আমাদের সব না-জানা, না-বোঝার চটজলদি মুশকিল আসান ইন্টারনেট। ব্যবহারিক জীবনে অনেক কিছু শিখতে, বুঝতেই ইন্টারনেটের দ্বারস্থ হই আমরা। তাই বলে চুরি? হ্যা, তেমন ঘটনাই ঘটেছে। অনলাইন থেকে চুরির খুঁটিনাটি শিখেই সম্প্রতি সিঁদ ভাঙল এক চোর। তবে শেষরক্ষা হল না। কোথায় ঘটেছে এমন ঘটনা, আসুন শুনে নেওয়া যাক।
করোনা পরবর্তী সময় থেকেই অনলাইনের রমরমা। স্কুল থেকে অফিস, সবই এখন অনলাইনে। করোনার প্রকোপ কমলেও অনলাইন পিছু ছাড়েনি আমাদের। অনলাইনেই ভূগোল-ইতিহাস, অঙ্ক-ভৌতবিজ্ঞান শিখছে স্কুলপড়ুয়ারা। তা এত কিছু যদি অনলাইনে শেখা যায়, তবে চুরি কেন নয়।
তাই অনলাইনেই চুরির সাতসতেরো শেখার চেষ্টা করেছিল ৩৮ বছরের এক ব্যক্তি। তিনি আবার পেশায় কাঠের মিস্ত্রি। ফলে সে বিদ্যা আয়ত্ত করতে সময় লাগল না তার। অনলাইনে চুরি নিয়ে পড়াশোনা শেষ হলে হাতেকলমে চুরিবিদ্যা যাচাইয়ের জন্য বেরিয়ে পড়ল সে।
আরও শুনুন: চাষের থেকে বরং হেলিকপ্টার ভাড়া দেওয়া লাভজনক, ব্যবসার জন্য ৬.৬ কোটি ঋণ চাইলেন কৃষক
শুভক্ষণ দেখে মুম্বইয়ের নাসালোপাড়া এলাকার একটি বাড়ির সিঁদটি কাটল সেই ব্যক্তি। তবে ওই যে অনলাইন ক্লাসের জের। ভাল করে বোধহয় গোটা ব্যাপারটা শেখা হয়নি তার। তাই শেষরক্ষা হল না। অচিরেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে গেল সেই চোর।
না, প্রাথমিক প্রস্তুতিতে এতটুকু ত্রুটি ছিল না তার। আগে থেকে খোঁজখবর নিয়ে বাড়ি বেছে রেখেছিল সে। যে বাড়িটি চুরির জন্য নির্বাচন করেছিল, সে বাড়ির বাসিন্দারা ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন বাইরে। তক্কে তক্কে ছিল দিলশান শেখ নামে ওই ব্যক্তি। সময় সুযোগ বুঝে বাড়ির তালা ভেঙে লুঠপাট চালায় সে। কিন্তু ওই যে বললাম, অনলাইনে ভাল মতো রপ্ত করতে পারেনি চুরিবিদ্যা। তাই সিসিটিভি-র বিষয়টি মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল পুরোপুরি। আর কাল হল সেটাই।
আরও শুনুন: গোঁফ-দাড়ি নৈব নৈব চ! বিয়ের বাজারে পাত্রকে হতে হবে ‘ক্লিন শেভেন’, জারি নির্দেশিকা
প্রাথমিক ভাবে প্রতিবেশীরা কেউই সন্দেহ করেননি। ওই এলাকায় বহু বাড়িতেই কাঠের কাজ করেছেন তিনি আগে। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ জানতে পারে, চুরির ঘটনার নেপথ্যের পিছনে রয়েছে দিলশান নামে ওই মিস্ত্রিই। শুরু হয় তল্লাশি। প্রাথমিক ভাবে এলাকা ছেড়ে পালাতে সফল হলেও পরে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দিলশানকে। সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসা হয়েছে মুম্বইয়ে।
তার কাছ থেকে মোট ১০ লক্ষ টাকার সোনা ও গয়না উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে পুলিশের কাছে দিলশাদ জানিয়েছে, কাঠের মিস্ত্রির কাজ মোটেই ভাল চলছিল না তার। পরের পর লোকসান। ফলে বাধ্য হয়েই চুরির পথ বেছে নিতে হয়েছিল তাকে। তার জন্য অনলাইনে চুরির নানা খুঁটিনাটি শিখেছিল বলেও পুলিশকে জানিয়েছে সে। আপাতত শ্রীঘরেই দিন কাটাতে হচ্ছে দিলশানকে।
সাধে কি আর বলে, চুরিবিদ্যা মহাবিদ্যা, যদি না পড়ো ধরা।