হিকিস বেঙ্গল গেজেট। আদর করে কেউ কেউ তাকে বলতেন, হিকি সাহেবের গেজেট। এটিই এশিয়ার প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র, যার জন্মস্থান এই কলকাতা। সৌজন্যে ছিলেন, জেমস অগস্টাস হিকি বা হিকি সাহেব। আসুন, শুনে নিই এ-দেশের সংবাদপত্রের দুনিয়ায় সেই প্রথম আলোর কথা।
ভারতীয় সংবাদপত্রের জনক হিসেবে যাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তিনি কোনও ভারতীয় নন। এক আইরিশ ভদ্রলোক। নাম জেমস অগস্টাস হিকি।
আরও শুনুন: ফেলুদার প্রতি ‘দুর্বলতা’ নেই, জানিয়ে কিশোরী ভক্তের ‘তিরস্কার’ জুটেছিল সৌমিত্রর
হিকি সাহেবকে কেউ কেউ বলে থাকেন খামখেয়ালি। জীবনে ঝড়-ঝাপটা কম যায়নি তাঁর। আসলে বলতে হয় দূরদর্শী মানুষটাকে তাঁর নিজের সময় হয়তো সেভাবে চিনতেই পারেনি। ভাগ্যের ফেরেই এই ভারতে পা রেখেছিলেন হিকি সাহেব। গোড়ার দিকে যে ব্যবসায় হাত দিয়েছিলেন, তার ভরাডুবি হয়েছে অচিরেই। হিকি সাহেব চাইছিলেন এমন কিছু একটা করতে, যা প্রথাগত ধ্যানধারণার বাইরে। একরকম ছকভাঙা চিন্তা থেকেই সংবাদপত্র প্রকাশের কথা ভাবেন তিনি। অবশ্য শুধু ভাবনা বা স্বপ্ন দেখেই ক্ষান্ত হননি। তাঁর আগেও সংবাদপত্র প্রকাশের কথা ভেবেছিলেন সাহেবদের কেউ কেউ। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। হিকি সাহেব নিজের স্বপ্নকে রূপ দিতে পেরেছিলেন তাঁর অদম্য জেদ আর অধ্যাবসায়ের জেরেই। আর এর ফলশ্রুতিতেই জন্ম নিল ‘হিকিস বেঙ্গল গেজেট’। এশিয়া উপমহাদেশে যেটিকে প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র হিসেবে গণ্য করা হয়।
আরও শুনুন: সাহেব-বিবি-গোলাম টানা ঔপনিবেশিকতা নেই, একেবারে স্বতন্ত্র বাংলার দশাবতার তাস
১৭৮০ সালের ২৯ জানুয়ারি প্রথম প্রকাশিত হয় হিকি সাহেবের গ্যাজেট। দু-পাতার ছিমছাম সংবাদপত্রটি আকারে ছিল ১২ ইঞ্চি বাই ৮ ইঞ্চির। সপ্তাহে একবার করেই প্রকাশত হত এই গ্যাজেট। সম্পাদক হিকি সাহেব, খবরের পাশাপাশি রেখেছিলেন বিজ্ঞাপন, বেশ কিছু বরণীয় মানুষের স্মরণীয় উদ্ধৃতি। ছিল কবিতার জন্য আলাদা জায়গাও। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সংবাদপত্রের এই ধারণা বা রূপ তখন ভারতভূমে একেবারে নতুন। ফলত একটু সময় নিলেও উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে হিকি সাহেবের গেজেটের জনপ্রিয়তা।
শুনে নিন বাকি অংশ।