নড়ে-চড়ে, কিছু একটা যে আছে, টের পাওয়া যায়… কিন্তু কিছুতেই আর তাকে ধরা যায় না। অন্য কিছু নয়, একটা জলজ্যান্ত আরশোলার কথাই হচ্ছে। সে ব্যাটা নাকি এক ব্যক্তির কানে ঢুকে দিন তিনেক ঘাপটি মেরে বসেছিল! তাতে সেই ব্যক্তির কী হাল হয়েছিল? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আগেরদিন গিয়েছিলেন সাঁতার কাটতে। তারপর থেকেই কানের মধ্যে বেজায় অস্বস্তি। ভদ্রলোক ভেবেছিলেন, কানে জল ঢুকেছে, দু-একদিনে সেরে যাবে। কিন্তু সেই অস্বস্তি যে মূর্তিমান আরশোলা হয়ে কান থেকে বেরোবে কে জানত! কানের ভিতর ঢুকে দিন তিনেক সে ব্যাটা শুধু বসেই থাকেনি, দিব্যি জ্যান্তও থেকেছে।
আরও শুনুন: দেশভাগে ছাড়াছাড়ি, কেটে গেছে ৭৪ বছর, এতদিনে দেখা হল ‘হারিয়ে যাওয়া’ দুই ভাইয়ের
ভুক্তভোগীর নাম জেন ওয়েডিং, বাস নিউজিল্যান্ডে। আরশোলায় যে এতদিন ভয় পেতেন, এমনটা নয়। তবে এবার থেকে তিনি দিব্যি ভয় পেতে শুরু করেছেন। কী করে যে পতঙ্গটি তাঁর কানে ঢুকে পড়েছিল কে জানে! কানের ভিতর অস্বস্তি হচ্ছে দেখে প্রথমে এক চিকিৎসকের কাছে যান ওই ব্যক্তি। যেহেতু সাঁতার কাটার কথাটা বলেছিলেন, সেহেতু তিনিও ভাবেন কানে জলই ঢুকেছে। সেইমতো ওষুধপত্র দেন। কিন্তু না, তাতেও কিছু সুরাহা হল না। মিঃ ওয়েডিং বরং এবার নতুন একটা জিনিস খেয়াল করলেন। কী যেন একটা কানের ভিতর থেকে থেকেই নড়ছে-চড়ছে। ভয়ে তিনি এবার একজন অন্য ডাক্তারবাবুর কাছে গেলেন। এই চিকিৎসকও ব্যাপারটা দেখে গোড়ায় বুঝতে পারেননি। প্রথমে ভেবেছিলেন, ওই ব্যক্তির কানে বুঝি টিউমার হয়েছে। তারপর কী সন্দেহ হয়, আর একবার পরীক্ষা করে দেখেন। তারপরই তিনি বুঝতে পারেন যে, কানের ভিতর কোনও একটা পতঙ্গ ঢুকে বসে আছে।
আরও শুনুন: ওমিক্রনের ঠেলায় কোমরে-পিঠে ভয়ানক ব্যথা! কী করলে মিলবে উপশম?
তখন ভয় পেলেও, চমকের যেন আরও বাকি ছিল। ক্লিনিকে কানের ভিতর থেকে পতঙ্গটিকে বের করা উদ্যোগ নেওয়া হল। একটু পরে দেখা গেল, ছোটখাট কিছু নয়, একটা আরশোলাই ঢুকে পড়েছিল ওই ব্যক্তির কানে, এবং দিন তিনেক সেটি জীবন্তও ছিল। তা দেখে প্রায় আঁতকে ওঠেন ভদ্রলোক। চিকিৎসকরাও বিস্মিত। আসলে বাস্তবে এমন সব ঘটনা ঘটতে থাকে যে, বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না! এটিও সেরকমই একটি।
আরও শুনুন: কবে থামবে ওমিক্রন ঝড়! তৃতীয় ঢেউ শেষের সময় জানালেন বিশেষজ্ঞরা
তবে দিন তিনেকের এই দুঃস্বপ্নের দিনরাত্রি কাটিয়ে অন্তত দুটো ভাল জিনিস এর থেকে শিখেছেন ভদ্রলোক। প্রথমবার ভেবেছিলেন কানে জল ঢুকেছে। একজন ডাক্তারাবাবু সেইমতো ওষুধও দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে স্বস্তি ফিরছে না দেখেই তারপর তিনি আর-এক ডাক্তারবাবুর কাছে যান। আর তাতেই ধরা পড়ে সবকিছুই। ভদ্রলোকের তাই মত, শরীরের ব্যাপারে বরং সেকেন্ড অপিনিয়ন নিয়ে নেওয়াই ভালো। আর, দুই নম্বর ভালো জিনিসটি হল, তিন দিনের জন্য কানে কিছু শুনতে পাচ্ছিলেন না তিনি। আরশোলা বাবাজি বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে ফিরেছে তাঁর শ্রবণশক্তি। আর তাতে যারপরনাই খুশি তিনি। জীবনে যত মন্দ জিনিসই ঘটতে থাকুক না কেন, তারও যে সদর্থক দিক থাকতে পারে, এই ভদ্রলোক যেন সে কথাই মনে করিয়ে দিলেন।