কেউ রাজা, কেউ রানি কেউ বা সিনেমার নায়ক-নায়িকা! AI–র দৌলতে সব সম্ভব। সম্প্রতি নেটদুনিয়া শুরু হয়েছে এমনই এক ট্রেন্ড। যাতে গা ভাসিয়ে নেটিজেনরা ব্যস্ত হয়েছেন নিজেদের নতুন রূপে দেখতে। কিন্তু জানেন কি এই ট্রেন্ড কতটা সুরক্ষিত? না বুঝে মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছেন না তো? আসুন শুনে নিই।
কিছুদিন আগেই জনপ্রিয় অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানার ডিপ ফেক ভিডিও ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল নেটদুনিয়া। এমনকি এই চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদি। তালিকা একেবারেই ছোট নয়। কিন্তু তাঁরা না হয় চেনা মুখ! সাধারণ মানুষের জন্য ডিপ ফেক কতটা আশঙ্কার? সম্প্রতি সেই নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা সেরেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও শুনুন: তাঁর ভিডিওতে রশ্মিকার মুখ! ভাইরাল ডিপ ফেক ভিডিও-র তরুণী আসলে কে?
নেটদুনিয়ায় হামেশাই কিছু না কিছু ট্রেন্ড জন্ম নিতে দেখা যায়। কখনও বিশেষ কোনও গানের লাইন, কখনও আবার নাচের স্টেপ। যাতে অনায়াসে গা ভাসান সাধারণ মানুষ। আর এই ট্রেন্ডে গা ভাসানোর অভ্যাসই ডেকে আনতে পারে মারাত্মক বিপদ। অন্তত বিশেষজ্ঞদের দাবি তেমনটাই। গান বা নাচের কথা বাদ দিলেও এমন বহু ট্রেন্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় যা আসলে বড়সড় চক্রান্তের টোপ হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে সাম্প্রতিক এক ট্রেন্ডের কথাই বলা যাক। বছর শেষে নিজেকে নতুন রূপে আবিষ্কার করুন, ঠিক এমনই কিছু ট্যাগলাইন দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়েছে এক বিশেষ কায়দা। যা আসলে AI-র কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। এই পদ্ধতিতে যে কেউ নিজের একেবারে ভিন্ন অবতার গড়তে পারেন। করণীয় বলতে স্রেফ নিজের ছবি আপলোড। বাকীটা প্রযুক্তির কাজ। তবে এভাবেই হতে পারে মারাত্মক বিপদ। বিশেষজ্ঞদের একাংশ ডিপ-ফেক ভিডিও তৈরির হওয়ার নেপথ্যে একেই মূলত দায়ী করেছেন। এদিকে ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে অনেকে নিজে থেকে ছবি AI মাধ্যমে এডিট করছেন। এর থেকে স্রেফ ডিপ ফেক ভিডিও বা ছবি তৈরি করা যেতে পারে তাই নয়, আর্থিক জালিয়াতিরও শিকার হতে পারেন যে কেউ। এমনটা দেখা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আপলোড করার সময় যদি ভুলবশত সেখানে এটিএম কার্ডের ছবি কিংবা ওই ধরনের ব্যক্তিগত নথি থেকে যায়, তবে তার থেকে হতে পারে জালিয়াতি।
আরও শুনুন: শীত শীত স্নানঘর, গ্লিসারিনের খুশবু
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এসবের থেকে বাঁচার উপায় কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইন কোনও কাজ করার সময় সদা সতর্ক থাকুন। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারের সময়। প্রতিদিন কী করছেন সেই আপডেট কেউ যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে থাকে তাহলে তাঁকে অনায়াসে শিকারের তালিকায় যোগ করতে পারে অপরাধীরা। ছবি আপলোডের ক্ষেত্রেও একইরকম সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। নিতান্তই ছবি আপলোড করলে তা লক করে রাখার উপায় রয়েছে। প্রয়োজনে সেসব করতে পারেন। চেষ্টা করুন কাজ হয়ে গেলে ডিভাইস থেকে ইন্টারনেট যোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলার। সারাদিন বিনা প্রয়োজনে ইন্টারনেট সংযোগ চালু থাকলেও বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। সেইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রেন্ডে গা ভাসানোর আগেও বিশেষভাবে সতর্ক হন। অনেক সময় এই ধরনের কাজে থার্ড পার্টি অ্যাপের যোগ থাকে। সেক্ষেত্রে ফোনের পারমিশন দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। একটু অসাবধান হলেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি চলে যাবে যে কারও কাছে। তবু ডিপ ফেক অবশ্যই এক সামাজিক ব্যাধি বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যে কোনও ছবি AI-র সাহায্যে বদলে ফেলা যায় এই পদ্ধতিতে। তাই নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যারপরনায় কঠিন। তবু যতটুকু সুরক্ষিত থাকা যায় সেই চেষ্টা করা!