বিজেপির আমলে পালটে গিয়েছিল পাঠ্যবই। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, এহেন পদক্ষেপের পিছনে ছিল নিছক রাজনৈতিক স্বার্থ। ক্ষমতায় এসেই তার পালটা দিল কংগ্রেস। শিক্ষায় যে গৈরিকীকরণ হয়েছিল বলে দাবি, তা বদলে দিতে চাইছে কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
স্কুলের পাঠ্যক্রমে একের পর এক বদল আনছে কেন্দ্র। কখনও বাদ মুঘল পর্ব। কখনও বাদ মৌলানা আজাদ। কখনও ডারউইনের তত্ত্ব কিংবা পিরিয়ডিক টেবল। আবার কখনও বাদ গণতন্ত্রের অধ্যায়। একের পর এক বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যক্রম থেকে নানা প্রসঙ্গ বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং তথা এনসিইআরটি, আর সেই প্রস্তাব মেনেও নিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। যা নিয়ে সরগরম দেশের শিক্ষামহল। এর পিছনে রাজনৈতিক কারণ দেখছেন রাজনীতিকদের একাংশও। তবে দেশেরই একটি রাজ্যে এবার দেখা গেল উলটপুরাণ। যেখানে সিলেবাস ইস্যুতেই বিজেপিকে পালটা দিল কংগ্রেস।
আরও শুনুন: ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখিয়েছিলেন খোদ সাধ্বী প্রজ্ঞা, মুসলিম প্রেমিকের সঙ্গে চম্পট সেই তরুণীর
হ্যাঁ, সম্প্রতি এমনটাই ঘটেছে কর্ণাটকে। সে রাজ্যের ক্ষমতায় বিজেপি থাকাকালীন সিলেবাসে গৈরিকীকরণ করা হয়েছিল বলেই দাবি অনেকের। আর সেই আমলের সিলেবাস বদলে দিতেই এবার উঠেপড়ে লেগেছে নবনির্বাচিত কংগ্রেস সরকার। কী ঘটেছে ঠিক? তাহলে খুলেই বলা যাক।
কর্ণাটকের শিক্ষাবিদদের একাংশ নতুন সরকারের কাছে আরজি জানিয়েছেন, বিজেপি জমানায় পাঠ্যবইয়ে যে সব বিতর্কিত বিষয়গুলি যোগ করা হয়েছে, তা বাতিল করা হোক। এই প্রসঙ্গে তাঁরা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়াড়কে নিয়ে যোগ করা অধ্যায় ও অন্য কয়েকটি প্রসঙ্গের কথা উল্লেখ করেছেন। সমাজ সংস্কারক কিছু ব্যক্তিত্বকে পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। প্রায় চল্লিশ জন শিক্ষাবিদের সঙ্গে বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের মনকে কলুষিত করতে দেওয়া হবে না। ঘৃণার রাজনীতিকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেবে না নয়া সরকার, এমনটাই সাফ জানিয়েছেন কংগ্রেস শিবিরের বর্ষীয়ান নেতা। আগেই কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্ক খাড়গে জানিয়েছিলেন, বিগত বোম্মাই সরকারের যে সমস্ত নিয়মনীতি একপেশে, সেই নির্দেশগুলিকে পর্যালোচনা করে দেখবে নয়া সরকার। আর শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস।
আরও শুনুন: ২৮৮ জনের মৃত্যুও মুছতে পারল না সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, কোন পথে হাঁটছে দেশ?
যদিও এই বিতর্কে পালটা দিতে ছাড়েনি বিজেপি শিবিরও। নির্বাচনের মাস পেরোতে না পেরোতেই নয়া মন্ত্রিসভার এহেন তৎপরতাকে বিঁধেছে তারা। তাদের দাবি, দপ্তরগুলির কর্মপদ্ধতি, তাদের কাজের ধরনধারণ সম্পর্কে বিশদে জানার আগেই সিলেবাস বদলে ফেলার কাজে নেমেছে কংগ্রেস সরকার। আসলে গান্ধী পরিবারকে সন্তুষ্ট করতেই এহেন উদ্যোগ, দাবি বিজেপির। তাই জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেমের মতো বিষয়কে সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে বিজেপি শিবির যে বিষয়গুলিকে দেশপ্রেমের আওতায় আনতে চাইছে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বিভিন্ন মহলেই। সব মিলিয়ে সিলেবাস ইস্যুতে নতুন করে বিতর্ক উসকে উঠেছে কর্ণাটকে।