চুরি গেছে আস্ত একটা ব্রিজ! তা-ও আবার ছোটখাটো কিছু নয়, একেবারে ৫৮ ফুট লম্বা সেতু। অবাক হচ্ছেন! তা হওয়ারই কথা বটে! এমন চুরির ঘটনা সাধারণ মানুষ কেন, পুলিশরাও কখনও শোনেননি। কিন্তু ঘটনা সত্যি। আসুন শুনে নিই এই আজব চুরির কথা।
নানারকম অদ্ভুত চুরির কথা হামেশাই শোনা যায়। সে সব নিয়ে বিভিন্ন ভাষায় সিনেমাও হয়েছে। যেখানে দুর্ধর্ষ চোর-ই নায়ক। মূল্যবান রত্ন থেকে দুষ্প্রাপ্য জিনিস – কত কিছু চুরির কাহিনি উঠে আসে সেইসব ছবির গল্পে। কিন্তু কখনও বাস্তব যেন সিনেমাকেও হার মানায়। কেননা পুলিশের খাতায় ওঠা সাম্প্রতিক এক চুরির ঘটনা থেকে জানা যাচ্ছে, চুরি হয়ে গেছে আস্ত একটা সেতু। ৫৮ ফুট লম্বা সেতুটিকে নাকি চোরেরা বেমালুম হাওয়া করে দিয়েছে। চুরির হেন নমুনা গোটা বিশ্বেই বিরল। আর তাই এ খবর সামনে আসা মাত্র সারা দুনিয়ারই বলতে গেলে চোখ কপালে! পুকুরচুরি অব্ধি শোনা ছিল, কিন্তু এত লম্বা একটা সেতুও যে চুরি হয়ে যেতে পারে, কে জানত!
আরও শুনুন: মুখে খাবার তোলেননি টানা ৭৬ বছর! এখনও রহস্যে মোড়া যোগী প্রহ্লাদের কাহিনি
ঘটনার গোড়ার দিকে একটু চোখ রাখা যাক। জানা যাচ্ছে, প্রায় দু-দশক আগে সেতুটি ওহিও-র একটি নদীর উপর বসানো হয়েছিল। লোক চলাচলের সুবিধার্থেই তা করা। জলাজমি পুনরুদ্ধার ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত প্রকল্পের অংশ হিসাবেই এই সেতুর আবির্ভাব। পরবর্তীতে ঠিক করা হয়, লম্বা এই সেতুটিকে অন্য কাজে লাগানো হবে। ফলে সেতুটিকে খুলে নিয়ে পাশের একটি জমিতে রাখা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন পড়ে থাকাতেই সেটির উপর নজর যায় চোর বাবাজিদের। স্থানীয়রা বলছেন, ব্রিজটির যেখানে রাখা ছিল তার চারপাশে বুনো ঝোপ জন্মে গিয়েছিল। চোরেরা প্রথমে সেই ঝোপ পরিষ্কার করে। তারপর ধাপে ধাপে ব্রিজের অংশবিশেষ চুরি করতে থাকে। এর জন্য তাদের রীতিমতো কসরতও করতে হয়েছে। কেননা অতবড় একটা সেতুকে তো আর গায়েব করে দেওয়া চাট্টিখানি কম্ম নয়। ফলে সময় নিয়ে ধীরে ধীরে ব্রিজটিকে টুকরো টুকরো করতে হয়েছে। অতঃপর ভ্যানিশ! একদিন দেখা যায় মাঠের মধ্যে শুধু ঝোপঝাড়ই রয়ে আছে। আর তার উপর ব্রিজটি যে ছিল তার চিহ্নটুকু রয়ে গিয়েছে মাত্র। বাকি সব হাওয়া। পুলিশের তথ্যও জানাচ্ছে, ওহিও-র ব্রিজটি নাকি মাসখানেক আগে চুরি হয়ে গিয়েছে।
আরও শুনুন: শত্রুদের চোখে ধুলো দিতে লুকিয়ে ফেলা হয়েছিল আস্ত তাজমহল, কীভাবে জানেন?
এমন ঘটনায় অবাক খোদ পুলিশকর্তারাও। পুলিশের মুখপাত্র মাইক মিলার জানাচ্ছেন, সেতুর অধিকাংশ জুড়ে ছিল পলিমার জাতীয় পদার্থ। আর ধাতব নাট-বল্টু ইত্যাদি দিয়ে সেটি ভাগে ভাগে জোড়া ছিল। ফলে কেউ যদি যন্ত্রপাতি দিয়ে ওই জোড়মুখগুলো খুলতে পারে, তাহলে ব্রিজ চুরি করা অসম্ভব কিছু নয়। তবে, এতবড় কাজ যে একদিনে হয়নি সে ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত। স্থানীয়দের চোখ এড়িয়ে কী করে এমন কাজ হয়ে গেল, তা ভেবেই তাজ্জব পুলিশ। এমনকি ব্রিজের মেটিরিয়াল দিয়ে চোরেরা যে কী করবে, তা-ও তাঁরা ভেবে পাচ্ছেন না। তাঁদের বিশ্বাস, স্থানীয়দের সাহায্য পেলেই চোরেদের ধরা সম্ভব হবে। কারও কাছে কোনও তথ্য থাকলে তা জানানোর আরজি জানিয়েছে পুলিশ।
বাকি অংশ শুনে নিন।