বিশ্ব অ্যালঝাইমার্স দিবসে বাবাকে নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন মীর। লিখেছেন ডিমেনশিয়ার সঙ্গে কীভাবে যুঝছেন তাঁর বাবা। ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমার্স রোগের শিকার আরও অনেক মানুষই। কীভাবে বোঝা যাবে এই রোগের কথা? এই রোগে আক্রান্ত হলে তার সমাধানই বা কী? জানালেন মেডিক্যাল কলেজের নিউরো-মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক, ডঃ দেবাঞ্জন পালিত।
বাড়ির বয়স্ক মানুষটি প্রায়ই কি ভুলে যান কিছু না কিছু? কিংবা কাজে ভুল করাটা তাঁর প্রায় অভ্যাস হয়েই দাঁড়িয়েছে? এইসব কারণে তাঁর উপরে রেগে উঠছেন কি? ভাল করে ভেবে নিন, এই ভুলে যাওয়া আসলে কোনও রোগের কারণে নয় তো?
আরও শুনুন: কেন তরুণরা আক্রান্ত হচ্ছেন হৃদরোগে? কী বলছেন চিকিৎসকরা?
মঙ্গলবার, অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর সবার উদ্দেশে এই সতর্কতাই দিলেন জনপ্রিয় সঞ্চালক মীর আফসার আলি। সোশাল মিডিয়ায় তিনি লিখলেন, ‘আপনার বাড়িতেও কি এমন কেউ আছেন, যিনি কাজে মন দিতে পারছেন না, সব ভুলে যাচ্ছেন এক এক করে? অবহেলা করবেন না। দেরি করবেন না। তাঁদের দূরে ঠেলে দেবেন না। যাঁদের আজকাল মনে থাকে না, তাঁদের আরও বেশি করে মনে ধরে রাখুন।’
আরও শুনুন: কোভিড থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ লাগবেই? কী বলছে গবেষণা?
হঠাৎ কেন এ কথা বললেন মীর? আসলে, মীরের বাবা গত চার বছর ধরে লড়াই করছেন ডিমেনশিয়ার সঙ্গে। স্মৃতি আর সঙ্গ দেয় না তাঁকে। মীরের বাবার মতো, পৃথিবী জুড়ে আরও অনেক মানুষই এই রোগের শিকার। তাঁদের কথা মনে করে প্রতি বছর ২১ সেপ্টেম্বর দিনটিকে পালন করা হয় বিশ্ব অ্যালঝাইমার্স দিবস হিসেবে। এই ভুলে যাওয়ার অসুখটিকে প্রথম চিহ্নিত করেছিলেন জার্মান সাইকায়াট্রিস্ট অ্যালয় অ্যালঝাইমার। তাঁর নামেই এই রোগের নামকরণ করা হয়।
কীভাবে বোঝা যাবে কেউ অ্যালঝাইমার্স রোগে আক্রান্ত কি না? সে কথা জানাচ্ছেন মেডিক্যাল কলেজের নিউরো-মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক, ডঃ দেবাঞ্জন পালিত। তিনি জানালেন, এই রোগে প্রথমে সাধারণ কিছু ভুলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। যাকে স্বাভাবিকভাবেই কেউ বিশেষ গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু ক্রমশ তা বাড়তে থাকে। দৈনন্দিন কাজ কীভাবে করতে হয়, কীভাবে ফোন বা টিভির রিমোট কাজ করে, তাও মানুষ ভুলে যেতে পারে। প্রভাব পড়ে বুদ্ধি-বিবেচনাতেও।
কীভাবে মোকাবিলা করা যেতে পারে এই অসুখের? ডঃ পালিত জানালেন, প্রথমদিকেই ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া হলে কিছু সুবিধা হতে পারে। পাশাপাশি রোগীর বাড়ির মানুষদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, রোগীকে মানসিক সাপোর্ট দিন। বুঝতে দেবেন না যে তাঁর কোনও সমস্যা রয়েছে।
অর্থাৎ, সেই গোড়ার কথা। একটু সময় দিন আপনার কাছের মানুষদের। ভালবাসুন। ধৈর্য ধরুন। হেরে যাক সবরকমের অ-সুখ।