হানিমুন ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেড। যার হাত ধরেই জীবনের পড়ন্ত বেলায় হানিমুনে বেরিয়েছিলেন এক যুগল। রুপোলি পর্দায় সেই দুই মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বোমান ইরানি এবং শাবানা আজমি। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, প্রেমের ক্ষেত্রে গণ্ডি টানতে পারে না বয়স। বাস্তবে ঠিক তেমনটাই ঘটিয়ে ফেলেছেন মহারাষ্ট্রের দুই বৃদ্ধ বৃদ্ধা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সংসার পরিজন সব ছেড়েই গিয়েছিলেন বৃদ্ধাশ্রমে। কিন্তু সেই একলা থাকার জীবনেই নতুন করে ভালবাসার মানুষ খুঁজে পেলেন দুই বৃদ্ধ বৃদ্ধা। আর অবশেষে, একে অন্যের হাত ধরেই জীবনের পথ চলা শুরু করলেন নতুন করে। বুঝিয়ে দিলেন, শরীরের বয়স বাড়লেও, বয়সের গণ্ডিতে মনকে বেঁধে না ফেললেও চলে। আর ভালবাসার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে না বয়স। তাই কে কী বলবে, তার পরোয়া না করে একে অন্যের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিলেন এই যুগল। সম্প্রতি এমনই ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে।
আরও শুনুন: দাঁড়িপাল্লায় কনের সঙ্গে রাখা অসংখ্য সোনার ইট! অভিনব কায়দায় ওজন পাকিস্তানের বধূকে
বয়স বাড়লেই যেন খরচের খাতায় পড়ে যেতে হবে, এমনটাই ভয় পান অনেকে। আর তারপরে যদি বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয় কোনও বয়স্ক মানুষকে, তাহলে সেই ভয় বেড়ে যায় আরও। জনপ্রিয় গান বলেছিল, বৃদ্ধাশ্রম মানেই ভাল থাকায় ইতি। সব কাছের মানুষজনকে ছেড়ে একেবারে একা হয়ে যাওয়া। কিন্তু বৃদ্ধাশ্রম নামের সঙ্গে সবসময় যে যন্ত্রণাকেই জুড়ে যেতে হবে, এমনটাও তো নয়। আর সে কথাও কিন্তু বুঝিয়ে দিয়েছে ‘আহা রে মন’ কিংবা ‘বেঁচে থাকার গান’-এর মতো সিনেমা। যেখানে দেখা গিয়েছিল বৃদ্ধাশ্রমে গিয়েও দিব্যি আনন্দের উপাদান খুঁজে নিচ্ছেন একাধিক বয়স্ক পুরুষ ও নারী। কোথাও হয়তো মন দেওয়া নেওয়াও ঘটে যাচ্ছে সকলের অজান্তেই। আর এমন ঘটনাই এবার ঘটেছে বাস্তবে। বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে থাকতেই একে অপরের কাছাকাছি আসেন বাবুরাও পাটিল এবং অনুসায়া শিন্ডে। বাবুরাও-এর বয়স আশি ছুঁই ছুঁই, পঁচাত্তর পেরিয়ে গিয়েছে। অনুসায়া তাঁর থেকে বছর দশেকের ছোট। অবশেষে নিজেদের সেই ভাললাগাকেই পরিণতি দিয়েছেন তাঁরা। রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে সেরে ফেলেছেন বিয়ে। আর সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সম্প্রতি। তরুণদের মধ্যে যেখানে দীর্ঘ সম্পর্কে থাকার প্রবণতা ক্রমশ কমছে, বাড়ছে বিচ্ছেদের হারও, সেখানে এমন ঘটনা যে বিরল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ওই যুগলকে তাই খোলা মনেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নেটিজেনরা। সমস্ত শরীরী আদানপ্রদানের বাইরে গিয়েও, আসলে একে অন্যের পাশে থাকাই যে ভালবাসা, সে কথাই মেনে নিচ্ছে নেটদুনিয়া।