হানিমুন নিয়ে থাকে নবদম্পতির নানা স্বপ্ন। অনেকেই জীবনের এই বিশেষ সময়টি কাটানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে রাখেন। কেউ কেউ আবার মেতে ওঠেন অ্যাডভেঞ্চারেও। কিন্তু তাই বলে হানিমুনে কেউ মাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চান, এমন শুনেছেন কখনও? অথচ বাস্তবে ঘটল ঠিক তেমনটাই। আর তাতেই প্রায় গৃহযুদ্ধ লেগে যাওয়ার উপক্রম। আসুন, ঘটনাটা আগাগোড়া শুনে নেওয়া যাক।
বিয়ের পর নবদম্পতির জীবনে সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্ত মধুচন্দ্রিমা যাপন। এ সময় তাঁরা একে অপরকে গভীরভাবে চেনা, বোঝা, জানার চেষ্টা করেন। একে অপরের সঙ্গে তাঁরা সময় কাটান। তাই এই বিশেষ সময়টাতে তাঁদের সঙ্গে কেউই থাকেন না। তাঁরাও কাউকে রাখতে চান না। বন্ধুবান্ধব হোক বা পরিজন, এই সময়টা নবদম্পতিকে নিজেদের মতো করেই থাকতে দেন। এমনটাই দস্তুর। কিন্তু এই ঘটনায় গল্পটা একেবারেই আলাদা। সদ্য বিবাহিত ব্রিয়ান মধুচন্দ্রিমায় নিয়ে যেতে চান তাঁর মাকে। জীবনের এমন সুন্দর দিনগুলিও নিজের শাশুড়ির সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে শুনে বেজায় চটে যান তাঁর স্ত্রী ট্রেসি।
আরও শুনুন: ৭ ঘণ্টায় ৭৫ বার গাইলেন জাতীয় সঙ্গীত, দেশকে ভালবেসেই বিশ্বরেকর্ড তরুণীর
কিন্তু এমন ইচ্ছা কেনই বা হল ব্রিয়ানের? আসলে ব্রিয়ান-এর মা একজন সিঙ্গল মাদার। তাই ছোট থেকেই ব্রিয়ান তাঁর যাবতীয় সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিতেন মা জেয়নের সঙ্গে। আবার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী ট্রেসিরও রয়েছে একটি সন্তান। নিজে সিঙ্গল মাদার-এর সন্তান হওয়ার কারণে, স্বচ্ছন্দেই ট্রেসির সন্তানকে আপন করে নিতে পেরেছেন ব্রিয়ান। তাঁর এই ব্যবহার মন কেড়েছিল ট্রেসির। দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকার পর যখন বিয়ে করলেন ব্রিয়ান ও ট্রেসি, তখন তাঁরা ঠিক করেন হানিমুনে যাবেন হাওয়াই দ্বীপে। কিন্তু ব্রিয়ান বিয়ের ব্যাপারে প্রায় সবকিছুতেই তাঁর মাকে এমন ভাবে জড়িয়ে রাখতেন, যা অবাক করে তাঁর স্ত্রীকে। প্রথমে যাবতীয় যা-কিছু সাধারণ ভাবেই মেনে নিয়েছিলেন ট্রেসি। কিন্তু পরে ব্রিয়ানের সিদ্ধান্ত শুনে রীতিমতো চটে যেতে বাধ্য হন তিনি।
আরও শুনুন: পুলিশের ঘুম ছুটিয়েছিল কলকাতার প্রথম মহিলা সিরিয়াল কিলার
এদিকে ছোটবেলা থেকেই ব্রিয়ান জানতেন, তাঁর মায়ের জীবনে কোনও বিশেষ দিন নেই। তাই নিজের বিয়ের দিনটিকেই মায়ের জন্যও স্মরণীয় করে তোলার চেষ্টা করেন তিনি। এখানেই শেষ নয়। এরপর তাঁর মনে হয় তাঁদের হানিমুনে-ও তাঁর মা-কে সঙ্গে থাক। কিন্তু স্ত্রী ট্রেসি এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিক ভাবেই বেজায় চটে যান। তখন তাঁকে আশ্বস্ত করতে এক বিশেষ পরিকল্পনা করেন ব্রিয়ান। স্ত্রীকে বলেন, সারাদিন মাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরলেও, রাত্রিটুকু তাঁরা নিজেদের মতো করেই কাটাবেন। তাতে নিমরাজি হন স্ট্রেসি। কিন্তু আসল সমস্যা শুরু হল হানিমুনে গিয়ে।
ট্রেসি ভেবেছিলেন, শাশুড়ি সঙ্গে থাকলে তাঁর সন্তানের দেখভাল করতে সুবিধা হবে। কিন্তু হাওয়াই দ্বীপে পৌঁছে দেখা গেল, ছবিটা একেবারেই আলাদা। সারাদিন নিজের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন শাশুড়ি। কখনও বার কখনো ক্লাব- সব মিলিয়ে তাঁর যেন কোনও খেয়ালই নেই ছেলে, বউমার প্রতি। বিশেষত ট্রেসির সন্তানটির প্রতি। আর এই সমস্ত কিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে গেল যেদিন নবদম্পতি ঠিক করেন তাঁরা স্পা করাতে যাবেন। একে হানিমুন, তাও আবার হাইয়াই দ্বীপে, তাই এই স্পা যে বেশ রোম্যান্টিক হবে তা বলাই বাহুল্য। সেখানে কি আর শাশুড়িকে সঙ্গে নেওয়া যায়? তাই জেয়নের হেফাজতে নিজের সন্তানকে রেখে স্পা করাতে চলে যান দম্পতি। কিন্তু এখানেও পিছু ছাড়লেন না শাশুড়ি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেলে-বউমার র্যোমান্টিক স্পা সেন্টারে তিনি সশরীরে হাজির। উদ্দেশ্য, তিনিও স্পা করাবেন। শাশুড়িকে সেখানে দেখে তো বেজায় চটে যান ট্রেসি। প্রথমেই প্রশ্ন করেন, তাঁর সন্তানটি কোথায়? উত্তরে শাশুড়ি জানান, হোটেলেরই একজন বেবিসিটার-এর কাছে শিশুটিকে রেখে তিনি এসেছেন এখানে। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে ট্রেসির। অচেনা বেবিসিটার-এর কাছে রাখতে হবে না ভেবেই শাশুড়িকে আনতে রাজি হন তিনি, আর সেই শাশুড়ি-ই কিনা ঘটালেন এমন কাণ্ড।
এতক্ষন শুনে আপনারাও নিশ্চয়ই ভাবছেন, এমন ঘটনা বাস্তবে ঘটতে পারে নাকি! ঘটতে পারে নয়, ঘটেইছে। আসলে বাস্তবে এমন এমন কাণ্ডই ঘটে, যা হার মানায় সিনেমা-সিরিয়ালের গল্পগাছাকেও।