সারাদিন গাড়ি চালিয়ে ক্লান্ত। দুপুরে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন গাড়িতেই। সবে একটু তন্দ্রা এসেছে, হঠাৎ একটা মেসেজের শব্দ। ফোন হাতে নিয়ে দেখলেন, কোথা থেকে যেন তাঁর অ্যাকাউন্টে ৯ হাজার কোটি টাকা ঢুকেছে। সাধারণ এক ট্যাক্সিচালকের অ্যাকাউন্টে এত টাকা! অথচ এমনটা স্বপ্ন নয়, একেবারে সত্যি। ঠিক কী হল তারপর? আসুন শুনে নিই।
রোজ কত কী ঘটে যাহা তাহা, এমন কেন সত্যি হয় না আহা! সাম্প্রতিক এক ঘটনার পর ঠিক এমনটাই হয়তো ভাবছেন চেন্নাইয়ের এক ট্যাক্সিচালক। কিছুদিন আগেই হঠাৎ করে ৯ হাজার কোটি টাকার মালিক হন তিনি। কিন্তু মাত্র আধ ঘন্টার জন্য। তারপর আবার যে কে সেই। কিন্তু এমনটা হল কীভাবে?
আরও শুনুন: ক্রিকেটেও শিবঠাকুর! ত্রিশূল, ডমরু, বেলপাতায় সাজছে বারাণসীর স্টেডিয়াম
তাহলে খুলেই বলা যাক। ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন, চেন্নাইয়ের নেইক্কারাপাত্তির এক সাধারণ ট্যাক্সিচালক রাজকুমার। প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ট্যাক্সি চালিয়েই দিন গুজরান হয় তাঁর। এদিনও অন্যান্য ট্যাক্সিচালক বন্ধুদের সঙ্গেই ঘর থেকে বেরিয়েছিলেন। তারপর যে যার মতো ছড়িয়ে গিয়েছেন। ইতিমধ্যেই দুপুরে আবার এক হয়েছেন তাঁদের কয়েকজন। একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া করে যে যার গাড়িতেই বিশ্রাম নিচ্ছেন। রাজকুমারও ব্যতিক্রম নন। সবেমাত্র তন্দ্রা এসেছে। কিন্তু তা কেটে ফোনের মেসেজের শব্দে। আবার হয়তো ঘুমানো যেত, কিন্তু মেসেজে যা লেখা ছিল, তা দেখার পর যে কারও ঘুম উড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। ঠিক কী মেসেজ এসেছিল তাঁর ফোনে?
আরও শুনুন: সোশাল মিডিয়া ব্যবহারে বয়স বেঁধে দিক কেন্দ্র, মত কর্ণাটক আদালতের
সধারণ এক ব্যাঙ্কের মেসেজ। টাকা ঢুকলে যেমনটা আসে তেমন। এতে অবাক হওয়ার বিশেষ কিছুই নেই। কিন্তু সেই টাকার পরিমাণ যদি হয় ৯ হাজার কোটি তাহলে অবাক না হয়ে উপায় আছে? শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। হঠাৎই রাজকুমার জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ৯ হাজার কোটি টাকা। প্রথমে ওতগুলো শূণ্য গুনতেই পারছিলেন না। তাই ভেবেছিলেন কোনও ভুয়ো মেসেজ। কিন্ত মেসেজটা ভালো করে পড়ার পর বুঝতে পারেন কোনও ভুল নেই, সত্যিই তাঁর অ্যাকাউন্টে ওতগুলো টাকাই ঢুকেছে। সঙ্গে সঙ্গে টাকাটা অন্যত্র পাঠানোর কথা ভাবেন রাজকুমার। কিন্তু এত টাকা একসঙ্গে পাঠানো যাবে না। তাই প্রথমে ২১ হাজার টাকা ট্রান্সফার করে দেন এক বন্ধুর অ্যাকাউন্টে। এর মধ্যেই কেটে গিয়েছে আধ ঘণ্টা। আবার টাকা পাঠাতে গিয়ে রাজকুমার আবিষ্কার করেন ব্যাঙ্কে পড়ে আছে মাত্র ১০৫ টাকা। অর্থাৎ ৯ হাজার কোটি ক্রেডিট হওয়ার আগে তাঁর অ্যাকাউন্টে যে পরিমাণ টাকা ছিল, ঠিক ওতটুকুই রয়েছে। কিন্তু যে টাকা ইতিমধ্যেই তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন তা একেবারে সত্যি। কিন্তু কীভাবে এমনটা হল সেই নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে যান রাজকুমার। আসল সত্যি সামনে আসে পরেরদিন। ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করে রাজকুমারকে জানানো হয়, এটা সম্পূর্ণভাবে তাঁদের ভুল। এদিকে সেই টাকা থেকে কিছুটা হলেও খরচ করে ফেলেছেন রাজকুমার। যা ফেরত দেওয়ার কোনও ইচ্ছা ছিল না তাঁর। তাই নিজেই গিয়ে হাজির হন ওই ব্যাঙ্কে। সঙ্গে নিয়ে যান পরিচিত এক উকিলকেও। বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে সমঝোতায় আসেন তাঁরা। ঠিক হয় ওই ২১ হাজার টাকা আর ফেরত দিতে হবে না রাজকুমারকে। উলটে ব্যাঙ্কের থেকে নতুন করে গাড়ি কেনার জন্য লোনও পাবেন তিনি। তাই খুব একটা হতাশ তিনি হননি। তবে এই ঘটনা যে একেবারেই বিরল তা একবাক্যে মেনে নিয়েছেন প্রায় সকলেই।