একসময় অভিনেত্রীদের লক্ষ লক্ষ টাকার উপহার দিতেন এই ব্যক্তি। তবে আর্থিক জালিয়াতিতে জড়িয়ে আপাতত জেলেই দিন কাটছে তাঁর। এবার আর কোনও নায়িকা নন, জেল থেকেই খোদ রামলালাকে উপহার দিতে চাইলেন ঠগ সুকেশ। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
আর কোনও লাস্যময়ী নায়িকার দিকে নজর নয়। এবার কি ধর্মকর্মেই মন দিলেন জেলবন্দি সুকেশ চন্দ্রশেখর? সম্প্রতি অযোধ্যার রামজন্মভূমি ট্রাস্টকে আবেগপূর্ণ চিঠি লিখে তিনি জানালেন, বংশপরম্পরায় রামলালার ভক্ত তাঁরা। আর সেই ভক্তির নিদর্শন হিসেবেই রামলালার জন্য একটি মুকুট দান করতে চান তিনি। অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হওয়া তাঁর কাছে স্বপ্নের মতন। আর সেই স্বপ্ন পূরণের ঘটনাকেই তিনি স্মরণীয় করে রাখতে চান ওই মুকুট দানের মধ্যে দিয়ে- এমনটাই দাবি সুকেশের। তাঁর ইচ্ছা, ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি, তাঁর এই মুকুট পরেই যেন মন্দিরে অভিষেক হয় রামলালার।
আরও শুনুন: পুজোতেও দিনরাত এক করে চলছে কাজ, কার হাতে তৈরি হচ্ছে অযোধ্যার রামমূর্তি?
একসময় বলি নায়িকাদের কোটি কোটি টাকার উপহার দেওয়া রীতিমতো জলভাত ছিল তাঁর কাছে। বিলাসবহুল গাড়ি থেকে দামি হিরের গয়না, বিদেশি বিড়াল থেকে ঘোড়া- এমন নানারকম জিনিসই তিনি উপহার দিয়েছেন একাধিক অভিনেত্রীকে। বিশেষ করে জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ ও নোরা ফতেহির নাম জড়িয়েছিল ঠগ সুকেশের সঙ্গে। কিন্তু ২০০ কোটির আর্থিক জালিয়াতি মামলায় জড়ানোর পর থেকেই সেই সুখের দিনে ইতি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তৎপরতায় দীর্ঘদিন জেলেই কাটছে সুকেশ চন্দ্রশেখরের। যদিও সেখান থেকেও একাধিকবার জ্যাকলিনের উদ্দেশে প্রেমপত্র লিখেছেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারকার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া সবকিছুই ফের ফিরিয়ে দেবেন। তবে এবার আর কোনও নায়িকাকে চিঠি লেখা বা উপহার দেওয়ার বদলে সরাসরি পারমার্থিক বিষয়ে মনোনিবেশ করলেন তিনি। দু-পাতা জুড়ে চিঠি লিখলেন রামমন্দির ট্রাস্টকে। আর সেখানে খোদ রামলালাকেই বিশেষ মুকুট দান করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন ঠগ সুকেশ।
আরও শুনুন: সাড়ম্বরে পালিত হনুমান জয়ন্তী, কিন্তু বজরংবলীর জন্ম কোথায়! বিতর্ক পৌঁছেছিল আদালতেও
তবে সে মুকুটও তো কোনও সাধারণ মুকুট নয়। মুকুটটি ঠিক কেমন, তার যাবতীয় বর্ণনাও ওই চিঠিতেই দিয়েছেন সুকেশ। জানিয়েছেন, ১১ কেজি ওজনের সোনার মুকুটটি সাজানো হয়েছে হিরে দিয়ে। মোটামুটি ৯১৬ ক্যারাটের এই সোনা যেমন খাঁটি, তেমনই ৫ ক্যারাটের হিরেগুলিও তাকলাগানো। একটি দুটি নয়, মোট ১০১টি হিরে দিয়ে ঠাসা ওই মুকুট। এখানেই শেষ নয়, মুকুটের মাঝে জ্বলজ্বল করছে ৫০ ক্যারাটের একটি বড় পান্না। সব মিলিয়ে দক্ষিণী কারিগরদের হাতে বিশেষভাবে বানানো এই মুকুটটি যে শিল্পের দিক থেকেও অনন্য, সে কথা বলতে ভোলেননি সুকেশ। তবে আর্থিক জালিয়াতিতে জড়ানো সুকেশের হাত থেকে এই মূল্যবান উপহার রাম মন্দির ট্রাস্ট নিতে রাজি হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।