সকালে ঘুম ভাঙতে না ভাঙতেই চোখ আটকে যায় মোবাইলের স্ক্রিনে। এমনটাই কি আপনার রোজকার অভ্যাস? কিন্তু জানেন কি, এই অভ্যাসের ফলে ঠিক কীভাবে ক্ষতি হচ্ছে আপনার শরীর এবং মনের? শুনে নিন সে কথা।
আজকাল আমরা যে যুগে বাস করছি, তাকে ভারচুয়াল যুগ নাম দিলে বোধহয় খুব একটা ভুল হবে না। কাজের জন্যই হোক কি সামাজিকতা রক্ষার খাতিরেই হোক, প্রায় সারাদিন আমরা অনলাইন দুনিয়ায় ঘোরাফেরা করি। এর ফলে স্ক্রিন টাইম বেড়ে যায় অনেকখানি। মোবাইল, কম্পিউটার, আইপ্যাড, নিদেনপক্ষে টেলিভিশন, কোনও না কোনও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের স্ক্রিনে আমাদের চোখ আটকেই থাকে। এই অভ্যাস এমনভাবেই গ্রাস করে ফেলেছে আমাদের, যে, ঘুমোতে যাওয়ার আগে এবং ঘুম থেকে ওঠার পরেই আমরা আবার এই দুনিয়ায় ঢুকে পড়ি। অর্থাৎ আমাদের চোখ খুব কমই বিশ্রাম পায়।
আরও শুনুন: ঘুমের মধ্যে ঘেমেনেয়ে একশা! ওমিক্রনে আক্রান্ত হননি তো?
আপনিই বলুন তো, ঘুমনোর সময় আপনার মোবাইল ফোনটি বালিশের পাশেই থাকে কি না? সকালে ঘুম ভাঙলেই প্রায় প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় হাত সেদিকেই চলে যায়, তাই না? আর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় ফোন স্ক্রল করা। একের পর এক নোটিফিকেশন, কল রেজিস্টার, ইনবক্স, অফিশিয়াল মেল, সবকিছুর মধ্যে ঢুকে পড়েন আপনি। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় একবার উঁকি মারলে তো হয়েই গেল। একটা গোটা রাতের মধ্যে কত কিছু ঘটে গিয়েছে, তার খতিয়ান নিতে আপনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আচ্ছা, এবার আপনিই বলুন, কয়েক ঘণ্টার ঘুমের পর মাথা যেমন তরতাজা ছিল, সকাল সকাল এত তথ্য সেখানে ভরে ফেলার পর ঠিক কেমন লাগে?
আপনি কি জানেন, এই অভ্যাসের ফলে আদতে সারাদিনের কাজের রুটিনেই ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন আপনি? একইসঙ্গে, ক্ষতি করছেন আপনার শরীরেরও?
ফোনের নীল আলো এমনিতেই চোখের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। আর সকালবেলা ঘুমভাঙা চোখ যদি দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল থেকে নির্গত রশ্মি সহ্য করে, তা চোখের উপর দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
আরও শুনুন: রাত জাগার কারণে দিনভর ক্লান্ত লাগে! নিজেকে তরতাজা রাখবেন কীভাবে?
এ তো গেল শরীরের ক্ষতির কথা। আর মনের ক্ষতি? ঘুমের নিশ্চিন্ত আরাম ছেড়ে বেরিয়ে রোজকার বাস্তব দুনিয়ায় ফিরতে কিছুটা সময় লাগে। তার আগেই যদি ফোনের মাধ্যমে কাজের জগতের বিবিধ খবর, নিজের কাজের তালিকা আপনার সামনে এসে পড়ে, তাহলে অপ্রস্তুত অবস্থায় একটা বড় চাপের মধ্যে পড়তে হয়। যা আপনার মনকে অস্থির করে দিতে পারে। এতে আখেরে সেই কাজগুলি সুষ্ঠুভাবে সারতেই সমস্যা হবে। আর যদি এইভাবে কোনও খারাপ খবর এসে হাজির হয়, তা অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি প্রভাব ফেলবে আপনার মনে।
তাহলে ভেবে দেখুন, এতদিন অজান্তেই নিজের বেশ খানিকটা ক্ষতি করে চলেছিলেন আপনি। এবার কিন্তু তা সামলে নেওয়ার ভার আপনার হাতেই।