স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে বয়স যে কোনও বাধা নয়, তা ফের প্রমাণ করে দিলেন তিনি। ৮৭ বছর বয়সে দ্বিতীয়বার স্নাতকোত্তর হলেন এই বৃদ্ধা। একইসঙ্গে গড়লেন সবচেয়ে বয়স্ক হিসেবে এই ডিগ্রি পাওয়ার রেকর্ড। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
জ্ঞান অর্জনের পথে বয়স কোনও বাধা নয়। নিজের জীবনে এ কথাকেই অক্ষরে অক্ষরে সত্যি করে তুলেছেন ৮৭ বছর বয়সি এই মহিলা। তাই এই বয়সেই দ্বিতীয়বার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে ফেলেছেন এই মহিলা। এই প্রবাসী ভারতীয় মহিলার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন সকলেই। ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করা এই বৃদ্ধা সবচেয়ে বয়স্ক হিসেবে এই ডিগ্রি পাওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। আর সেই কারণেই কানাডা প্রবাসী এই মহিলাকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেছে সেখানকার প্রাদেশিক পার্লামেন্ট।
আরও শুনুন: দুই সন্তানের একজন হিন্দু অন্যজন মুসলিম, মহিলার শেষকৃত্যে বাধল জোর বিবাদ
সত্যি বলতে, পরিস্থিতির চাপে কত সময়ই তো স্বপ্নের হাত ছেড়ে দিতে হয় আমাদের। আর মেয়েদের বেলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই চাপের বহর আরও বেশি। সমাজ আর সংসারের চাপে তাদের অনেকেরই নিজেদের স্বপ্নটুকু কখন যেন তলিয়ে যায়। কিন্তু সেই হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন নিয়ে হাহুতাশ করার দলে পড়েন না ভারথা শন্মুগানাথান। বরং নিজের স্বপ্ন সফল করে তুলতে যা যা করা প্রয়োজন ছিল, তা করতে বিন্দুমাত্র পিছপা হননি তিনি, এমনটাই বলছেন সকলে।
জানা গিয়েছে, এ দেশেই পড়াশোনার গোড়াপত্তন হয়েছিল তাঁর। যদিও স্নাতক হওয়া অবধিই ছিল তার দৌড়। কিন্তু সেখানেই থেমে যেতে রাজি ছিলেন না এই মহিলা। পরবর্তী কালে সেলন ইউনিভার্সিটি থেকে এডুকেশনে ডিপ্লোমা অর্জন করেন তিনি। কিন্তু তাতেও মন ভরেনি। বয়স যখন পঞ্চাশ পেরিয়েছে, সেই সময় আপ্রাণ চেষ্টা করে লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ জোগাড় করে ফেলেন তিনি। মধ্য-পঞ্চাশে পা রেখে অর্জন করেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।
আরও শুনুন: হাত ফসকে খাবার পড়ল মেট্রোয়, নিজে হাতে পরিষ্কার করে প্রশংসা কুড়োল খুদে
কী ভাবছেন, এখানেই শেষ? আজ্ঞে না। চারটি মহাদেশে শিক্ষকতা করে এসেও জ্ঞানের আগ্রহ এতটুকু কমেনি এই বৃদ্ধার। ২০১৯ সালে তিনি জানতে পারেন, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি বয়স্কদের জন্য তাদের কোর্স ফি-তে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে। মেয়ের উৎসাহে ফের ইউনিভার্সিটিতে ভরতি হয়ে যান তিনি। আর মহামারীর বিপর্যয় সত্ত্বেও পড়াশোনা শেষ করে দ্বিতীয়বারের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিটিও অর্জন করে ফেলেন।
কানাডার ওই পার্লামেন্টে বৃদ্ধাকে সম্মান জানানোর সময় তাঁকে উঠে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানিয়েছেন সব সদস্যরাই। বৃদ্ধার এই নজিরবিহীন কৃতিত্ব যে অনুপ্রেরণা জোগাবে সকলকে, সে বিষয়ে একমত নেটিজেনরাও।