পাঁচতারা হোটেলে রাত্রিবাস। একদিন, দুদিন, খুব বেশি হলে এক সপ্তাহ। তার বেশি বোধহয় সাধারণ কারও পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু এক ব্যক্তি টানা দু-বছর কাটিয়েছেন পাঁচতারা হোটেলে। সব মিলিয়ে বিল হয়েছিল ৫৮ লক্ষ টাকা। নিশ্চয়ই টাকার অঙ্ক শুনে অবাক হচ্ছেন। কিন্তু আসল অবাক হওয়ার মতো ঘটনা একটু আলাদা। ওই ব্যক্তি এতদিন পাঁচতারা হোটেলে কাটয়েও এক টাকাও বিল মেটাননি। কীভাবে সম্ভব এমন প্রতারণা? আসুন শুনে নিই।
টানা দু বছর পাঁচতারা হোটেলেই রাত কাটিয়েছেন। একেবারে রাজার হালে থেকে এতগুলো দিন। বিলও হয়েছে রাজকীয়। প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা। কিন্তু সেই টাকার এতটুকুও মেটাননি যুবক। স্রেফ ছল করে এতগুলো দিন কাটিয়েছেন হোটেলে। আর সুযোগ বুঝেই চম্পট।
আরও শুনুন: প্রতি বছর উচ্চতায় বাড়ছে শিবলিঙ্গ, কোন মন্দিরে রয়েছে এমন আশ্চর্য লিঙ্গ?
ঘটনাটি দিল্লির নামজাদা এক পাঁচতারা হোটেলের। রাজধানীর বুকে এই হোটেল অনেক মধ্যবিত্তের কাছেই স্বপ্নপুরী। বাইরে থেকেই হোটেলটির সাজসজ্জা দেখার মতো। তাই ভিতরের কথা কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। সুইমিং পুল, স্পা, জিম, কী নেই এই হোটেলে। ভাড়াও অবশ্য তেমনই। সেখানেই বছর দুয়েক আগে থাকতে এসেছিলেন জনৈক অঙ্কুশ দত্ত। নিজের পছন্দ মতো ঘর বেছে নিয়ে থাকতে শুরু করেন। প্রথমদিকে কেউ কিছুই বুঝতে পারেনি। অন্যান্য অতিথিদের মতোই তাঁকে যথাসাধ্য পরিসেবা দেওয়ার চেষ্টা করতেন হোটেল কর্মীরা। তবে তাঁর এতগুলো দিন হোটেলে কাটানোয় কিছুটা অবাক হন হোটেলের কয়েকজন কর্মী। কারণ নিয়ম অনুযায়ী এতদিন হোটেলে কাটাতে পারেন না কেউই। তবে এসব বিষয় যার দেখার কথা সেই ব্যক্তির এ নিয়ে কোনও অভিযোগ ছিল না। তিনি আবার হোটেলের বেশ উচ্চপদস্থ কর্মী। তাই মুখফুটে কিছু বলার সাহস পাননি ওই কর্মীরা। এদিকে অঙ্কুশ নিজের ইচ্ছামতো হোটেলে দিন কাটাতে থাকেন।
আরও শুনুন: এক রাতের ভাড়া সাড়ে ১২ লাখ! মার্কিন সফরে মোদির ঠিকানা এই হোটেলই
আসল ঘটনা সামনে এসেছে হালে। বেশ কয়েকমাস আগেই হোটেল থেকে পাকাপাকি ভাবে চলে গিয়েছেন ওই যুবক। হোটেলের বার্ষিক আয় ব্যয়ের হিসাব করতে গিয়েই কর্তৃপক্ষের নজরে আসে অদ্ভুত গরমিল। দেখা যায় প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকার হিসাব মিলছে না। তখনই ডাক পড়ে হোটেলের সেই উচ্চপদস্থ কর্মীর। যাবতীয় হিসাব রক্ষার দায় তাঁরই। সেইসঙ্গে কে কতদিন হোটেলে থাকছেন তাও নজরে রাখেন তিনিই। এরপরই সামনে আসে ওই যুবকের এতগুলো দিন হোটেলে কাটানোর কথা। কর্তৃপক্ষের কাছেও সবটা পরিষ্কার হয়। তখনই পুলিশের কাছে ওই যুবকের নামে অভিযোগ দায়ের করে কর্তৃপক্ষ। হোটেল কর্মীর সাহায্যেই যে এমন প্রতারণা তিনি করতে পেরছেন তা বুঝতে পারেন সকলেই। মনে করা হচ্ছে, ওই কর্মীকে কিছু টাকা ঘুষ দিয়েই আসল উদ্দেশ্য সফল করেছেন যুবক। তবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শীঘ্রই অভিযুক্ত ধরা পড়বে, এমনটাই ধারণা পুলিশের।