পরিবারের কারও মৃত্যুর পর তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যেই শ্রাদ্ধবাসরের আয়োজন। তা যে গাড়ি ১২ বছর ধরে পরিবারে রয়ে গিয়েছে, সেও কি পরিবারের শরিক নয়? সে কথা ভেবেই প্রিয় গাড়িটির শ্রাদ্ধ করল গুজরাটের এক পরিবার।
একদিকে গাড়ি, আরেকদিকে মানুষ। যন্ত্রের কি কোনও স্বর থাকে, নাকি মানুষের কথা তার পক্ষে বোঝা সম্ভব? বিমল কিন্তু দাবি করত, জগদ্দল তার সব কথা বুঝতে পারে। সেও যেমন করে বোঝে জগদ্দলের ব্যথা। পুরনো ঝরঝরে জগদ্দল যে আর সওয়ারি নিতে পারে না, আর পথে চলার সাধ্য নেই তার, সে কথা বুঝতে পারত বিমল। তবুও প্রিয় বাহনটিকে বিদায় করে দেওয়ার কথায় তার মন সায় দিত না কিছুতেই। ‘অযান্ত্রিক’-এর সে কাহিনিই যেন দেখা গেল এবার। দেখা গেল, প্রিয় গাড়িটিকে শেষ বিদায় জানাতে তার শ্রাদ্ধের আয়োজন করেছে এক পরিবার। তাকে পরিবারের একজন মনে করেই এই আয়োজন পরিবারের।
পরিবারের কারও মৃত্যুর পর তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যেই শ্রাদ্ধবাসরের আয়োজন। তা যে গাড়ি ১২ বছর ধরে পরিবারে রয়ে গিয়েছে, সেও কি পরিবারের শরিক নয়? এই পরিবার অন্তত তেমনটাই মনে করেছে। জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতের আমরেলি জেলায়। সেখানকার ব্যবসায়ী সঞ্জয় পোলারা মনে করেন তাঁর সৌভাগ্যের চাবিকাঠি তাঁর ওই ১২ বছরের পুরনো গাড়িটিই। তিনি মনে করেন, তাঁর অর্থ যশ খ্যাতি সবই ওই পয়া গাড়ির জন্য। এদিকে অযান্ত্রিকের জগদ্দলের মতোই, এই গাড়িরও জীবৎকাল ফুরিয়েছে। তা আর কাজ চালানোর অবস্থাতেও নেই। এই অবস্থায় পুরনো গাড়ি বিক্রিই করে দেন কেউ। এই পরিবার সে পথে হাঁটেনি। বদলে গাড়িটিকে ফুল-মালা দিয়ে ঢেলে সাজিয়ে মাটি থেকে ১৫ ফুট নিচে চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। শ্রাদ্ধে হাজির ছিলেন পুরোহিতরা। তা ছাড়া এই অনুষ্ঠানে শামিল হওয়ার জন্য বহু লোককে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল পরিবারটি। তাদের আপ্যায়নের জন্য খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও ছিল। জানা যাচ্ছে, অন্তত দেড় হাজার লোক অংশ নিয়েছেন গাড়ির শ্রাদ্ধে। আর সমস্ত অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চার লক্ষ টাকা খরচ করেছে গুজরাটের ওই পরিবার। সোশাল মিডিয়ার সূত্রে সম্প্রতি সামনে এসেছে এই ঘটনার ভিডিও। আর তা দেখে তাজ্জব নেটিজেনরাও।