হাজার রকম ব্যস্ততায় গল্প পড়ার সময় মিলছে না কিছুতেই! অবসর পেলে তাই গল্প শুনতে ইচ্ছে করে? আপনার জন্য হপ্তাশেষের গল্প নিয়ে হাজির ‘সংবাদ প্রতিদিন শোনো’।
সমস্যা শুরু হয় অফিসে। টিফিনের খানিক আগে। নীলমণি তালুকদারের ঘর থেকে বেরনোর পর পরই বলাইবাবুর মনে হল, গলায় কিছু আটকেছে। শ্লেষ্মা ধরনের কিছু। বারদুয়েক গলা খাঁকারি দিলেন। এই ধরনের সমস্যায় গলা খাঁকারি হল অব্যর্থ, গলা দ্রুত সাফ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সাফ হল না, উল্টে গলা থেকে চাপা এক ধরনের আওয়াজ বের হল। সেই আওয়াজ একটু অচেনা।
বাহান্ন বছর তিন মাস বয়স বলাই সান্যালের। অফিসে পদের নাম যতই পাল্টাক, আসলে তিনি একজন করণিক, ঘেঁষটে ‘লোয়ার ডিভিশন’ থেকে ‘আপার ডিভিশন’ পর্যন্ত উঠেছেন। উন্নতির ইচ্ছে ছিল, কিন্তু মুরদে কুলোয়নি। সেই বলাইবাবু নিজের গলার ওপর বিরক্ত হলেন। কিছু আটকেছে যখন থাকুক আটকে, গলা নিজে বুঝে নিক। গলা নিয়ে মাথা ঘামানোর মতো সময় তাঁর হাতে নেই। এইমাত্র নীলমণি তালুকদার, এই অফিসের ‘বস’, হম্বিতম্বিতে যিনি ফিটন গাড়ি যুগের ‘বড়বাবু’, তিন-তিনটে ঢাউস ফাইল ঘাড়ে চাপিয়েছেন। বলাইবাবু নীলমণি তালুকদারকে মনে মনে ‘নীলামজাদা’ ডাকেন। ‘নীলমণি’ এবং ‘হারামজাদা’-র সন্ধি। ডাকার কারণও রয়েছে। লোকটি অতি পাজি। দপ্তরের প্রধান হয়েও দলবাজিতে ওস্তাদ। পেয়ারের স্টাফদের সুবিধা দেন। তারা ইচ্ছেমতো অফিসে আসে যায়, দেড়খানা ফাইল নিয়ে গোটা দিন বসে থাকে। ‘নীলামজাদা’ দেখেও দেখেন না। কারণ এরা তাঁর ‘উপরি’-র কালেক্টর।…
১৬ এপ্রিল (২০২৩) ‘রোববার’-এর ‘গল্প জীবন’ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল প্রখ্যাত সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্তর গল্প ‘একদা এক বলাইবাবুর গলায়’। সেই গল্পটিই এবার শুনে নিন সংবাদ প্রতিদিন শোনো-য়।
পাঠ শঙ্খ বিশ্বাস, চৈতালী বক্সী , সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভদীপ রায়।
শব্দগ্রহণ ও আবহ অঙ্কুর নন্দী।
অলংকরণ সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়।