আমার কী হবে? আমার যে কী হবে?
এ এক অনন্ত জিজ্ঞাসা। আগামীতে কী ঘটতে চলেছে? ‘আমার একটা জবরদস্ত মাখোমাখো প্রেম হবে কি?’ ‘হবে কি একটা জম্পেশ চাকরি?’ ‘বাবা–মায়ের শরীর ভাল যাবে তো?’ ‘স্কুটার কেনাটা কি ঠিক হবে? দেখুন না, অ্যাক্সিডেন্টের যোগ–টোগ নেই তো?’ দৌড়লাম জ্যোতিষীর কাছে।
কেমন হবে ভবিষ্যৎ? নানা প্রশ্ন। নানা কৌতূহল। দেখেছি, বিয়েবাড়ি বা যেকোনও উৎসবে, আত্মীয়রা যেখানে একত্রিত হন, সেখানে ঘুনাক্ষরেও যদি জানা যায় কেউ হাত দেখতে পারেন, মুহূর্তে সব্বাই তাঁকে ছিনেজোঁকের মতো ঘিরে ধরেন! ‘দ্যাখ্ তো ভাই আমার হাতটা!’ ‘দ্যাখো তো আমার বিয়ে কবে হবে?’ বা ‘আমার এই কারেন্ট অ্যাফেয়ারটা টিকবে কি?’ এরকম সব হাজারো প্রশ্ন।
সত্যি কথা বলতে কি, যাঁরা একটু কথাবার্তায় পটু, তাঁরা দুষ্টুমি করার জন্যই ‘হাত দেখতে পারি’ এমন একটা ভাব করে বিয়েবাড়িতে সুন্দরীদের হাত ধরে খানিক সময় কাটিয়ে দেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলে যান একনাগাড়ে। বিয়েবাড়ির সুন্দরীরা গোগ্রাসে গেলেন ভবিষ্যদ্বাণীর নামে উচ্চারিত সেইসব প্রকাণ্ড ঢপের চপ!
এর থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার। সব পেশাতেই ভাল–মন্দ আছে। যেমন ধরুন, ভাল ডাক্তার–হাতুড়ে ডাক্তার, পারফেকশনিস্ট মিস্ত্রী–ল্যাদখোর মিস্ত্রী; তেমনই নিষ্ঠাবান জ্যোতিষীর পাশাপাশি আছে ভণ্ড এবং বাক্সর্বস্ব জ্যোতিষীরাও। আছেন ‘ক্ষণজন্মা’ অমুক বাবা–তমুক বাবাও, যাঁরা মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে কামিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
কী করে পেট চালাচ্ছেন তাঁরা? কেমন করেই বা জ্যোতিষচর্চার বিন্দুমাত্র না–জেনেও দুঁদে জ্যোতিষী হয়ে ওঠা যায়? আজ দেব সেই সংক্রান্তই কিছু দুর্মূল্য টিপ্স!
টিপ নং ওয়ান। কেউ যখন আপনার দিকে হাতটা বাড়িয়ে দেবেন, তখন প্রথমেই তা ধরে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলবেন। তারপর বলবেন, ‘কেউ আপনাকে বোঝে না!’ যিনি হাত বাড়িয়ে ছিলেন, খেয়াল করবেন তাঁর মুখটা কেমন যন পানসে হয়ে এসেছে। আসলে দিনান্তে আমরা সব্বাই একা। একান্নবর্তীতে পরিবারে থেকেও কেউ পারিবারিক অশান্তিতে কোণঠাসা। কারও ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা, কারে বউ বা বরের সঙ্গে বনিবনা নেই, কারও সঙ্গে আবার তাঁর ছেলেমেয়ের দিবারাত্র তর্কাতর্কি লেগেই রয়েছে। তাই মানুষটা অচিরেই বলে উঠবেন, ‘ঠিক বলেছেন। এক্কেবারে ঠিক! আমাকে কেউ বোঝে না।’
তারপর? শুনুন…
লেখা: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
পাঠ: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস