ধনকুবের বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একগুচ্ছ নাম। এলন মাস্ক থেকে শুরু করে জেফ বেজোস কিংবা বিল গেটস। নিদেনপক্ষে আদানি বা আম্বানি, যাঁদের ছেলেমেয়ের বিয়েতে খাবার পরিবেশন করতে পর্যন্ত পিছপা হন না বড় বড় বলিউড তারকারা। এমনই মাহাত্ম্য তাঁদের। এঁদের কথা তো কমবেশি সকলেই জানেন, কিন্তু পৃথিবীর প্রথম কোটিপতি কে ছিলেন জানেন? আসুন, শুনে নিই তাঁর কথা।
ফোর্বসের তালিকা খুলে দেখতে বসলে প্রায়শই চোখ কপালে ওঠে। তা বিশ্বের শীর্ষে থাকা ধনকুবেরদের সম্পত্তির পরিমাণ যে তাক লাগানো হবে, তাতে আর নতুন কথা কী! এলন মাস্ক থেকে জেফ বেজোস, প্রতিদিনই খবর জুড়ে থাকে এঁদের নানা কীর্তির কথা। এইসব সম্পদশালীদের খবর তো আমাদের অনেকেরই জানা। কিন্তু জন ডেভিসন রকেফেলারের নাম শুনেছেন কী?
আরও শুনুন: বারবার জায়গা বদল করে জেলের দরজা, গোলকধাঁধা থেকে পালানোর উপায় ছিল না কোনও বন্দির
ভাবছেন তো তিনি আবার কে? বিশ্বের প্রথম কোটিপতি ছিলেন এই ব্যাক্তি। ১৯১৬ সালে কোটিপতির তকমা অর্জন করেছিলেন মার্কিন এই ব্যবসায়ী। রকেফেলারের জন্ম ১৮৩৯ সালে। পেশায় তিনি ছিলেন তেলের ব্যবসায়ী। আর সেই ব্যবসা থেকেই বিশাল সম্পদ অর্জন করেছিলেন তিনি। ১৮৭০ থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত তেলের বাজারের একচেটিয়া নাম ছিল স্ট্যান্ডার্ড অয়েল নামে একটি সংস্থার। ওই সংস্থাটিরই কো-ফাউন্ডার এবং চেয়ারম্যান ছিলেন রকেফেলার। আমেরিকার সর্বকালের সম্পদশালী ব্যক্তি হিসেবে কিন্তু নিজের জায়গা আজও ধরে রেখেছেন এই ব্যক্তি।
গোড়া থেকেই প্রচণ্ড পরিশ্রমী ছিলেন রকেফেলার। মাত্র ১৬ বছর বয়সে একজন হিসেব-রক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। সেখান থেকে ১৮৭০ সালে শুরু করলেন স্ট্যান্ডার্ড অয়েল নামে ওই সংস্থা। ক্রমশ তেল-ব্যবসায় একচেটিয়া হয়ে উঠল স্ট্যান্ডার্ড অয়েল। আর তার হাত ধরেই যশ, প্রতিপত্তি ও অর্থের মুখ দেখলেন রকেফেলার।
আরও শুনুন: উল-কাঁটায় ফুটিয়ে তোলা নকশায় লেখা থাকত সংকেত, দুর্ধর্ষ গুপ্তচরদের নজিরবিহীন কাজ
যশ, প্রতিপত্তির সঙ্গেই পায়ে পায়ে আসে বিতর্কও। ১৯১১ সালে তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে ফেডারাল অ্যান্টিট্রাস্ট আইন ভাঙার অভিযোগ আনল সুপ্রিম কোর্ট। সংস্থাটিকে ভেঙে ফেলারও নির্দেশ দেওয়া হল আদালতের তরফে। তা সত্ত্বেও টলানো যায়নি রকেফেলারকে। ১৯১৩ সালে তাঁর ব্যাক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৯০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। ১৯৩৭ সালে ১৪০ কোটির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল সেই অঙ্কটা। ফলে বুঝতেই পারছেন ঠিক কী পরিমাণ ধনী ছিলেন এই ব্যক্তি।
না, শুধু যে আয়ই করেছিলেন তিনি, তা নয়। বহু ভাল কাজে দানও করে গিয়েছেন রকেফেলার। টাকার সঙ্গে যে দুশ্চিন্তাও আসে, এ কথা কার না জানা। তবে এই ব্যক্তির জীবনটা ছিল অন্য তারে বাঁধা প্রায়শই কাজ নিয়ে একটা কথা বলতেন রকেফেলার। তাঁর কাছে তাঁর কাজটা ছিল খেলাধুলোর মতোই। তাই কোনও রকম দুশ্চিন্তা ছাড়াই আনন্দ করে গোটা জীবনটা কাটিয়েছেন মার্কিন এই ধনকুবের।