প্রায় সাত বছর ধরে বন্দি রাখা হয়েছিল একটি বাক্সের ভিতর। আলো-বাতাসহীন অন্ধকার কূপেই এই দীর্ঘ সময় কাটয়েছিলেন এক তরুণী। কীভাবে এমন পরিণতি হল তাঁর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
প্রাচীনকালে বাক্সবন্দী করে মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতেন মিশরীয়রা। দেহটিকে অবিকৃত রাখতে ওষুধ মাখানো কাপড়ে জড়িয়ে ভরে রাখা হত বাক্সে। এমন সংরক্ষিত মৃতদেহ বা মমি কিন্তু আজও রীতিমতো দর্শনীয় বস্তু। তাই বলে জীবিত মানুষকে বছরের পর বছর বাক্সে বন্দি করে রাখার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। অবিশ্বাস্য হলেও এমনই নৃশংস অত্যাচার করা হয়েছিল মার্কিন এক তরুণীর উপরে । যা শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে আজও।
আরও শুনুন: সুন্দর ছবি দেখলেও হতে পারে অসুস্থতা! জানেন এই রোগের নাম?
মাত্র কুড়ি বছর বয়সেই অপহরণকারীর পাল্লায় পড়েন কোলেন স্ট্যান নামে ওই মহিলা। প্রায় সাত বছর তাঁর কেটেছে ওই দুষ্কৃতীর ডেরাতেই। সে ছিল এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। দিনের বেশিরভাগ সময়টাই তাঁকে কাটাতে হত একটি কাঠের বাক্সের মধ্যে। সেখানে না ঢোকে আলো, না পৌঁছয় বাতাস। তবু সেভাবেই বছরের পর বছর থাকতে হয়েছে তাঁকে। এত দীর্ঘ সময় ধরে কাউকে অপহরণ করে রাখার ঘটনা বোধহয় অপরাধের ইতিহাসেও বেশ বিরল। খুবই অদ্ভুত ভাবে অপহরণ করা হয়েছিল তরুণীকে। রাস্তায় একটি গাড়িতে লিফট চেয়েছিলেন কোলেন। তাঁকে দেখে থেমেও যায় গাড়িটি। তবে গাড়িটিতে ওঠার পরেই কোলেনকে নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতী। এরপর নিজের বাড়িতেই কোলেনকে বাক্সবন্দি করে রাখে ওই অপহরণকারী। দীর্ঘ সাত বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার চালানো হয় কোলেন-এর উপর। তাঁকে কার্যত যৌনদাসীতে পরিণত করা হয়েছিল। অবশেষে একদিন সেই কারাগার থেকে পালাতে সক্ষম হন কোলেন। কিন্তু এত কিছুর পরেও নিজের অপহরণকারী সম্পর্কে কোনও অভিযোগই করেননি তিনি। বরং উল্টে বাড়ির লোকের কাছে তাকে নিজের স্বামী হিসেবেই পরিচয় দিয়েছিলেন তরুণী।
আরও শুনুন: ৬০০ বছর আগেই হয়েছে মৃত্যু, তবু অবিকল জীবন্তের মতোই দেখতে এই গাছগুলিকে
ঘটনাটি নিয়ে বিস্তর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল সে সময়ে। মুক্তি পাওয়ার পরেও কেন কোনও অভিযোগ করলেন না তরুণী, তা নিয়েও হইচই পড়ে গিয়েছিল। অনেকেই মনে করতেন, সেই অপহরণকারী এমন ভাবে কোলেনের মগজধোলাই করেছিল, যার জেরে অভিযোগ করার কথা ভাবতেও ভয় পেয়েছিলেন কোলেন। পরবর্তী কালে এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল বেশ কিছু তথ্যচিত্রও। তবে সেই সিনেমা দেখে অনেকেই বিশ্বাস করতে চাননি, এ ছবি আদতে গল্প হলেও সত্যি।