সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন খোদ ‘রাম’। সঙ্গীতশিল্পীর স্মরণে অযোধ্যায় বসেছে ৪০ ফুটের বীণা। কিন্তু অযোধ্যার রাম তো রয়েছেন মন্দিরের গর্ভগৃহে। তাহলে সঙ্গীতশিল্পীকে শ্রদ্ধা জানালেন কোন ‘রাম’? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
তাঁর কণ্ঠে রামের ভজন শুনে মুগ্ধ হতেন আপামর দেশবাসী। রামমন্দির তৈরির আবহে সেই লতা মঙ্গেশকরকেই শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অযোধ্যা। শিল্পীর নামে তৈরি হয়েছে ‘লতা মঙ্গেশকর স্মৃতি চক’। যেখানে ৪০ ফুটের এক বীণার মূর্তি বসানো হয়েছে। তবে সেই বীণার সঙ্গেও জড়িয়েছে রামের নাম।
আরও শুনুন: নেই তেমন কথাবার্তা! নিঃশব্দেই একাকিত্বের মহামারির কবলে ভারতীয় পুরুষরা
রাম মন্দির তৈরির আবহে বিশেষ ভাবে সাজানো হয়েছে অযোধ্যা। মন্দির নগরীর রাস্তাঘাট দোকানপাট সবেতেই যেন মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে রামনামের আবীর। মন্দির চত্বর তো বটেই, তার আশেপাশের অঞ্চলও আমূল বদলে ফেলা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয়েছে অসাধারণ কিছু স্থাপত্য। এই আবহে দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে প্রায় ৪০ ফুটের এক বীণা। ভারতরত্ন লতা মঙ্গেশকরকে শ্রদ্ধা জানাতে, অযোধ্যার ব্যস্ততম ক্রসিং নয়া ঘাটের নাম বদলে হয়েছে ‘লতা মঙ্গেশকর স্মৃতি চক’। ৪০ ফুটের বীণাটা বসানো হয়েছে ওই ক্রসিং এই। তবে এর সঙ্গে রামমন্দির উদ্বোধনের সরাসরি সম্পর্ক নেই। কারণ এই মূর্তিটি সম্পূর্ণভাবে লতা মঙ্গেশকরকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশে তৈরি। ২০২২ সালে সুরসম্রাজ্ঞীর মৃত্যুর পরই অযোধ্যার ওই ক্রসি-এর নাম বদলানোর কথা ঘোষণা করেন যোগী আদিত্যনাথ। শিল্পীর ৯৩তম জন্মদিনেই উদ্বোধন হয় ওই স্থানের। সেইসঙ্গে বসে ৪০ ফুটের বীণা। কিছুদিন আগে, খোদ যোগী আদিত্যনাথ এর সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলেন। তা নিয়ে বেশ চর্চা হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। তবে স্থাপত্য হিসেবে এই মূর্তি যতই চর্চা হোক, অন্য একটা কারণে এই মূর্তিটিকে বিশেষ বলতেই হয়। তা হল, এর নির্মাতা। এখানেই বীণার সঙ্গে মিশেছে রামের নাম।
আরও শুনুন: লতা-গুলজার যুগলবন্দি, সুরসম্রাজ্ঞীর জন্মদিনে উপহার দিলেন বিশাল ভরদ্বাজ
ঠিক ধরেছেন, এই বীণা যিনি তৈরি করেছেন তাঁর নামেও রয়েছেন ‘রাম’। অযোধ্যার এই বিশেষ স্থাপত্যটি গড়েছেন নয়ডা নিবাসী রাম ভাঞ্জি সুতার। অনেকের কাছে এই নাম অপরিচিত হলেও, শিল্পী মহলে রাম সুতার বেশ জনপ্রিয়। গুজরাটের স্ট্যাচু অফ ইউনিটিও তাঁরই গড়া। যা বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি হিসেবে পরিচিত। সেই রাম সুতারের গড়া মূর্তির মাধ্যমে সুরসম্রাজ্ঞীকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে যোগী সরকার। প্রায় ১৪ টন অজনএর ওই বীণা আলাদা ভাবে তৈরি করে নিয়ে আসা হয় অযোধ্যায়। তারপর লতা মঙ্গেশকর স্মৃতি চক-এ সেটি স্থাপন করা হয়। খোদ শিল্পীও ছিলেন সেইসময়। জানা গিয়েছে, শিল্পীকে এইভাবে শ্রদ্ধা জানাতে প্রায় ৮ কোটি টাকা খরচ করেছে যোগী সরকার। এখানেই শেষ নয়, ওই স্থানে লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া ভজন চালানো হবে বলেও জানা গিয়েছে। রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর থেকে এমনিই ভক্তের ভিড় উপচে পড়ছে অযোধ্যায়। তবে রাম মন্দিরের পাশাপাশি অযোধ্যার এই বীণার মূর্তিও তাঁদের কাছে দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। যা নতুন করে মনে করিয়ে দিচ্ছে সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরকে।