চাকরি ছেড়ে গোরুর দুধের ব্যবসা শুরু করেছেন এই ব্যক্তি। তাও আবার যে সে চাকরি নয়। মার্কিন মুলুকের এক নামী কোম্পানির চাকরি। এই কাণ্ড শুনে অনেকেই হয়তো তাঁকে নেহাত পাগল ভাববেন। কিন্তু এই ব্যবসা করেই বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক তিনি। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
স্নাতক হয়েছেন আইআইটি থেকে। তারপর চাকরি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন বিদেশে। প্রতিষ্ঠিতও হয়েছিলেন সেখানে। কিন্তু কিছুতেই মন বসছিল না ভিনদেশে। তাই ফিরে আসেন দেশে। কিন্তু এখানে ফিরে নতুন কোনও চাকরিতে আর যোগ দেননি। বরং স্বাধীনভাবে শুরু করেন এক ব্যবসা। তাও আবার গোরুর দুধের। আর সেই ব্যবসার জোরেই বর্তমানে তিনি কোটিপতি।
আরও শুনুন: বিমানবন্দরে প্রকাশ্যেই খুলতে হল পোশাক, কর্মীর নির্দেশে অস্বস্তিতে দুই মহিলা
কথা বলছি হায়দরাবাদের কিশোর ইন্দুকুরি সম্পর্কে। মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হওয়া এই যুবক যথেষ্ট মেধাবী ছিলেন। কেমিস্ট্রি নিয়ে স্নাতক হন আইআইটি থেকে। তারপর চাকরি নিয়ে একেবারে মার্কিন মুলুক। সে দেশের বেশ নামকরা এক প্রতিষ্ঠানেই চাকরি করতেন তিনি। যথেষ্ট সচ্ছল ভাবে দিন কাটাতেন। গাড়ি বাড়িও ছিল। কিন্তু সেই চাকরিতে কিছুতেই মন বসত না তাঁর। ঠিক করেন দেশে ফিরে আসবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। কিন্তু দেশে ফিরেও তিনি আর নতুন কোনও চাকরিতে যোগ দেননি। বরং স্বাধীন ভাবে ব্যবসা শুরু করেন। প্রথম এক বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায় পসার জমানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই বিশেষ লাভ করতে পারেননি। উলটে প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেন। অবশেষে ঠিক করেন দুধের ব্যবসা করবেন। সেইমতো কিছু গরু কিনে শুরু করেন ব্যবসা। প্রথমদিকে দুধ বিক্রি থেকে আরম্ভ করে যাবতীয় সব কাজ তিনি নিজেই করতেন। এদিকে দুধের গুণমানে কোনও খামতি রাখতেন না তিনি। সেই কারণেই আস্তে আস্তে বিক্রি বাড়ে। ধীরে ধীরে গোটা হায়দরাবাদেই দুধ বিক্রি শুরু করেন তিনি। এবং অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
আরও শুনুন: নিয়োগে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি, ফাঁস হয় রাজনৈতিক নেতাদের নামও… কী ঘটেছিল তারপর?
বর্তমানে এই দুধ বিক্রি করেই তাঁর দৈনিক রোজগার হয় ১৭ লক্ষ টাকা। বার্ষিক আয় ৬৫ কোটিরও বেশি। প্রায় ১০০টি গোরু রয়েছে তাঁর খামারে। এমনকি ১২০ জন কর্মী কাজও করেন তাঁর সংস্থায়। একইসঙ্গে তাঁর এই সাফল্যের কাহিনি অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। নিশ্চিন্ত জীবন ছেড়ে বেরিয়ে এসে নিজের ইচ্ছেমতোই জীবন কাটাচ্ছেন এই ব্যক্তি। যাঁরা নিজেদের স্বপ্নের জন্য ঝুঁকি নিতে পিছপা হন না, নিজের জীবন দিয়েই তাঁদের প্রেরণা জোগাচ্ছেন কিশোর ইন্দুকুরি।