বিয়ের মরশুম মানেই কিছুদিন আগে হাতে চলে আসা বাহারি কার্ড। তার মধ্যে আবার কত না সৃষ্টিশীলতার ছোঁয়া। কার্ডের ডিজাইন, বয়ান, ক্যালিগ্রাফি – সাধারণ এই জিনিসটার ভিতরেও বৈচিত্র কিন্তু কম নয়। আজকাল তো ডিজিটাল কার্ডেরও চল হয়েছে। অনেক রদবদলের পরই আজ হাতে আসে এমন কার্ড। তাই, এই বিয়ের মরশুমে চট করে একবার শুনে নেওয়া যাক নিমন্ত্রণপত্রের জন্মকাহিনি।
বিয়ে মানে যদি হয় দুজন মানুষের যাত্রা শুরু, বিয়েবাড়ি মানে কিন্তু আরও অনেক কিছুই। দুই পরিবারের সদস্যদের যৌথ আসর, মস্ত হইচই, ঝকমকে আলো, খাওয়া-দাওয়া, সাজ পোশাক সব মিলিয়ে বেশ জাঁকজমকপূর্ণ একটা ঘটনা। এই ঘটনার সাক্ষী হতে গেলে সবার আগে যে চাবিকাঠিটি দরকার, তা হল একখানা নিমন্ত্রণপত্র। থ্রি ইডিয়টসের কথা বাদ দিন, সবাই তো আর বিনা নেমন্তন্নে বিয়েবাড়ি যেতে পারবেন না। অতএব ওটা মাস্ট।
আরও শুনুন: সাপেরও নাকি ছিল চারখানা পা! জীবাশ্ম দেখে তাজ্জব গবেষকরা
আজকাল তো হোয়াটসঅ্যাপেও নিমন্ত্রণপত্র পাঠানোর চল হয়েছে। তবে এখনও কিন্তু কার্ড মারফত নেমন্ত্রণ একেবারে উঠে যায়নি। বরং কার্ডের ভিতর নানা বৈচিত্র এসে বিষয়টিকে আরও রঙিন করেছে। একঘেয়ে বয়ান, একরকমের ডিজাইন সরিয়ে রেখে হবু দম্পতিরা নিত্যনতুন আইডিয়ার দিকে ঝুঁকছেন, যা বিয়ের কার্ডকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে।
আরও শুনুন: বিটকয়েনের ধাঁচেই কি এবার দেশে আসতে চলেছে সরকারি ডিজিটাল কারেন্সি?
এখন যদি একটু পিছু ফিরে তাকানো যায় তো দেখা যাবে, এককালে বিয়ের নিমন্ত্রণে এই কার্ড বলে বস্তুটির অস্তিত্বই ছিল না। সেটাই স্বাভাবিক। কেননা লেখাপড়ার চল তখন এতটাও ছিল না যে, ঘরে ঘরে কার্ড যাবে আর লোকে পড়ে সব বুঝতে পারবে। তাহলে? ভরসা সেই চিরন্তন মুখে নেমন্তন্ন করার পদ্ধতি। শ-পাঁচেক বছর আগের কথা। তখন একজন ঘোষক মহল্লায় জানিয়ে দিতেন বিয়ের খবর। যিনি তা শুনতে পেলেন, তিনিই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত। একেবারে গোড়ায় এভাবেই চলত নিমন্ত্রণ। বহুদিন পর্যন্ত এই রীতি চালু ছিল। পরে তার রূপ বদলায়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুখে বলে নেমন্তন্ন করে আসার প্রথার ভিতরও সেই পুরনো নিমন্ত্রণের আদলের ছায়া খানিকটা থেকে গিয়েছে। এমনকী যখন নিমন্ত্রণপত্র চলে এল, তখনও কিন্তু তা হাতে নিয়ে পৌঁছেই দিয়ে আসা হত। সেই সঙ্গে মুখে বলেও দেওয়া হত। অর্থাৎ মুখে বলে নিমন্ত্রণ করাটাই যেন স্বাভাবিক রীতি। তাই পত্রদ্বারা নিমন্ত্রণের ত্রুটিতে মার্জনা চেয়ে নেওয়া হত। নিমন্ত্রণের সূত্রে পারস্পরিক সংযোগ রক্ষার যে বিষয়টি ওতপ্রোত, তা এখান থেকে অনেকটাই স্পষ্ট হয়।
বাকি অংশ শুনে নিন।