যে কোনও শুভ অনুষ্ঠান মিষ্টিমুখ না করলে সম্পূর্ণ হয় না। তাছাড়া ভাইফোঁটা বা রাখিবন্ধন উৎসবে ভাইয়ের সামনে মিষ্টির প্লেট সাজিয়ে দেওয়া এক প্রচলিত রীতিও বটে। প্রতিবছরই এই দুই উৎসবের আগে দোকানে গেলেই নিত্যনতুন মিষ্টির দেখা মেলে। তবে সেই অভিনবত্বে এবার সবাইকে ছাপিয়ে গেছে আগ্রার একটি দোকান। রাখিবন্ধন উৎসব উপলক্ষে সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ‘সোনার মিষ্টি’। না, সোনালি রং-এর মিষ্টি নয়। একেবারে ২৪ ক্যারাট সোনা রয়েছে এই মিষ্টিতে। কত টাকা দাম সেই মিষ্টির? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উদযাপন করেছিলেন রাখিবন্ধন উৎসব। যদিও তার বহু আগে থেকেই সারা দেশ জুড়ে এই উৎসবের প্রচলন ছিল। ভাইয়ের মঙ্গলকামনায় একটি রঙিন সুতো বা কারুকাজ করা রাখি ভাইয়ের হাতে বেঁধে দেন বোনেরা। আর সেই সঙ্গে চল আছে মিষ্টিমুখ করানোর। প্রথমে রাখিবন্ধন আর তারপর একে অপরকে মিষ্টিমুখ করানো। এভাবেই পালন করা হয় এই উৎসব।
আরও শুনুন: ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ উদ্যোগে শামিল নয় RSS! আক্রমণ কংগ্রেসের, কী জবাব সঙ্ঘের?
আসন্ন রাখি উৎসবের কথা মাথায় রেখেই তাই নতুন ধরনের এক মিষ্টি বানিয়েছে আগ্রার একটি দোকান। এই অঞ্চলের প্রচলিত ও বিখ্যাত এক মিষ্টি হল ‘ঘেভার’। গাওয়া ঘি দিয়ে তৈরি করা হয় বলেই এমন নাম। শ্রাবণ মাসের প্রচলিত উৎসবগুলির জন্য এই ‘ঘেভর’ নামের মিষ্টিটি বেশি করে বানানো হয়। এমনিতে এর দাম হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কিলো। সেই মিষ্টিরই নতুন এক সংস্করণ বানিয়েছেন এক মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক সংস্থা। সেখানকার কর্মীরা, নতুন মিষ্টির উপরে জুড়ে দিয়েছেন একটি পাতলা সোনার পর্দা। আর নাম পালটে দিয়ে লিখেছেন “গোল্ডেন ঘেভার”। তার দাম হয়েছে কিলো প্রতি ২৫ হাজার টাকা। সাধারণত এই মিষ্টির প্রাথমিক উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয় ময়দা, ঘি ও চিনির রস। ‘গোল্ডেন ঘেভর’ তৈরি করতেও তাই করা হয়েছে। তবে সঙ্গে মেশানো হয়েছে পেস্তা, বাদাম, আখরোট এবং আরও বেশ কিছু ড্রাই ফ্রুটস। এবং সব শেষে মুড়ে দেওয়া হয়েছে ওই সোনার পর্দা দিয়ে। এবার যে মিষ্টিতে এত দামি উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে তার দাম তো বেশি হবেই! পিস হিসেবেও পাওয়া যাচ্ছে এই মিষ্টি। মাঝারি মাপের এক পিস মিষ্টির দাম হাজার টাকা। তাতেও থেমে নেই গ্রাহকরা। দোকান মালিকের বক্তব্য অনুযায়ী ইতিমধ্যেই নাকি ১২ কেজি মিষ্টি বিক্রি-ও হয়ে গেছে।
আরও শুনুন: ভারতের হিজাব বিতর্কে ছিল সমর্থন, আল কায়দা প্রধানের নিকেশে মিলল ‘সুবিচার’, বললেন ওবামা
সেই প্রসঙ্গে দোকান মালিকও বেশ উচ্ছসিত হয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, প্রথমে এত দামি মিষ্টি বিক্রি হবে কি না, এই তাঁর যথেষ্ট সন্দেহ ছিল। তবে তা মিটিয়ে দেন ক্রেতারাই। তাঁদের আগ্রহ আর উৎসাহ দেখেই আরও ‘গোল্ডেন ঘেবর’ বানানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তিনি আরও বলেন প্রতি বছরই এই উৎসবের সময় নতুন কিছু মিষ্টি বানানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। বিগত দু-বছরের মহামারীর জেরে তেমন কিছুই করা হয়নি। তাই এই বছর এমন অভিনব আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। ‘গোল্ডেন গেভর’ যে এবারের রাখিকে স্পেশাল করতে চলেছে, তা বলাই যায়।