্ষে অভিনব এক কাণ্ড ঘটিয়েছিল উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। সেদিন হেলমেট ছাড়া বাইক চালাতে গিয়ে যেসব ব্যক্তি ধরা পড়েন, তাঁদের স্ত্রীদের হাতে একটি করে হেলমেট তুলে দিয়েছিল পুলিশ। আবার একটি ৯ বছরের কিশোরীর যৌন হেনস্তার ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করতে ভয় পেয়েছিল তার পরিবার। সেই সময়েও নিজেরাই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছিল উত্তরপ্রদেশের পুলিশই। আর এহেন মানবিক কাজগুলির দরুনই নিজেদের ভাবমূর্তি আরও একটু উজ্জ্বল করে তুলেছে ভারতীয় পুলিশবাহিনী।