ইংল্যান্ডের সিংহাসনে যাঁর অভিষেক হয়, তাঁর মাথায় সেদিন যে মুকুটটি পরানো হয়, খেয়াল করে দেখেছেন? মুকুটের মাঝখানে জ্বলজ্বল করে একটি বড় লাল রত্ন। কিন্তু এই মণিটিকে দেখতে যতটা সুন্দর, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ততখানিই ভয়াবহ ইতিহাস। অনেকেরই ধারণা, আসলে অভিশাপ বয়ে নিয়ে চলেছে এই মণি। কেন রয়েছে এমন রটনা?
রাজ-অভিষেকের দিনটি ছাড়া টাওয়ার অফ লন্ডনে রাখা থাকে ব্রিটিশ রাজের বংশানুক্রমিক অলংকার। তার মধ্যেই সগৌরবে স্থান ইংল্যান্ডের রত্নখচিত রাজমুকুটের। আর সেই মুকুটেই অন্যান্য রত্নের মধ্যবর্তী এই বিশেষ রত্নটি, ঐতিহাসিকদের কাছে যার নাম ব্ল্যাক প্রিন্সের রুবি। অবশ্য নামে রুবি হলেও এটি আসলে স্পিনেল জাতীয় পাথর। সম্ভবত পৃথিবীর বৃহত্তম অখণ্ড লাল স্পিনেল এই রত্নটি। লম্বায় প্রায় ৫ সেন্টিমিটার, ওজন ১৭০ ক্যারেটের কাছাকাছি। সতেরো শতক নাগাদ ব্রিটিশ রাজপরিবারের হাতে আসার আগে একাধিকবার হাতবদল হয় ব্ল্যাক প্রিন্সের রুবি। আর সেখান থেকেই এর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে অভিশাপের গল্প।
আরও শুনুন: স্রেফ একটি কুকুরের কারণেই দুই দেশের মধ্যে হল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, জানেন এই ঘটনা?
কীরকম সে গল্প? ইতিহাসে প্রথম এই রত্নটির দেখা মেলে চোদ্দ শতকে। তখন কিংডম অফ গ্রানাডার প্রিন্স আবু সাইদের সম্পত্তি ছিল এই রুবি। স্পেনের তরফে ডন পেড্রো যখন গ্রানাদা জয় করে ফেললেন, তখন সন্ধি প্রস্তাব নিয়ে আবু সাইদ যান তাঁর কাছে। এদিকে পেড্রোর আদৌ সন্ধি করার কোনও ইচ্ছেই ছিল না। তিনি এই বৈঠকের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন কেবল এই দুর্মূল্য রত্নটি হাতিয়ে নেওয়ার লোভেই। অতএব, আবু সাইদ ও তাঁর অনুচরেরা খুন হয়ে গেলেন পেড্রোর দলবলের হাতে। মৃতদেহ থেকে রত্নটি চুরি করে নিলেন পেড্রো।
আরও শুনুন: দূর করতে হবে গুটিবসন্ত, টিকার বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছিলেন ভারতের ৩ রানি
এরপর থেকেই এর গায়ে সেঁটে যায় অভিশপ্ত তকমা। পেড্রোর কপালেও আর সুখ সইল না। কিছুদিনের মধ্যেই নিজের সৎভাইয়ের কাছে সিংহাসন হারিয়ে ফ্রান্সে পালিয়ে যেতে হল তাঁকে। সেখানে তখন ব্রিটিশ রাজপুত্র এডওয়ার্ড অফ উডস্টকের দরবার। তাঁর সাহায্যে যুদ্ধে ভাইকে হারিয়ে ফের সিংহাসন ফিরে পেলেন বটে পেড্রো, কিন্তু যুদ্ধের খরচ জোগাতে গিয়ে রাজকোশ প্রায় ফাঁকা। ফলে এডওয়ার্ডকে পুরস্কৃত করতে হল তাঁর সাধের রত্ন দিয়েই। যদিও এডওয়ার্ড ফিরে যাওয়ার পর আবার একের পর এক যুদ্ধে নিঃস্ব হয়ে অবশেষে প্রাণ হারান পেড্রো।
শুনে নিন বাকি অংশ।