কথায় বলে, বুদ্ধিই হল প্রকৃত বল। অর্থাৎ মগজাস্ত্রের জোর সবসময় শারীরিক ক্ষমতার থেকে বেশি। বুদ্ধির জোরে পশুরাজ সিংহকে কীভাবে বোকা বানিয়েছিল খুদে খরগোশ, সে গল্প তো আমরা সবাই জানি। বাস্তবেও এরকম বুদ্ধিমান – যাঁদের আমরা বলি জিনিয়াস – তাঁদের সংখ্যা কিন্তু কম নয়! নিজেদের বুদ্ধির জোরে যাঁরা তাক লাগিয়েছেন সারা বিশ্বকে, আসুন তাঁদের কথা শুনে নেওয়া যাক।
বিশ্বের তাবড় জিনিয়াসদের নিয়ে এই গল্প শুরু করব যাকে দিয়ে, তার বয়স মাত্র ১২। এইটুকু বয়সেই বুদ্ধির জোরে বিশ্বকে তাক লাগিয়েছে সে। নাম, কৌটিল্য পণ্ডিত। যদিও এখন ‘গুগল বয়’ নামেই সে বেশি পরিচিত। একেবারেই গুগলের মতোই যে কোনও প্রশ্নের উত্তর সে দিতে পারে কয়েক সেকেন্ডেই। এইটুকু বয়সেই তার আইকিউ ১৩০। একটা কথা বলতেই হয়, ভেবে চিন্তেই নাম রেখেছিলেন তার মা-বাবা। সে যেন সত্যিই ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা পণ্ডিত কৌটিল্যের যোগ্য উত্তরসুরি।
জিনিয়াসদের তালিকায় পরের জন হলেন, তথাগত অবতার তুলসি। মাত্র ৯ বছর বয়সেই তাঁর ঝুলিতে ছিল হাই স্কুল পাসের ডিগ্রি। যেখানে সাধারণ ভাবে মাধ্যমিক পাস করতেই লেগে যায় ১৫ বা ১৬ বছর, সেখানে মাত্র ৯ বছর বয়সেই বাজিমাত করেছিলেন তিনি। সত্যিই বিস্ময় বালক ছিলেন তথাগত। শুধু তাই নয়, মাত্র একবছরের মধ্যে শেষ করেছিলেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সও। তারপর পিএইচডি-ও করেছেন খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই। দেশ-বিদেশে খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে তাঁর কথা। মাত্র ২২ বছর বয়সে আইআইটি-র মতো বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন সহকারী অধ্যাপক হিসেবে। নিঃসন্দেহে তিনি একজন জিনিয়াস।
আরও শুনুন: মাত্র ১ পয়সার জন বেঁচে গেল ১০ হাজার টাকা, বানচাল ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ছক
এবার শোনা যাক কাশ্মিয়া ওয়াহির কথা। তাঁর আইকিউ লেভেল নাকি আইনস্টাইন কিংবা স্টিফেন হকিং-এর থেকেও বেশি। মুম্বইয়ের এই বালিকার বর্তমান ঠিকানা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একদিন এমনিই আইকিউ টেস্টে অংশ নেওয়া আর তাতে স্কোর এসেছিল ১৬২। যেখানে আইনস্টাইনের মতো বিজ্ঞানীর স্কোর ১৬০। শুধু ভারতেই নয় সারা বিশ্বের সেরার সেরা বুদ্ধিমানের তালিকায় খুব সহজেই ঠাঁই হয় কাশ্মিয়ার।
এরপর যাঁর কথা বলব, তাঁর স্বপ্ন জুড়ে রয়েছে মহাকাশের অপার বিস্ময়। তামিলনাড়ুর ছোট্ট গ্রামে বসেই রিফাথ শারুক বানিয়ে ফেলেছেন পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম স্যাটেলাইট। মাত্র ৬৪ গ্রাম ওজনের এই যন্ত্রটি দেখে অবাক হয়েছেন খোদ নাসার কর্তারাও। নাসা আয়োজিত একটি প্রতিযোগিতায় এটিই ছিল তাঁর অ্যাচিভমেন্ট। এমনকি রাফাথের বানানো এই স্যাটেলাইট মাত্র ১২ মিনিটের মধ্যেই মহাকাশে নিজের কাজ স্বাভাবিক ভাবে শেষও করেছিল।
এবার যাঁর কথা বলব, তিনি তুখোড় স্মৃতিশক্তির অধিকারী। নাম স্টিফেন উইল্টশিয়ার, মাত্র একবার কিছু দেখলেই যিনি হুবহু এঁকে ফেলতে পারেন সেই জিনিসটি। ব্রিটেনের এই শিল্পী সারা বিশ্বের কাছে এভাবেই সমাদৃত তাঁর অসাধারণ শৈল্পিক প্রতিভার জন্য।
আরও শুনুন: লটারি যেন গৌরী সেন! একই দোকান থেকে টিকিট কেটে দু’বার কোটিপতি মহিলা
আরেক বিস্ময়ের নাম ফেলিক্স যেমডেগস। তাঁর বিশেষত্ব রুবিক্স কিউব সলভ করার ক্ষেত্রে। মাত্র ৪ সেকেন্ডে রুবিক্স কিউব সলভ করে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নামও তুলে ফেলেছেন। রং মেলানোর এই ধাঁধার সমাধানে ঘণ্টার পর পেরিয়ে যায় সাধারণ মানুষের, সেখানে এত অল্প সময়ে তা শেষ করার ঘটনা অবাক করেছে বিশ্বকে। দুবার এই খেলায় বিশ্বসেরাও হয়েছেন তিনি।
আর এক বিস্ময়-বালক জীবনের প্রথম লেকচার দিয়েছিলেন মাত্র ৬ বছর বয়সে। ৯ বছরের গন্ডি টপকানোর পরই মুখস্থ ছিল পিরিয়ডিক টেবিল-সহ জটিল অঙ্কের ফর্মুলা। আইনান ক্লিসেট নামে এই বিস্ময় বালকের আই কিউ নাকি ২৬৩!
এ তালিকা দীর্ঘ। কেউ বুদ্ধিতে কেউ প্রবল মেধায় তাক লাগিয়েছেন গোটা বিশ্বকে। এত যাদের বুদ্ধি তাঁরাও আমাদেরই মতো সাধারণ জীবন যাপন করেন। অথচ তাঁরা অমিত ক্ষমতার অধিকারী। সাধে কি আর বলে বুদ্ধিই সত্যিকারের বল। সেই বলেই বলীয়ান এঁরা সকলেই।