ভাত, লুচি, পোলাও কিংবা মোগলাই বিরিয়ানি ইত্যাদি যাই হোক না কেন, সঙ্গে চাই মাংস। কবজি ডুবিয়ে মাংস খাওয়ার রেওয়াজ কি শেষমেশ পৌঁছে দিচ্ছে ক্যানসারের দোরগোড়ায়? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘শীতের হাওয়ায় লাগল নাচন!’ শীতের হাওয়া বয়ে এল মানেই পিছু পিছু এল হাজারটা অনুষ্ঠান। আজ বিয়েবাড়ি তো কাল দল বেঁধে পিকনিক। দেদার হই-হুল্লোড়, সঙ্গে জম্পেশ ভূরিভোজের আয়োজন। আর সেই আয়োজনে আমিষ পদ থাকবে না, বলা ভালো থাকবে না মাংস, তা কি হয়! তাই পিকনিক মানেই তাতে থাকবে পেট ভরে মাংস খাওয়ার বন্দোবস্ত। কিন্তু জানেন কি? এই মাত্রাছাড়া মাংস খাওয়ার অভ্যাস থেকেই শরীরে প্রবেশ করতে পারে মারাত্মক মারণ ব্যাধি!
শীতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে রয়ে গেছে নানান নস্টালজিয়া। ছোটবেলার ঘুড়ি ওড়ানো থেকে দুপুরে আচার চুরি করে খাওয়া সবটুকুতে জড়িয়ে আছে শীতের স্মৃতি। শুধু কি তাই? শীত এল মানেই রান্নাঘর ম-ম করবে নতুন গুড়ের গন্ধে। আর সেই সঙ্গেই রান্নাঘর ভরে উঠবে হরেক রকম পিঠেপুলির উৎসবে। তবে এতরকম আহারের বাহারের মধ্যেও মাংসের দেখা মিলবেই। শীতের ছুটি মানেই পিকনিক, অনুষ্ঠান, বেড়াতে যাওয়া, বিয়েবাড়ির ঢল। আর উপলক্ষ্য যাই হোক না কেন, বাঙালির মেনকোর্সে পাত আলো করে থাকে মাংসভাত। লাল করে ঝোল হোক কিংবা জমিয়ে কষা। না নেই কোনওটাতেই।
আরও শুনুন: শাড়ি পরতে ভালোবাসেন! সাজগোজের অজান্তে ‘পেটিকোট ক্যানসার’ ডেকে আনছেন না তো?
অথচ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদির জন্যে প্রায়ই ডাক্তারবাবুরা বেশি মাংস খেতে নিষেধ করেন। বিশেষ করে এসব রোগবালাইয়ের ক্ষেত্রে ‘রেড মিট’ নৈব নৈব চ। কিন্তু শুধু এতটুকুই নয়। সম্প্রতি মাংসের সঙ্গে উঠে আসছে মারণরোগ ক্যানসারের নাম। কারণ ক্যানসারের এমন এক ধরন আছে, যার কারণ হিসেবে নাকি বিশেষজ্ঞরা আঙুল তুলেছেন মাংসের দিকে। জানেন, কী সেই ক্যানসারের নাম? তা হল অন্ত্রের ক্যানসার অর্থাৎ কোলন ক্যানসার। পোশাকি নাম ‘রেকটাল ক্যানসার’। অতিরিক্ত মাংস খেলে শরীরে থাবা বসাতে পারে এই রোগটি। শুরুর দিকে মলের পরিবর্তন। কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা ডায়ারিয়ার মতো উপসর্গ হতে পারে, আর তারপর মলের সঙ্গে রক্তপাত, হজমের গণ্ডগোল, রক্তশূন্যতা, বমি ভাব, তলপেটে ব্যথা। হতে পারে তীব্র জ্বরও। আর এভাবেই আক্রান্ত ব্যক্তিটি ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে পারেন মৃত্যুর দিকেই।
আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থায় ক্যানসারের অ্যানসার মেলে বইকি অনেকসময়। তবুও, সাধারণ মধ্যবিত্তের কাছে ক্যানসারও রাজরোগ। বিপুল অর্থ ব্যয়, দুশ্চিন্তা, ছুটোছুটি- সবকিছুই ডেকে আনে এই রোগ। তাই বিড়ম্বনার হাত থেকে রক্ষা পেতে সাবধানতা অবলম্বন করাই ভালো, তাই না?