চলার পথে সামনে হাত পেতেছে কোনও পথশিশু। এমন দৃশ্য কার না চোখে পড়ে! সেই দৃশ্য দেখে দু-একটা খুচরো দেন কেউ কেউ। তবে, এই পথশিশুরাও আপনাকে অর্থ দিতেও পারে, তাও ১০০০ টাকা! একটু খটকা লাগছে শুনে! আসুন তাহলে পুরোটা শুনে নেওয়া যাক।
শহরের ভিতর থেকে যায় আর-এক রকম শহর। সে-শহরের বোধহয় নির্দিষ্ট কোনও নাম হয় না। আমাদের সমাজ, অর্থনীতি যে নগরের জন্ম দিয়েছে, তাতে ছবিগুলো বিশেষ বদলায় না। একদিকে বৈভব, অন্যদিকে দৈন্য। একদিকে প্রাচুর্য, অন্যদিকে অসহায়তা। এর যেন ব্যতিক্রম নেই।
এরকমই শহরের রাজপথে চলতে চলতে দেখা যায়, সামনে এসে দাঁড়িয়েছে কোনও খুদে। পরনে মলিন পোশাক। চোখেমুখে অনাহার, দারিদ্রের ছাপ স্পষ্ট। মেলে ধরা তার দুহাতে জেগে থাকে আর্তি, কাকুতি। বিশেষ কিছু না, সামান্য সাহায্য প্রত্যাশী সে। হ্যাঁ, পথশিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি নতুন কিছু নয়। দেখতে দেখতে আমাদের তা চোখ সওয়া হয়ে গিয়েছে। সহৃদয় কেউ পকেট হাতড়ে কিছু খুচরো দেন। কেউ বা এড়িয়ে যান।
আরও শুনুন:
বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে, বিয়ে কবে! অন্যের ভরসায় না থেকে রিকশায় যুবকের পোস্টার ‘বউ চাই’
তবে, এই অভিশাপ থেকে শিশুদের মুক্তি দেওয়া যায় কী করে! সাধারণ মানুষের কাছে সে-উত্তর স্পষ্ট নয়। সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক স্তরে যদি উদ্যোগ না নেওয়া যায়, তাহলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছুই করা হয়তো সম্ভব নয়। তবে, হীরক রাজার দেশের সেই ভরসাফূর্তি উৎসব থেকে আজ পর্যন্ত একটা জিনিস বেশ চোখে পড়ে। যখনই উৎসবের আলোয় চারিদিক ছেয়ে যায়, তখন এই দৃশ্যগুলোকে পর্দানশীন করে দেওয়া হয়। তাতে তো বাস্তবতা বদলায় না।
সেই বদলের ডাক দিয়েই অভিনব এক উদ্যোগ নিয়েছে ইন্দোর জেলা-প্রশাসন। জেলাশাসকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যদি কেউ পথশিশুদের ভিক্ষা করতে দেখেন, তাহলে যেন প্রশাসনের কাছে শিশুটির খোঁজ দেন। সেইমতো উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। ভিক্ষা থেকে পথশিশুদের মুক্তি দিতেই এই ব্যবস্থা। আর তার জন্য থাকছে পুরস্কারও। ভিক্ষাবৃত্তি করতে হচ্ছে এরকম পথশিশুদের খোঁজ দিলে মিলবে ১০০০ টাকা পুরস্কার।
তবে, অর্থপ্রাপ্তি বোধহয় এখানে বড় কথা নয়। পথশিশুদের ভিক্ষা থেকে মুক্তি দেওয়ার সামাজিক কর্তব্যটুকুও এভাবেই পালন করতে পারবেন নাগরিকরা।