‘কী রে তুই কোথায়? তখন থেকে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি!’
মোবাইলে যাঁকে প্রশ্নটি করা হয়েছে, তিনি তখনও স্নান করতে যাননি। সবে গামছা পরে বাথরুমে ঢুকবেন। তিনি কী করলেন? তিনি ফোনটা নিয়ে দৌড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন। এক ছুটে একেবারে গেটের বাইরে। রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। সেই বিষম আওয়াজের মধ্যে উত্তর দিলেন, ‘কোথায় আবার, রাস্তায়! এত জ্যাম! কী করব? ওয়েট কর, কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছচ্ছি।
প্রশ্নকর্তা ফোন কেটে দেন। আর উত্তরদাতা নিশ্চিন্তে বাড়ির ভিতর ঢুকে স্নান সারেন। তারপর সেই নির্ধারিত গন্তব্যস্থলে অনেক দেরিতে পৌঁছে দীর্ঘশ্বাস আর বিরক্তি নিয়ে বলেন, ‘কলকাতায় আর থাকা যাবে না। ট্রাফিক বলে কিস্যু নেই। কখন বেরিয়েছি আর কখন পৌঁছলাম। এদেশের কিস্যু হবে না!’
বউকে লুকিয়ে কেউ বান্ধবীর সঙ্গে ডিনার করতে গিয়েছেন। বউ যদি একজন ছোটখাটো গোয়েন্দা হন, তাহলে তো সতর্ক থাকতেই হবে। কারণ মাঝেমধ্যেই সন্ধের দিকে কল করবেন বেটার হাফ। রেস্তোরাঁয় হালকা যন্ত্রসংগীতের মূর্ছনা বাজতে থাকে। অতএব, টেবিলে বসে ফোন ধরা যাবে না। সেক্ষেত্রে টুক করে উঠে গিয়ে ওয়াশরুমে পৌঁছে ফোনটা ধরতে হবে। অথবা বান্ধবীকে ‘অফিস বসের ফোন’ বলে রেস্তোরাঁর বাইরে এসে কথা বলে নিতে হবে।
‘প্রচণ্ড কাজের চাপ। এই একটু চা খেতে বেরিয়েছি। আরও দুটো মিটিং আছে। তোমাকে পরে কল করছি।’ বলে ফোন রেখে দিতে হবে। তবে হ্যাঁ, যাঁরা দুটো টক ঢেকুর উঠলেও বউকে ফোন করে জানান, বা জানাতে বাধ্য হন, তাঁদের এসব ঝামেলায় না যাওয়াই ভাল। আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি থেকে ধরা পড়ে যেতে পারেন।
ধরুন অফিসে আপনার একটা ছুটি দরকার। অনেক দিন আগে থেকেই ঠিক করা আছে আপনাকে ছুটি নিতেই হবে। আগে থেকে দরখাস্ত করলে অফিসে বসের দাঁতখিঁচুনি খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ঠিক করলেন, হঠাৎ ছুটি নিতে হবে। কী করবেন?
শুনুন…
লেখা: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
পাঠ: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস