লক্ষ্মী দেবী একেই চঞ্চলা। তার ওপর ঠিকমতো যত্নআত্তি না করতে পারলে তিনি ভিটেমাটি চাঁটিও করে দিতে পারেন। একবার এমনই অবস্থা হয়েছিল বিষ্ণুর। আর লক্ষ্মীকে ফিরিয়ে আনার জন্য তাঁকে ধার করতে হয়েছিল স্বয়ং কুবেরের থেকে।
সৃষ্টি-স্থিতি-বিনাশের তিন দেবের মধ্যে কে বড়? এই নিয়ে তর্ক বেধেছিল মুনি-ঋষিদের মধ্যে। উত্তর খুঁজতে ঋষি ভৃগু একে একে ব্রহ্মা ও মহেশ্বরের কাছে গেলেন। কিন্তু তাঁরা তাঁকে পাত্তাই দিলেন না। ভীষণ চটে গেলেন ভৃগু। শেষে বিষ্ণুর কাছে এসে যখন দেখলেন তিনিও নিদ্রামগ্ন, খেয়ালই করছেন না ভৃগুকে, তখন আর রাগ সামলাতে না পেরে ঘুমন্ত বিষ্ণুর বুকের বাম দিকে সোজা লাথি মারলেন ভৃগু। আশ্চর্যের কথা, বিষ্ণু কিন্তু এতে রাগ করলেন না। উলটে ঋষি ভৃগুর আঘাত লেগেছে কি না জিজ্ঞাসা করে তাঁর পায়ে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন স্বয়ং বিষ্ণু। বিষ্ণুর স্পর্শে ভৃগুর শরীর থেকে অহং চলে গেল। কিন্তু গোল বাধল অন্য জায়গায়। বিষ্ণুর বুকের বাম দিকে স্বয়ং লক্ষ্মী বিরাজ করেন। সেখানেই পদাঘাত করেছেন ভৃগু, অথচ তা সত্ত্বেও তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বিষ্ণু। এই ঘটনায় প্রচণ্ড চটে গেলেন লক্ষ্মী। বিনাবাক্যব্যয়ে বৈকুণ্ঠ ত্যাগ করলেন তিনি।
আরও শুনুন: কেবল ধনসম্পদের দেবী নন, বাংলায় শস্যের দেবী রূপেও এককালে পূজা পেতেন লক্ষ্মী
মর্তে এসে লক্ষ্মী নাকি দক্ষিণ ভারতে জন্ম নেন। নিঃসন্তান আকাশরাজা তাঁকে পদ্মফুলের ওপর ঘুমন্ত অবস্থায় পান। তাই তাঁর নাম দেন পদ্মাবতী। ভগবান বিষ্ণু অনেক কষ্টে তাঁর খোঁজ পান। তারপর তিনিও এক পশু শিকারি হিসেবে জন্ম গ্রহণ করেন দক্ষিণ ভারতের ভেঙ্কট পর্বতের রাজ্য, বর্তমান অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি এলাকায়। নাম হয় শ্রীনিবাস। এদিকে তাঁর মর্তের মা ভাকুলা দেবী ছিলেন মাতা যশোদার অবতার। কথিত যে, ভগবান কৃষ্ণের পালক-মা যশোদা তাঁর বিয়ে দেখতে পাননি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তাই কৃষ্ণের কাছ থেকে পুনর্জন্মের বর পেয়েছিলেন তিনি।
আরও শুনুন: কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় ভুলেও এই কাজগুলো করবেন না, দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়বে না
রাজার প্রাসাদে বড় হতে থাকলেন পদ্মাবতী। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর রূপ-লাবণ্যও বাড়তে থাকে। ঋষি নারদ একদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করে বলেন যে তিনি ভগবান বিষ্ণুর স্ত্রী হবেন। এরপর ভাগ্যের নির্বন্ধে জঙ্গলের মধ্যে দেখা হয় শ্রীনিবাস ও পদ্মাবতীর।
শুনে নিন বাকি অংশ।