বৃষ্টি হোক বা রোদ, কাজ থেকে রেহাই নেই তাঁদের। সারা শহর ঘুরে ঘুরে তাঁরা মানুষের হাতে তুলে দিয়ে আসেন সুস্বাদু সব খাবারদাবার। এক ক্লিকেই আমাদের রসনা মেটে। তার পিছনে অজস্র ডেলিভারি বয়দের অমানুষিক পরিশ্রমের গল্পগুলো অজানাই থেকে যায়। মুম্বইয়ের এই ডেলিভারি বয়ের কথাই ধরুন নাহয়। প্রবল বৃষ্টিতে, জল জমা রাস্তায় যেখানে অচল হয়ে পড়েছে বাইক কিংবা সাইকেলের মতো যান। সেখানে আশ্চর্য বিকল্প খুঁজে নিয়েছেন এই যুবক। খাবার পৌঁছে দিতে দেরি হয়নি তাঁর একটুও। কীসে করে পৌঁছলেন তিনি গ্রাহকদের দরজায়। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
দিন কয়েক ধরেই ভারী বৃষ্টিতে নাজেহাল মুম্বই। বৃষ্টিতে ধসে গিয়েছে বহু বাড়ি। কালবাদেবী ও সিওন এলাকায় বাড়ি ভেঙে যাওয়ার খবর মিলেছে। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। গোটা সপ্তাহ জুড়েই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
আর এই লাগাতার বৃষ্টিতে কার্যত বিপর্যস্ত মায়ানগরী। ব্যাহত হয়েছে ইলেকট্রিক সরবরাহ। রাস্তাঘাট জলে জলময়। শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জল জমে আছে বলেও জানা যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি বাসকে অন্য রুটে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেরিতে চলছে ট্রেনও। এই পরিস্থিতিতে রাস্তায় বেরিয়ে নাজেহাল অবস্থা মুম্বইবাসীর।
আরও শুনুন: প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে অসুবিধায় পড়েছেন! বিকল্প হাতের সামনেই, কী কী সঙ্গে রাখবেন?
তবে এই ঝড়বাদলের মধ্যেই তুঙ্গে বিভিন্ন ফুড ডেলিভারি অ্যাপগুলির থেকে খাবার নেওয়ার হিরিক। তাতে সেই সব সংস্থাগুলি ফুলেফেঁপে উঠলেও নাজেহাল অবস্থা ডেলিভারি বয়দের। ঝড়বৃষ্টি মাথায় করেই বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।
মুম্বইয়ের এই ডেলিভারি বয়টিও বিরাম পাননি কাজ থেকে। তবে তিনি খাবার পৌঁছনোর জন্য সেদিন শরনাপন্ন হন অদ্ভুত এক যানের। না ঠিক যান বললে ভুল হবে। আদতে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে এই বাহনটির জনপ্রিয়তা কিন্তু কমেনি একচুলও। সাধারণ ভাবে সাইকেল বা বাইকে করেই বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিয়ে থাকেন তাঁরা। তবে এই ভয়াবহ বৃষ্টিতে বাইক চালানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছিল মুম্বইয়ের রাস্তায়। কিন্তু তাই বলে কি আর কাজ আটকে থাকে!
আরও শুনুন: ৬০ বছর ধরে তীর্থযাত্রীদের করিয়েছেন অমরনাথ দর্শন, এখনও মন্ত্রপাঠ করেন বৃদ্ধ গুলাম নবি
এই যুবক তাই নিজের কাজ সারলেন ঘোড়ায় চেপেই। আর তার জন্য একটি ধবধবে সাদা ঘোড়া তিনি ভাড়া করে ফেলেছিলেন রাতারাতি। আর তা নিয়েই তিনি বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে এলেন খাবার। সেই ঘোড়সওয়ারির ছবিই কারা যেন বন্দি করে ফেলেছিলেন ক্যামেরায়। আর সেই ছবিই ছড়াল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইতিমধ্যেই সেখানে দারুণ ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ভিডিওটি। নেটিজেনদের কেউ কেউ মজা করে বলেছেন, এ তো রীতিমতো ‘শাহি ডেলিভারি’। তবে যে যাই বলুন না কেন, নিজের কাজের প্রতি যে একাগ্রতা দেখিয়েছেন এই যুবক, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। বহু নেটনাগরিকই সে কথা উল্লেখ করতে ভোলেননি।