শীতকাল মানেই কমলালেবু। দুপুরবেলা মিঠে রোদে বসে একটা লেবু না খেলেই নয়। কিন্তু জানেন কি, এর থেকেই হতে পারে বিপদ। একটু শীত পড়লেই যে ঠান্ডা লেগে সর্দি কাশি হচ্ছে, সেসবের কারণও হতে পারে ওই কমলালেবুই! কেন জানেন? আসুন শুনে নিই।
শীতকাল মানেই অল্পেতে ঠাণ্ডা লাগার ঝক্কি। নিয়ম মেনে ওষুধ খেয়েও সর্দি কাশি সারছে না। সমস্যাটা হয়তো অন্য কোথাও। একটু ভেবে দেখুন তো শীতের দুপুরে আয়েস করে বসে এই ফলগুলো খাচ্ছেন কি না? সর্দি কাশির যাবতীয় সমস্যা কিন্তু এর মধ্যে লুকিয়ে।
আরও শুনুন: ঠান্ডা পড়তেই এড়িয়ে যাচ্ছেন দই, ক্ষতি করছেন না তো?
ঠিক কোন কোন ফলের কথা বলছি?
সবার আগে কমলালেবু। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। শীতকালটা ঠিকমতো কল্পনা করা যায় না যে ফলটিকে ছাড়া, সেই কমলালেবু থেকেই হতে পারে হাজারও সমস্যা। বিশেষ করে শীতকালে যে সমস্যা থেকে সবাই রেহাই পেতে চান, সেই ঠান্ডা লাগার ধাত আরও বাড়িয়ে দিতে পারে এই কমলালেবু। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমনটা হওয়ার একমাত্র কারণ অ্যাসিড। যে কোনও লেবুতেই অ্যাসিড থাকে। যা গলার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিশেষ করে শীতকালে যখন গলা ধরে আছে, বা গলায় কোনও সমস্যা হচ্ছে, সেই অবস্থায় লেবু খেলেই সব শেষ। গলার সমস্যা বাড়বে বইই কমবে না। তাই স্রেফ কমলালেবু নয়, যে কোনও ধরনের লেবুই শীতকালে এড়িয়ে চলা উচিত। প্রয়োজনে গরম জলে কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তবে সরাসরি লেবু না খাওয়াই ভালো। এরপর বলতে হয় সবেদার কথা। শীতকালে এই ফলটিও বেশ উপাদেয়। কিন্তু খেতে যতই ভালো হোক, যখন তখন সবেদা খেলেও ঠান্ডা লাগতে পারে। কারণ এর মধ্যে শর্করার এক বিশেষ উপাদান এতটাই বেশি মাত্রায় থাকে, যা গলার ক্ষতি করে। এরপরই বলতে হয়, আঙুরের কথা। এর মধ্যে থাকেন হিস্টামিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, যা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে সর্দি কাশি হতে বাধ্য। একই সমস্যা হতে পারে পেয়ারা খেলেও। শীতকালে তাই পেয়ারা খাওয়া থেকেও বিরত থাকা উচিত। এখানেই শেষ নয়। ঠান্ডা লাগার হাত থেকে বাঁচতে, সকালের জলখাবারে বাদ দিতে হবা কলা-ও। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠান্ডার সময় কলা খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। এতে সর্দির সমস্যা মিটতে চাইবে না কিছুতেই। বরং তা আরও বাড়তে পারে অনায়াসে। একইভাবে শীতকালে তরমুজ খেতেও মানা করেন বিশেষজ্ঞরা। সুবিধা একটাই, শীতকালে এই ফল সচরাচর চোখে পড়ে না।
আরও শুনুন: শীত পড়তেই শুরু গরম জলে স্নান, শরীরের কী ক্ষতি হচ্ছে জানেন?
তাহলে খাবেন টা কী?
মূলত টক জাতীয় ফল বাদ দিয়ে সবই খাওয়া যেতে পারে শীতকালে। রোজের ডায়েটে অবশ্যই পেঁপে রাখা যেতে পারে। এছাড়া আপেল, বেদানা, আনারস, বেরি সবই চলতে পারে। তবে মাত্রাতিরিক্ত কিছু ভালো নয়। চিকিৎসকরা সব সময় ব্যালেন্সড ডায়েটের কথা বলেন। সেক্ষেত্রে সমস্ত ফল একদিনে খেয়ে নেওয়া একেবারেই উচিত না। পরিমাণ মেপে নিয়মিত ফল খেলেই তা শরীরের জন্য উপকারী হবে। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, লেবু, কলা কিংবা আঙুরের মতো ফল শীতের কটা দিন যতটা এড়ানো যায়। বিশেষ করে, শীত পড়লেই যাঁদের চট করে ঠান্ডা লেগে যায় তাঁদের জন্য।