দুধ চায়ের বদলে লাল চা অনেকেই প্রেফার করেন। কিন্তু সাদা চায়ের নাম শুনেছেন? ব্যাপারটা এমন নয় যে, চায়ে বিশেষ কিছু দেওয়া হল না, একেবারে সাদামাটা ভাবে তৈরি বলেই এর নাম হয়েছে সাদা চা। আসলে এক বিশেষ চা-পাতা থেকে তৈরি বলেই এর এমন নাম। গুণও তেমনই। আসুন শুনে নিই, সাদা চা পানে কী কী উপকার মেলে।
সকাল-সন্ধে চা না পেলে আমাদের দিনটা যেন ঠিক জমে না। তবে স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই আজকাল দুধ চা এড়িয়ে চলেন। বদলে বিভিন্ন রকমের ফ্লেভার টি বা গ্রিন টি থাকে পছন্দের তালিকায়। এমনকি আজকাল অপরাজিতা ফুলের নির্যাস দিয়ে ব্লু টি-ও তৈরি করা হচ্ছে। তারও জনপ্রিয়তা কম নয়। তবে নানা রকমের চায়ের মধ্যে একেবারেই ব্যতিক্রমী হল সাদা চা। এক কথায় অভিনব এই পানীয়। চা গাছের এক বিশেষ প্রজাতির বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস’। সেই গাছের পাতা থেকেই তৈরি করা হয় সাদা চা। সাধারণত একেবারে কচি অবস্থাতেই এই গাছের পাতা তুলে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বানানো হয় সাদা চা। বিশেষজ্ঞদের মতে, যতরকমের চা আছে, তাদের মধ্যে সব থেকে স্বাস্থ্যকর হল এই সাদা চা।
আরও শুনুন: এক পায়ে দাঁড়াতে অসুবিধা! বড়সড় বিপদসঙ্কেত নয় তো? সতর্ক হোন আগেভাগেই
এই চায়ের গুণের যখন এত প্রশংসা, তখন এর বিশেষত্বও ভালো করে জেনে নেওয়া যাক। প্রথমত, এই চা তৈরি হয়ে যায় অল্প সময়েই। চা-পাতা জলে ফোটানো, যেমনটা আমরা অনেকসময় করে থাকি, তার প্রয়োজনই পড়ে না। ফলে চা পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অন্যান্য উপকারী পদার্থ নষ্ট হয় না। প্রথমে ঈষদুষ্ণ গরম জলে সাদা চায়ের পাতা দিতে হয়। পাত্রে ঢাকনা চাপা দিয়ে রেখে দিতে হয় ৭ থেকে ৮ মিনিট। তারপর চা পাতা ছেঁকে তরল পানীয় ঢেলে নিতে হবে কাপে। ব্যস, তাহলেই তৈরি সামান্য এই সাদা চা। এই চায়ের অপূর্ব গন্ধ এমনিই চা-প্রেমীদের ডাক দেয়। আর পুষ্টিগুণের তো কথাই নেই।
আরও শুনুন: রাতে এই খাবারগুলি খাচ্ছেন? শরীরের ক্ষতি হতে পারে অজান্তেই
প্রথমত এই চা খেলে ঝরবে ওজন। এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদান শরীরে মেটাবলিজমের হার বাড়িয়ে দেয়। অর্থাৎ খাবার হজম হবে দ্রুত। যার ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার সুযোগ থাকবে না। এছাড়াও হোয়াইট টি-তে ‘পলিফেনল’ নামের একধরনের পদার্থ থাকে, যা অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মতো কাজ করে। এতে শিরা-উপশিরা নমনীয় থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সুবিধা হয়। পাশাপাশি এই চা পান করলে হৃদরোগেরও উপশম হয়। ক্যানসারের কোষ ধ্বংস করার ক্ষেত্রে অনুঘটকের মতো কাজ করে সাদা চা। ফলে ক্যানসার রোগীদের জন্য এই চা যথেষ্ট উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে ‘ইনসুলিন রেসিস্টেন্স এলিমেন্ট’ও। সুতরাং দেহে শর্করার পরিমাণ কমাতেও সাহায্য করতে পারে এই সাদা চা। এমনকি এই চা নাকি বয়স ধরে রাখতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এর মধ্যে থাকা বেশ কিছু উপাদান আমাদের ত্বকের যত্ন নেয়। ফলে এই চা খেলে আপনাকে দেখাবে একেবারে ইয়ং। এখানেই শেষ নয়। এই চা হল ফ্লোরাইডের অন্যতম উৎস। মুখের ভিতর থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে যা ভীষণ কার্যকরী। সুতরাং এই চা খেলে ভাল থাকবে আপনার দাঁত-ও।
ফলত চা-প্রেমীদের জন্য এই চা যেমন স্বাদু, তেমনই যে উপকারী, তা বলাই যায়।