চারিদিকে ঘন জঙ্গল। মানুষের চিহ্নমাত্র নেই। অথচ একসময় সেখানেই নাকি আস্ত একটা শহর ছিল। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। জঙ্গলের নীচেই চাপা পড়েছিল ২০০০ বছরের এক পুরনো শহর। কীভাবে খোঁজ মিলল সেই শহরের? আসুন শুনে নিই।
গভীর জঙ্গল। অধিকাংশ গাছই আকাশছোঁয়া। দিনের বেলাতেও সেখানে এতটুকু ঢুকতে পারে না সূর্যের আলো। অথচ সেই জনমানবহীন অরণ্যই নাকি একসময় অনেক মানুষের বসতি ছিল। কারণ একসময় এখানেই ছিল একটা আস্ত শহর।
আরও শুনুন: ৩ লাখের পেয়ালায় চা পান নীতা আম্বানির! কেন এই কাপের এত দাম?
কথা বলছি মধ্য আমেরিকার গুয়াতেমালার এক রেনফরেস্ট সম্পর্কে। সম্প্রতি সেই জঙ্গলের মধ্যেই একটা আস্ত শহরের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীর দল। তাঁদের দাবি প্রায় ২০০০ বছর আগে মাটির নীচে চাপা পড়েছিল ওই শহর। ফলত বর্তমানে তার কোনও চিহ্নই সাধারণ কারও পক্ষে খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। তবে বিজ্ঞানের অত্যাধুনিক যন্ত্র সেই কাজ অনায়াসে করে ফেলেছে। লেজার টেকনোলজির মাধ্যমে দেখা গিয়েছে এখনও মাটির গভীরে শহরের কিছু ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। যার থেকে সেই শহর সম্পর্কে কিছুটা ধারণা করার চেষ্টা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি এই শহর মায়া সভ্যতার সময় তৈরি হয়েছিল। প্রায় ৬৫০ বর্গমাইল জুড়ে ছড়িয়ে ছিল এই প্রাচীন শহরটি। তবে সবথেকে আশ্চর্যের বিষয়, এত পুরনো হওয়া সত্ত্বেও সেখানে রীতিমতো আধুনিক কিছু ব্যবস্থার নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় খেলার কথা। কারণ এখানে এমন কিছু জায়গা পাওয়া গিয়েছে, যা দেখলে মনে হবে ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলার কোর্ট। এছাড়াও গবেষকদের দাবি, এই শহরের মানুষজন সেচ ব্যবস্থা সম্পর্কে খুবই ওয়াকিবহাল ছিলেন। সেখানে একাধিক জলাধারের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। আবার সেই শহরে নাকি অনেক খালও ছিল। অন্তত বিজ্ঞানীদের তোলা ছবিতে সেই ধারণা স্পষ্ট হতে বাধ্য। এখানেই শেষ নয়, বেশ কিছু স্থাপত্যের আকার দেখে গবেষকদের মনে হয়েছে এই শহরে একসময় পিরামিড ছিল। যদিও সঠিকভাবে তা প্রমাণ করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: পুরুষের মতো পোশাক পরলেই চাকরি যাবে মহিলাদের, নির্দেশ সংস্থার
প্রায়শই সে দেশের গভীর জঙ্গলগুলিতে ক্ষেত্র সমীক্ষা করা হয়। বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে সেই কাজ আকাশপথেই সেরে ফেলেন বিজ্ঞানীরা। এমনই এক সমীক্ষা চলাকালীন এই প্রাচীন শহরের হদিশ মেলে। তড়িঘড়ি বিজ্ঞানীরা জঙ্গলে গিয়ে তার অস্তিত্ব খোঁজার চেষ্টা করেন। সেখানেই উঠে আসে একাধিক তথ্য। সঠিক ভাবে কোনও নিদর্শন না পাওয়া গেলেও, এই ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে এই শহর যথেষ্ট আধুনিক ছিল। সেখানকার মানুষজন বেশ কিছু প্রযুক্তির ব্যবহারও হয়তো জানতেন। তবে নিজেদের ধারণা আরও পরিষ্কার করার জন্য এই অঞ্চলে গবেষণা জারি রেখেছেন ওই বিজ্ঞানীরা।