মানুষের মদ্যপান করার একাদিক ক্ষতিকারক দিক থাকতে পারে, তবে গাছের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা নাকি একেবারেই উলটো। মদ খেলেই খরার মধ্যেও নাকি দিব্যি তরতাজা হয়ে ওঠে গাছ, এমনটাই দাবি করেছে নয়া গবেষণা। কিন্তু গাছ কীভাবে মদ্যপান করবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অতিরিক্ত মদ্যপান করলে মানুষের লিভারটি যে জবাব দেয়, সে কথা আর কে না জানে! তা ছাড়াও মদ্যপানের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে আরও নানারকম শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা। কিন্তু গাছের জন্য মদ নাকি মোটেও খারাপ কিছু নয়। অন্তত এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে এক নয়া গবেষণা।
আরও শুনুন: ৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা- প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেবে দেশবাসী, নয়া পরিষেবা ‘নমো’ অ্যাপে
ঠিক কী জানা গিয়েছে ওই গবেষণার সূত্রে? গবেষকদের মতে, শুষ্ক অঞ্চলে গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে ইথানল। এই রাসায়নিক পদার্থ গাছের দেহে প্রবেশ করলে বন্ধ হয়ে যায় পত্ররন্ধ্র। অর্থাৎ পাতায় থাকা যেসব আণুবীক্ষণিক ছিদ্র দিয়ে গাছ তার দেহের অতিরিক্ত জল বের করে দিতে পারে সেইসব ছিদ্রগুলি বন্ধ করে দিতে পারে ইথানল। সুতরাং দেহের মধ্যেই অতিরিক্ত জল জমিয়ে রাখতে পারে গাছ। যার মাধ্যমে খরা হলেও গাছ নিজের যাবতীয় প্রয়োজন মিটিয়ে নিতে পারে। শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চলের গাছগুলিতে স্বাভাবিকভাবেই থাকে এই ব্যবস্থা। তাদের পাতার উপরেই সৃষ্টি হয় মোটা মোমের আস্তরণ। কিংবা পাতাগুলিই পরিণত হয় কাঁটায়। এভাবেই পত্ররন্ধ্রগুলিকে বন্ধ করে নিজে দেহে অতিরিক্ত জল জমিয়ে রাখতে পারে সেই গাছগুলি। তবে সাধারণ গাছেও ইথানলের মাধ্যমে পত্ররন্ধ্র বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব বলেই মনে করছেন গবেষকরা।
আরও শুনুন: প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্মদিনে ৫৬ পদ দিয়ে ‘থালি’, সঙ্গে ৮.৫ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা রেস্তরাঁর
মজার কথা হল, মাদক পানীয়েও ব্যবহার করা হয়ে থাকে এই ইথানল। অর্থাৎ, মানুষের কাছে যা নেশার দ্রব্য, গাছের কাছে তা-ই জীবনদায়ী। এ যেন এক অদ্ভুত সমাপতন। অক্সিজেন আর কার্বন ডাই-অক্সাইডের ক্ষেত্রেও যেমন দেখা যায়, মানুষের জন্য যা ক্ষতিকারক তাকেই নিজের কাজে লাগাচ্ছে গাছ। অ্যালকোহলের ক্ষেত্রেও যেন ফের প্রমাণ মিলল সে কথারই। গবেষকদের দাবি, ইথানল ব্যবহার করলে কোনওভাবে গাছ থেকে পাওয়া ফসলের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না। এমনকি অন্য কোনও প্রাণীর জন্যেও সেই গাছের কোনও উপাদান ক্ষতিকারক নয়। আসলে বছরের বিভিন্ন সময়ে আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে সব জায়গার গাছ সঠিক ভাবে জল পায় না। বিশেষত খরাপ্রবণ এলাকায় জলের অভাবে প্রতিবছর বহু ফসল নষ্ট হয়। সেই কারণেই অল্প জলের উপস্থিতিতেই কীভাবে গাছের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা যায়, বিগত কয়েক বছর ধরে তা নিয়েই চলছিল গবেষণা। তারই ফলাফল হিসেবে সম্প্রতি উঠে এসেছে এই তথ্য। যার ফলে বিশ্বজোড়া খাদ্যসমস্যার এক নতুন সমাধানের দিকেই এগিয়ে গিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।