‘পথ চলাতেই আনন্দ’, বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সত্যিই তো পথে পথে হেঁটে-চলে বেড়াতে আনন্দ কি কিছু কম? আর যদি সেই পথ হয় আয়নার মতো ঝকঝকে-তকতকে? মানে মাইলের পর মাইল হেঁটে গেলেও পায়ে একটু ময়লা লাগল না! এ-ও আবার হয় নাকি! হয় কিনা তাই-ই পরখ করতে গিয়েছিলেন এক তরুণী। আর কী হল তারপর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
যা পাবলিক, যা সাধারণের, তা একরকম অপরিচ্ছন্ন থাকবে– এই আমাদের গোঁড়া ধারণা। সে পাবলিক টয়লেট বলুন, লোকাল ট্রেন বলুন, শহরের সম্ভ্রান্ত রাস্তাঘাট বলুন কিংবা স্টেশন চত্বর– সব স্থানেই এ এক ডাহা সত্যি! স্বচ্ছ ভারত অভিযানের পর রাস্তাঘাটের হাল কি বদলেছে এতটুকুও? এক্কেবারেই না। এক-দেড়দিনের ঝুটা পরিশ্রমের পর যে-কে সেই! তবু, কোথাও কোথাও এমন কাণ্ড ঘটে থাকে, যা দেখে-শুনে মানুষ থ মেরে যায়। আগে বলি হয়েছেটা কী!
গল্প নয়। নিখাদ সত্যি। আমরা বইয়ের পাতায় পড়েছি জাপান হল ‘সূর্যোদয়ের দেশ’। ছবিতে দেখেছি জাপানের উন্নত প্রযুক্তি,শুনেছি ঝাঁ-চকচকে পথ-ঘাটের হরেক কিসিমের গল্প। কিন্তু ছবির সঙ্গে বাস্তবের মিল আছে কি? জাপানের রাস্তাঘাট কতখানি পরিষ্কার, তা যাচাই করতেই পথে নেমেছিলেন এক তরুণী– নাম সিমরান জৈন। তিনি একজন ইন্সটাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার। ভিডিওর কন্টেন্টের জন্য কিনেছিলেন একজোড়া সাদা মোজা। আর সেই মোজা পায়ে গলিয়ে তিনি সোজা হেঁটে গেলেন জাপানের রাস্তা ধরে। হাঁটতে হাঁটতে করলেন ভিডিও। যথাসময়ে ফিরেও এলেন। আর ফিরে মোজার দিকে তাকিয়ে চোখ উঠল কপালে। কী আশ্চর্য! যমন মোজা ছিল হাঁটা শুরুর আগে, অবিকল রয়েছে তেমনই! সাদা মোজায় পড়েনি এতটুকু দাগ-ছোপ!
আরও শুনুন: ‘ভারতে ট্রেনের টয়লেট এত নোংরা!’ কটাক্ষ বিদেশিনির, পালটা কী জবাব নেটদুনিয়ার?
সমাজমাধ্যমে এই ভিডিওটিতে ২৬ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ। নেটিজেনদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা কমেন্ট বক্সে! জাপানের এই অসামান্য দক্ষতা দেখে সাধুবাদ না জানিয়ে উপায় নেই। তবে এখানেই শেষ নয়। জাপানের রাস্তাঘাট দেখে ঈর্ষাও প্রকাশ করেছেন বহুজন। তার অধিকাংশই অবশ্য ভারতবাসী। ভারতের রাস্তাঘাট এবং সেখানে আবর্জনা কিন্তু একটি গুরুতর সমস্যা। তাই কমেন্ট সেকশনে কেউ বলেছেন, ভারতে এই কাজটি কালো মোজা দিয়েই করতে হবে। কেউ আবার টিপ্পনী কেটে বলেছেন, ডিটারজেন্ট কোম্পানির মেয়াদ বোধহয় এবার ফুরিয়ে এল। তবে সকলেই যে শুধু প্রশংসা করেছেন তা নয়, সংশয়ও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। তাঁরা লিখেছেন, জাপান আদৌ এত পরিচ্ছন্ন নয়। এ আসলে ভিডিওর কারসাজি। এমনটা যে নয়, সেকথা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে বিষয়টা নিয়ে নেটদুনিয়ায় হইচই চলেছে ভালমতো। আসলে, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাপানের ভূমিকা আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তরুণীর ভিডিও– এই দুই-ই যে একবাক্যে সকলের মন কেড়ে নিয়েছে, তাকে স্যালুট না জানিয়ে উপায় নেই।