দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এক হাজার পোলিশ উদবাস্তু সাইবেরিয়া থেকে সুদূর মধ্য এশিয়ার উষ্ণ অঞ্চলে পাড়ি দেয় বাধ্য হয়ে। একটা সময় তারা পৌঁছায় তৎকালীন বম্বে বন্দরে। এই পোলিশদের পাশে দাঁড়ান এক ভারতীয় মহারাজা। আজও সেই আতিথেয়তা ভোলেনি পোল্যান্ড।
ভারত থেকে সে দেশের দূরত্ব 6 হাজার 162 কিলোমিটার। সুদূর ইউরোপ মহাদেশের মধ্যস্থলের ছোট্ট দেশ। পোল্যান্ড। পোল্যান্ডের নাম নিশ্চয়ই শুনেছি। কিন্তু পোল্যান্ডের রাজধানী? রাজধানী হল ওয়ারশ। এই ওয়ারশ-র একাধিক রাস্তা, পার্ক, স্কুলের নাম না-কি ভারতের এক মহারাজার নামে, বিশেষ কারণে রাজাকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানাতে। কথাটা জেনে বোধ করি একাধিক প্রশ্ন কিলবিল করছে মাথায়। যেমন, কে? কেন? কীভাবে?
উত্তর মিলবে এক এক করে। প্রথম প্রশ্ন, মানুষটা কে? ভারতের মহারাজা তো জেনেছি, কিন্তু কোথাকার মহারাজা? উত্তর হল, গুজরাটের জামনগরের মহারাজা ছিলেন তিনি। ঠিক ধরেছেন, জামনগরের মহারাজা বললেই কিংবদন্তি কেএস রঞ্জিত সিংজির কথা মনে আসে। যিনি আদি ভারতীয় ক্রিকেটের জনক। যার নামে রঞ্জি ট্রফি। আমরা যাঁর কথা বলছি, তিনি সেই কেএস রঞ্জিত সিংজির ভাইপো। নাম দিগবিজয় সিংজি জাদেজা। দ্বিতীয় প্রশ্ন, কেন দিগবিজয় সিংজির নামে পোল্যান্ডে রাস্তা-পার্ক-স্কুলের নামকরণ? যেহেতু প্রায় এক শতক আগে বিশ্বযুদ্ধে অস্থির সময়ে হাজার খানেক পোলিশ উদবাস্তুকে নিজের রাজ্য জামনগরে আশ্রয় দিয়েছিলেন তিনি। এরপরেও প্রশ্ন ওঠে, ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডের উদবাস্তুরা জামনগরে কীভাবে এল?
আরও শুনুন: নতুন বউয়ের পা ছুঁলেন স্বামী, নিয়মের বদল দেখে মুগ্ধ দর্শকেরাও
তা হলে গল্পটা বলতে হয়। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিপর্যস্ত ইউরোপ। গরিব পোলিশ মজুরদের সোভিয়েত রাশিয়ার লেবার ক্যাম্পে কাজ লাগাচ্ছে রেড আর্মি। লেবার ক্যাম্পগুলো ছিল উত্তর-পূর্ব ইউএসএসআর-এ। কিছু ছিল সাইবেরিয়ায়। ১৯৪১ সালে যখন জার্মানি ইউএসএসআর-কে আক্রমণ করে তখন রাজনৈতিক অবস্থা বদলায়। এর ঠিক এক বছর পর কিছু পোলিশ উদবাস্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ছাড়ার অনুমতি পায়। এরপরই তীব্র শীতের সাইবেরিয়া থেকে সুদূর মধ্য এশিয়ার উষ্ণ অঞ্চলের দিকে যাত্রা শুরু করে ওই পোলিশরা। ভয়াবহ এই যাত্রাপথে অভুক্ত থেকে, অসুস্থ হয়ে নরকযন্ত্রণা সহ্য করে মানুষগুলো। পথে বয়স্কদের অনেকেরই মৃত্যু হয়। এভাবেই একদিন সমুদ্রপথে মুম্বইতে (তৎকালীন বম্বে) পৌঁছায় পোলিশ উদবাস্তু শিশু-কিশোর ভর্তি একটি জাহাজ। এতদূরে কেন?
আরও শুনুন: বিরক্ত হয়ে রেগে তাকানো মানেই মিমে তাঁর ছবি, জানেন কে এই ব্যক্তি?
কারণ ইউরোপ ও এশিয়ার একাধিক দেশ ওদের মাথা গোঁজার ঠাঁই দিতে রাজি হয়নি। মুম্বইতে পৌঁছালে ব্রিটিশরাও পোলিশদের ভূখণ্ডে নামার অনুমতি দেয়নি। একথা জানতে পারেন মহারাজা দিগবিজয় সিংজি। কী পদক্ষেপ নেন তিনি?
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।