একমাসের ইলেকট্রিক বিল মাত্র ১২ টাকা। তাও আবার ভরা গরমকালে। এমন নয় যে বাড়িতে কেউ থাকেন না। ১২ জনের সংসার। প্রয়োজনের যাবতীয় বৈদ্যুতিন যন্ত্র সবই চলে। অথচ ইলেকট্রিক বিল নিয়ে ঝক্কি নেই। কীভাবে সম্ভব? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ইলেকট্রিক বিল নিয়ে অনেকেই আতঙ্কে থাকেন। বিশেষ করে গরমকালে। ফ্যান, এসির দাপটে গুনতে হয় মোটা টাকার ইলেকট্রিক বিল। বাড়ির সদস্য সংখ্যা বেশি হলে তো কথাই নেই! বিলের অঙ্ক বেশি আসতে বাধ্য। অথচ ১২ জন সদস্য নিয়েও এই বাড়ির ইলেকট্রিক বিল মাত্র ১২ টাকা!
আরও শুনুন: ‘অরিজিৎ সিং কে?’ প্রশ্ন ভিনদেশে, ‘আমেরিকার বাইরে পৃথিবী নেই?’ পালটা প্রশ্ন নেটদুনিয়ায়
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। ঘটনা হরিয়ানার। সেখনকার বাসিন্দা সন্দীপ সম্প্রতি এমনই ঘটনার কথা নেটদুনিয়ায় জানিয়েছেন। অবশ্য কেন এমনটা হয়েছে সেই কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। এমনিতে ইলেকট্রিক বিল ঠিক হয় কতটা বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে সেই হিসাবে। যে সংস্থা বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে তার নিজস্ব রেট থাকে। সেইমতো হিসাব করা হয় টাকার অঙ্ক। কখনও অতিরিক্ত চার্জও যোগ করে সংস্থা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হয় টাকা। অন্যথায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে। তাই কোনও মাসে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেই গুনতে হয় মোটা টাকা। গরমকাল এক্ষেত্রে সবথেকে অসুবিধার। ফ্যান, এসি না চালিয়ে থাকার উপায় নেই। এদিকে এইসব যন্ত্র ব্যবহার করলেই বিদ্যুতের বিল চড়চড়িয়ে বাড়বে। এতদিন এই সমস্যায় একইভাবে ভুগতেন হরিয়ানার সন্দীপও। গরমের সময় প্রতিমাসে ৫০-৬০ হাজার টাকা বিল গুনতে হত। তবে এবার তিনি নতুন এক ফন্দী আঁটেন। আর তাতেই রাতারাতি কমে যায় ইলেকট্রিক বিলের বোঝা।
:আরও শুনুন:
শহর জুড়ে বাড়িঘর, অথচ চিহ্ন নেই মানুষের! কী রহস্য এই মৃত নগরীর নেপথ্যে?
ঠিক কী করেছেন তিনি?
প্রথমেই সন্দীপ হিসাব করে দেখেন প্রতিমাসে কতটা বিদ্যুৎ তার বাড়িতে প্রয়োজন হচ্ছে। দেখা যায় সেই অঙ্কটা ২৫-৩০ কিলোওয়টের মধ্যে। গরমকালে এসি বা ফ্যানের জন্য চাহিদা বেশি থাকছে। শীতকালে কম। সেইমতো সন্দীপ বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল বসাতে শুরু করেন। বিদ্যুতের বিল কমানোর অন্যতম প্রধান উপায় যে সৌরশক্তি সেকথা ভালমতো জানতেন সন্দীপ। তবে এই ব্যবস্থা রীতিমতো ব্য্যবহুল। তাই ধীরে ধীরে প্যানেল বসাতে শুরু করেন তিনি। প্রথমে ১০ ওয়াট। পরে আরও কিছু প্যানেল বসিয়ে গোটা বাড়ির চাহিদাই সৌরবিদ্যুতে মিটিয়ে নেন হরিয়ানার বাসিন্দা। যেহেতু বাড়িতে বড় ছাদ ছিল তাই প্যানেল বসাতে অসুবিধা হয়নি। স্রেফ খরচ হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা। সন্দীপের দাবি, প্রতি কিলোওয়াট সোলার প্যানেলের জন্য ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রথম ১০ কিলোওয়াটের জন্য টাকার অঙ্কটা এটাই ছিল। পরে তা খানিক কমেছে। রাতারাতি সবটা সম্ভবও হয়নি। প্রায় ৪ বছর সময় লেগেছে গোটা বাড়ির বিদ্যুৎ সৌরশক্তিতে রূপান্তর করতে। অবশেষে হাসি ফুটেছে সন্দীপের মুখে। বিদ্যুতের বিল এসেছে মাত্র ১২ টাকা। তাই ধীরে ধীরে হলেও সকলকে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাতে পরিবেশেরও ভালো হবে, আবার পকেটের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।