যে কোনও শারীরিক সমস্যায় আমাদের ছুটে যেতেই হয় চিকিৎসকের কাছে। নানা ধরনের ওযুধ খেতে হয়, যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকে। আমাদের রান্নাঘরেই আছে এমন সব জিনিস যার অনেক রোগের দাওয়াই।
এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি তিন বন্ধু। ওঁরা যখন একসঙ্গে থাকে, তখন নাম গরমমশলা। এই গরমমশলা নামের সঙ্গে উত্তেজক বা গুরুপাক শব্দটা জড়িয়ে থাকলেও, দারচিনির স্বভাব কিন্তু একেবারেই আলাদা। আগে রাজা-রাজড়ার মোগলাই খানার সঙ্গে জুটি বাঁধা ছিল দারচিনির। তবে এখন মধ্য্বিত্তের ঘরে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছে দারচিনি।
ভাবছেন তো, হঠাৎ দারচিনি নিয়ে কথা বলছি কেন? এত রোগ-ভোগ. অ্যালোপাথি, হোমিওপ্যাথির মধ্যেও ঘরের দারচিনিও কিন্তু অনেক অসুখের অব্যর্থ দাওয়াই। একটু ইতিহাসের পাতা ওল্টান, দেখতে পাবেন, আজ নয় প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকেই দারচিনি আমাদের নানাভাবে উপকার করে আসছে। যিশুর জন্মের অন্তত দুহাজার বছর আগে থেকেই দারচিনি অপরিহার্য ছিল ইউরোপে। আরবি বণিকরা ইউরোপে নিয়ে আসত দারচিনি। নানা রকম গল্প ফেঁদে মহার্ঘ করে রেখেছিল দারচিনিকে। পাহাড়ের গভীর গুহায় সাপের সঙ্গে যুদ্ধ করে নাকি দারচিনি আনতে হত ওঁদের। আর সাহেবরাও বিশ্বাস করে বেশি দাম দিয়ে কিনত দারচিনি। বাইবেলের পাতা ওল্টালে সেখানেও দারচিনিকে খুঁজে পাবেন।
সুদূর মিশর থেকে কবে প্রথম ভারতে এসেছিল, সেই ইতিহাসও এখন অতীত। নবাব, রাজা-রাজড়া ছাড়া ছুঁতে পারত না কেউ। রাজ পরিবারের উপহারের লিস্টে থাকত দারচিনির নাম। আস্তে আস্তে ঢুকে পড়েছে মধ্যবিত্তের হেঁসেল থেকে মেডিসিন লিস্টে।
আরও শুনুন :মাছ না ঢাকা যাক, শাক কিন্তু সারিয়ে দেয় হাজারও অসুখ
এখন নিশ্চয়ই জানতে চাইবেন, খাবারের স্বাদ-গন্ধ বাড়ানো ছাড়া দারচিনি আর কী উপকারে আসে আমাদের?
লম্বা লিস্ট। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে চা খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। আপনার ওই চায়ের কাপে ম্যাজিক হবে যখন ওতে এক চামচ দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে দেবেন। এই চা রোজ খেলে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট ঝরে যাবে। একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে, সবরকম মশলার মধ্যে দারচিনি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসাবে কাজ করে সব থেকে বেশি। রোজ খেলে আপনার স্বাস্থ্য ও ত্বক দুইই উজ্জ্বল হবে।
আরও শুনুন :শুধু রূপচর্চায় অপরিহার্য নয়, চন্দন গাছ আপনাকে বানাতে পারে কোটিপতি
নামে গরমমশলা হলেও দারচিনি কিন্তু অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায়। হজম সংক্রান্ত পেটের ব্যথাও সারাতে পারে দারচিনি।
সুগারের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের পাশেও রয়েছে দারচিনি। টাইপ টু ডায়াবেটিস যাঁদের রয়েছে, প্রত্যেকদিন আধ চা চামচ করে দারচিনি খান।
বাকিটা শুনে নিন প্লে বাটন ক্লিক করে।